সরকার পথ হারিয়ে ফেলেছে : গোলাম মাওলা রনি

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক :  বর্তমান অন্তবর্তী সরকার দেশ চালাতে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে, পাশাপাশি পথ হারিয়ে ভীত সন্তুস্ত হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি। তিনি বলেন, ‘পথ হারিয়ে সরকার বুঝতে পারছে না কোন পথে আছে। প্রতিদিনই সরকারের যে সিদ্ধান্ত সেখানে অধৈর্যতা প্রকাশ পাচ্ছে।’ বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) নিজের ইউটিউব চ্যানেলের এক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।

 

গোলাম মাওলা রনি বলেন, ‘বাংলাদেশের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির প্রধান ডক্টর দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। চৌকস কথাবার্তার জন্যে তিনি ইতিমধ্যেই দেশে এবং বিদেশে যথেষ্ট আলোচিত। সেই দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য যার সঙ্গে ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের বন্ধুত্ব দীর্ঘদিনের। ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের সাথী ছিলেন বা এখনো আছেন।

 

ড. মহাম্মদ ইউনূস অর্থনৈতিক সেক্টরে দুর্নীতি প্রতিরোধে শ্বেতপত্র প্রকাশ করার জন্য যে কমিটি করেছিলেন সেটির প্রধান ছিলেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি গবেষণা করে বের করেছেন আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে কত লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। সেই দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ইদানিং ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে কথা বলছেন না। সরকারের কর্মকাণ্ডের মধ্যে তিনি দেশের অশনী সংকেত দেখতে পাচ্ছেন।

 

তার দৃষ্টিতে এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় অর্থনীতি, ব্যাংকিং সেক্টর, রাজনীতি একই সঙ্গে দুর্নীতি এই বিষয়গুলো গত এক বছরে এমন পর্যায়ে বৃদ্ধি পেয়েছে যেটাকে তিনি মনে করছেন যে বাংলাদেশের ওপর একটি ঝড় বয়ে যাচ্ছে। তো ডক্টর দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য যেটিকে ঝড় বলছেন সেটাকে আমি একটু বাড়িয়ে বললাম যে শুধু ঝড় নয় এটা ঘূর্ণিঝড়।’

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘ঝড় আর ঘূর্ণি ঝড়ের মধ্যে যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে সেটা আপনারা কমবেশি সবাই জানেন। ঝড় সহজ সরল গতিতে বয়ে চলে এবং একটা নির্দিষ্ট এলাকার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এলাকার ঘরবাড়ি তছনছ করে উড়িয়ে অন্যত্র নিয়ে যায়।

 

এটা হল ঝড়। কালবৈশাখী ঝড়। আর ঘূর্ণিড়ঝটা অনেকটা টর্নেডো প্রকৃতির। যেটা ঘুরতে থাকে মানে ঝড় আসে। এসে একটা নির্দিষ্ট জায়গায় আবার সেটা ঘুরতে থাকে। এটা এতটা শক্তিশালী যে ধরুন— অনেক সময় টিউবয়েলের মাথা উড়িয়ে নিয়ে যায়। দক্ষিণাঞ্চলের গ্রামের টিউবয়েল গড়ে ১০০০ ফিট নিচে গ্রথিত (গভীর) থাকে। ঢাকা শহরে ৩০০ থেকে ৩৫০ ফুট গভীরে পড়ে। তো এই ঘূর্ণিঝড় বা টর্নেডো এরা এত শক্তিশালী যে ১০০০ ফিট গভীরে থাকা টিউবয়েলের মাথা উড়িয়ে নিয়ে যায়।’

 

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন এই মুহূর্তে ডক্টর দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য যে ঝড়ের কথা বলছেন আমি সেটাকে কেন ঘূর্ণিঝড় বলছি। প্রথমে আপনি ধরুন ব্যাংকিং সেক্টরের কথা। আমরা সবাই জানি যে শেখ হাসিনার জামানাতে একটা ব্যাংক মাফিয়া তন্ত্র গড়ে উঠেছিল। এখানে এস আলমের পরিবারে যে পাঁচটি ব্যাংক ছিল ইসলামী ব্যাংক ধারার পাঁচটি ব্যাংক এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক এই ব্যাংকগুলো থেকে তিনি ২ লাখ কোটি টাকা নামে বেনামে লোন নিয়েছেন। তো এই লোন দিয়ে তিনি একটা নির্দিষ্ট অংশ বিনিয়োগ করেছেন। আর বিরাট অংশ পাচার করেছেন।

 

এরকমভাবে ধরে নেওয়া হয়েছিল। বর্তমান ডক্টর মুহম্মদ ইউনূস সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর নিয়োগ দিলেন। এস আলমের সময়টাতে যে সমস্যাগুলো ছিল এই পাঁচটা ব্যাংকের সে সমস্যা আরো বহু বহু গুণে বেড়ে গেল। এখানে নতুন টাকা ছাপিয়ে তাদের ঋণ দেওয়া হলো এবং সেটা কিভাবে সমন্বয় হলো কিভাবে মুদ্রাস্ফীতি না ঘটিয়ে সে টাকা আবার বাংলাদেশ ব্যাংক ফেরত নিল বা নিতে পারলো কিনা আমরা কিছুই জানতে পারলাম না। মধ্য থেকে আমরা জানতে পারলাম যে এই ব্যাংকগুলোর যে ম্যানেজমেন্ট কয়েক দফা পরিবর্তন ঘটলো এবং সে সকল ব্যাংকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মদৎপুষ্ট যারা লোকজন রয়েছেন তারা সেখানে বসলেন।’

 

তিনি বলেন, ‘এস আলমের ব্যাংকগুলো ছাড়াও আরো কয়েকটি দুর্বল ব্যাংক রয়েছে। যেমন আরব বাংলাদেশ ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, তারপরে শেষে ন্যাশনাল ব্যাংক। এই ব্যাংকগুলোর দীর্ঘদিন ধরে সমস্যা চলছে। তো এই ব্যাংকগুলোরও কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন সুরহা হয়নি। ম্যানেজমেন্ট পরিবর্তন হয়েছে। নতুন ম্যানেজমেন্ট তারা নতুন ফর্মুলায় ব্যবসা করার চেষ্টা করছে। কিন্তু প্রায় সবারই বক্তব্য হলো যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে যে কথাগুলো বলা হচ্ছে, যে সিদ্ধান্তগুলো দেওয়া হচ্ছে এতে করে এই ব্যাংকিং ব্যবস্থায় তাদের উপকার না হয়ে ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে।’

 

গোলাম মাওলা রনি বলেন, ‘প্যাচের মধ্যে পড়ে সরকার পুরো অর্থনৈতিক সেক্টর ঘূর্ণিঝড়ে ফেলেছে। এর ফলে মনে হচ্ছে সরকার অধৈর্য হয়ে পড়েছে। সরকার পথ হারিয়েছে। এটা ডক্টর দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যই বলছেন এবং আমার কাছে মনে হচ্ছে যে সরকার শুধু পথ হারায়নি। সরকার দেখতে পাচ্ছে না যে তারা কোন পথে আছে। সরকার চট্টগ্রামে যাবে নাকি ঢাকায়? চট্টগ্রাম হাইওয়েতে আছে? নাকি পথ ভুলে সে অন্ধকারের মধ্যে মাঝপথে সে আবার ঢাকার দিকে আসছে।

 

সে কি এখনো সেই যে রেল বা সড়ক এই রোডের ওপরে আছে নাকি মানে ধানি ক্ষেত বিল ঝিল এগুলোর মধ্যে নেমে গেছে? সে কি হাঁটু পানির মধ্যে আছে না কাদার মধ্যে আছে? সে কি অন্ধকার রজনীর মধ্যে আছে? চাঁদনী রাতের মধ্যে আছে না দিনের আলোতে আছে? এটা বোঝা যাচ্ছে না। প্রায় প্রতিদিনই সরকারের যে সিদ্ধান্ত সেখানে অধৈর্যতা প্রকাশ পাচ্ছে। দিকভ্রান্তিতা প্রকাশ পাচ্ছে এবং সরকার শুধু পথ হারায়নি। সঙ্গে সঙ্গে মনে হচ্ছে যে সরকার ভীত সন্তুস্ত হয়ে পড়েছে যে আমি যে জায়গাতে আটকে আছি এখান থেকে তো আমি উদ্ধার পাবো না।’

 

তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘বর্তমান সরকার সামনেও যেতে পারছে না, পিছনে যেতে পারছে না। তারা বলছে ডানে যেতে পারছি না, বামেও যেতে পারছি না। অন্ধকার রজনী অমাবস্যা। কোথা থেকে কখন ভূত চলে আসে প্রেত চলে আসে। দানব চলে আসে। রাক্ষস চলে আসে। সাপ চলে আসে। বেজি চলে আসে। এসে কামড় দেয় এই যে আতঙ্ক পথহারা। এরকম ভয় যদি সরকারকে ধরে থাকে, তাহলে সরকার এখন যে ভুলগুলো করছেন আগামীতে সে ভুল যদি আরো বাড়তে থাকে! তাহলে আমরা একটা কি উত্তাল সময়ের মধ্যে পড়বো?’

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» প্রথম ব্যাংক হিসেবে সব এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটকে বিমা সুরক্ষার আওতায় আনল ব্র্যাক ব্যাংক

» বড়াইগ্রামে মহাসড়কে গাড়ি পার্কিং নিষেধ করায় পুলিশের উপর হামলা

» ৫০০ কোটি টাকার স্টার্ট-আপ পুনঃঅর্থায়ন তহবিল বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক ও প্রাইম ব্যাংকের চুক্তি স্বাক্ষর

» ডিবিএইচ-এর শরীয়াহ্ সুপারভাইজরী কমিটির ৮ম সভা অনুষ্ঠিত

» কবিরাজ থেকে কোটিপতি সেই নুরাল পাগলা

» জাকসু নির্বাচন বর্জন করল ছাত্রদল

» সরকার পথ হারিয়ে ফেলেছে : গোলাম মাওলা রনি

» জামায়াতের কোম্পানির ছাপানো ব্যালটে ভোটগ্রহণ ও কারচুপির অভিযোগ ছাত্রদল প্যানেলের

» প্রয়োজন হলে জাবি ক্যাম্পাসে সেনাবাহিনী যাবে: স্বরাষ্ট্রসচিব

» ভোট বানচালের ক্ষমতা কারো নেই: প্রেস সচিব

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

সরকার পথ হারিয়ে ফেলেছে : গোলাম মাওলা রনি

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক :  বর্তমান অন্তবর্তী সরকার দেশ চালাতে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে, পাশাপাশি পথ হারিয়ে ভীত সন্তুস্ত হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি। তিনি বলেন, ‘পথ হারিয়ে সরকার বুঝতে পারছে না কোন পথে আছে। প্রতিদিনই সরকারের যে সিদ্ধান্ত সেখানে অধৈর্যতা প্রকাশ পাচ্ছে।’ বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) নিজের ইউটিউব চ্যানেলের এক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।

 

গোলাম মাওলা রনি বলেন, ‘বাংলাদেশের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির প্রধান ডক্টর দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। চৌকস কথাবার্তার জন্যে তিনি ইতিমধ্যেই দেশে এবং বিদেশে যথেষ্ট আলোচিত। সেই দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য যার সঙ্গে ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের বন্ধুত্ব দীর্ঘদিনের। ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের সাথী ছিলেন বা এখনো আছেন।

 

ড. মহাম্মদ ইউনূস অর্থনৈতিক সেক্টরে দুর্নীতি প্রতিরোধে শ্বেতপত্র প্রকাশ করার জন্য যে কমিটি করেছিলেন সেটির প্রধান ছিলেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি গবেষণা করে বের করেছেন আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে কত লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। সেই দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ইদানিং ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে কথা বলছেন না। সরকারের কর্মকাণ্ডের মধ্যে তিনি দেশের অশনী সংকেত দেখতে পাচ্ছেন।

 

তার দৃষ্টিতে এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় অর্থনীতি, ব্যাংকিং সেক্টর, রাজনীতি একই সঙ্গে দুর্নীতি এই বিষয়গুলো গত এক বছরে এমন পর্যায়ে বৃদ্ধি পেয়েছে যেটাকে তিনি মনে করছেন যে বাংলাদেশের ওপর একটি ঝড় বয়ে যাচ্ছে। তো ডক্টর দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য যেটিকে ঝড় বলছেন সেটাকে আমি একটু বাড়িয়ে বললাম যে শুধু ঝড় নয় এটা ঘূর্ণিঝড়।’

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘ঝড় আর ঘূর্ণি ঝড়ের মধ্যে যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে সেটা আপনারা কমবেশি সবাই জানেন। ঝড় সহজ সরল গতিতে বয়ে চলে এবং একটা নির্দিষ্ট এলাকার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এলাকার ঘরবাড়ি তছনছ করে উড়িয়ে অন্যত্র নিয়ে যায়।

 

এটা হল ঝড়। কালবৈশাখী ঝড়। আর ঘূর্ণিড়ঝটা অনেকটা টর্নেডো প্রকৃতির। যেটা ঘুরতে থাকে মানে ঝড় আসে। এসে একটা নির্দিষ্ট জায়গায় আবার সেটা ঘুরতে থাকে। এটা এতটা শক্তিশালী যে ধরুন— অনেক সময় টিউবয়েলের মাথা উড়িয়ে নিয়ে যায়। দক্ষিণাঞ্চলের গ্রামের টিউবয়েল গড়ে ১০০০ ফিট নিচে গ্রথিত (গভীর) থাকে। ঢাকা শহরে ৩০০ থেকে ৩৫০ ফুট গভীরে পড়ে। তো এই ঘূর্ণিঝড় বা টর্নেডো এরা এত শক্তিশালী যে ১০০০ ফিট গভীরে থাকা টিউবয়েলের মাথা উড়িয়ে নিয়ে যায়।’

 

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন এই মুহূর্তে ডক্টর দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য যে ঝড়ের কথা বলছেন আমি সেটাকে কেন ঘূর্ণিঝড় বলছি। প্রথমে আপনি ধরুন ব্যাংকিং সেক্টরের কথা। আমরা সবাই জানি যে শেখ হাসিনার জামানাতে একটা ব্যাংক মাফিয়া তন্ত্র গড়ে উঠেছিল। এখানে এস আলমের পরিবারে যে পাঁচটি ব্যাংক ছিল ইসলামী ব্যাংক ধারার পাঁচটি ব্যাংক এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক এই ব্যাংকগুলো থেকে তিনি ২ লাখ কোটি টাকা নামে বেনামে লোন নিয়েছেন। তো এই লোন দিয়ে তিনি একটা নির্দিষ্ট অংশ বিনিয়োগ করেছেন। আর বিরাট অংশ পাচার করেছেন।

 

এরকমভাবে ধরে নেওয়া হয়েছিল। বর্তমান ডক্টর মুহম্মদ ইউনূস সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর নিয়োগ দিলেন। এস আলমের সময়টাতে যে সমস্যাগুলো ছিল এই পাঁচটা ব্যাংকের সে সমস্যা আরো বহু বহু গুণে বেড়ে গেল। এখানে নতুন টাকা ছাপিয়ে তাদের ঋণ দেওয়া হলো এবং সেটা কিভাবে সমন্বয় হলো কিভাবে মুদ্রাস্ফীতি না ঘটিয়ে সে টাকা আবার বাংলাদেশ ব্যাংক ফেরত নিল বা নিতে পারলো কিনা আমরা কিছুই জানতে পারলাম না। মধ্য থেকে আমরা জানতে পারলাম যে এই ব্যাংকগুলোর যে ম্যানেজমেন্ট কয়েক দফা পরিবর্তন ঘটলো এবং সে সকল ব্যাংকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মদৎপুষ্ট যারা লোকজন রয়েছেন তারা সেখানে বসলেন।’

 

তিনি বলেন, ‘এস আলমের ব্যাংকগুলো ছাড়াও আরো কয়েকটি দুর্বল ব্যাংক রয়েছে। যেমন আরব বাংলাদেশ ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, তারপরে শেষে ন্যাশনাল ব্যাংক। এই ব্যাংকগুলোর দীর্ঘদিন ধরে সমস্যা চলছে। তো এই ব্যাংকগুলোরও কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন সুরহা হয়নি। ম্যানেজমেন্ট পরিবর্তন হয়েছে। নতুন ম্যানেজমেন্ট তারা নতুন ফর্মুলায় ব্যবসা করার চেষ্টা করছে। কিন্তু প্রায় সবারই বক্তব্য হলো যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে যে কথাগুলো বলা হচ্ছে, যে সিদ্ধান্তগুলো দেওয়া হচ্ছে এতে করে এই ব্যাংকিং ব্যবস্থায় তাদের উপকার না হয়ে ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে।’

 

গোলাম মাওলা রনি বলেন, ‘প্যাচের মধ্যে পড়ে সরকার পুরো অর্থনৈতিক সেক্টর ঘূর্ণিঝড়ে ফেলেছে। এর ফলে মনে হচ্ছে সরকার অধৈর্য হয়ে পড়েছে। সরকার পথ হারিয়েছে। এটা ডক্টর দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যই বলছেন এবং আমার কাছে মনে হচ্ছে যে সরকার শুধু পথ হারায়নি। সরকার দেখতে পাচ্ছে না যে তারা কোন পথে আছে। সরকার চট্টগ্রামে যাবে নাকি ঢাকায়? চট্টগ্রাম হাইওয়েতে আছে? নাকি পথ ভুলে সে অন্ধকারের মধ্যে মাঝপথে সে আবার ঢাকার দিকে আসছে।

 

সে কি এখনো সেই যে রেল বা সড়ক এই রোডের ওপরে আছে নাকি মানে ধানি ক্ষেত বিল ঝিল এগুলোর মধ্যে নেমে গেছে? সে কি হাঁটু পানির মধ্যে আছে না কাদার মধ্যে আছে? সে কি অন্ধকার রজনীর মধ্যে আছে? চাঁদনী রাতের মধ্যে আছে না দিনের আলোতে আছে? এটা বোঝা যাচ্ছে না। প্রায় প্রতিদিনই সরকারের যে সিদ্ধান্ত সেখানে অধৈর্যতা প্রকাশ পাচ্ছে। দিকভ্রান্তিতা প্রকাশ পাচ্ছে এবং সরকার শুধু পথ হারায়নি। সঙ্গে সঙ্গে মনে হচ্ছে যে সরকার ভীত সন্তুস্ত হয়ে পড়েছে যে আমি যে জায়গাতে আটকে আছি এখান থেকে তো আমি উদ্ধার পাবো না।’

 

তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘বর্তমান সরকার সামনেও যেতে পারছে না, পিছনে যেতে পারছে না। তারা বলছে ডানে যেতে পারছি না, বামেও যেতে পারছি না। অন্ধকার রজনী অমাবস্যা। কোথা থেকে কখন ভূত চলে আসে প্রেত চলে আসে। দানব চলে আসে। রাক্ষস চলে আসে। সাপ চলে আসে। বেজি চলে আসে। এসে কামড় দেয় এই যে আতঙ্ক পথহারা। এরকম ভয় যদি সরকারকে ধরে থাকে, তাহলে সরকার এখন যে ভুলগুলো করছেন আগামীতে সে ভুল যদি আরো বাড়তে থাকে! তাহলে আমরা একটা কি উত্তাল সময়ের মধ্যে পড়বো?’

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com