ছবি সংগৃহীত
অনলাইন ডেস্ক : চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিজয় দিবস সামরিক কুচকাওয়াজ। এ আয়োজনে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এই কুচকাওয়াজ আয়োজন করা হচ্ছে চীন-জাপান যুদ্ধের ৮০তম বার্ষিকী ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি উপলক্ষে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ ২৬ দেশের রাষ্ট্রপ্রধান।
চীন এবার প্রদর্শন করবে তাদের সর্বাধুনিক সামরিক শক্তি—শত শত যুদ্ধবিমান, ট্যাংক এবং উন্নতমানের অ্যান্টি-ড্রোন ব্যবস্থা। তিয়ানআনমেন স্কয়ারজুড়ে সাজানো হবে ৭০ মিনিটের জমকালো কুচকাওয়াজ, যেখানে কয়েক হাজার সেনা সদস্য পদযাত্রা করবেন। নেতৃত্বে থাকবেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
২০১৫ সালের ভিক্টরি ডে কুচকাওয়াজে উত্তর কোরিয়া কিমের পরিবর্তে উচ্চপদস্থ প্রতিনিধি পাঠিয়েছিল। তবে এবারের আয়োজন ভিন্ন মাত্রা পাচ্ছে কিমের সরাসরি উপস্থিতির কারণে। বিশেষ করে পুতিন ও শির পাশে দাঁড়ানো কিমের ছবি বিশ্ব রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি জানিয়েছেন, তিনি কিমের সঙ্গে আবার বৈঠক করতে চান। ট্রাম্প একই সঙ্গে পুতিনের সঙ্গেও আলোচনা করে ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধান খুঁজতে চান। বিশ্লেষকদের মতে, এই প্রেক্ষাপটে বেইজিংয়ের কুচকাওয়াজ শি জিনপিংয়ের জন্য বড় ধরনের কূটনৈতিক সাফল্য হতে পারে।
তবে পশ্চিমা বিশ্বের অধিকাংশ নেতাই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এই কুচকাওয়াজে অংশ নিচ্ছেন না। জাপানও আগেই নেতাদের অনুরোধ করেছিল এই অনুষ্ঠানে না যেতে, কারণ এতে বিরোধী-জাপানি বার্তা রয়েছে বলে টোকিওর দাবি।
বিশেষ নজর রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিউংয়ের ওপর। তিনি আমন্ত্রিত হলেও এখনো সম্মতি জানাননি। লি যদি যান, তবে সেটি হবে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার নেতাদের বহু বছর পর প্রথম সাক্ষাতের সুযোগ। তবে উত্তর কোরিয়া লিকে বারবার সমালোচনা করেছে, সর্বশেষ তাকে মুখোমুখি সংঘর্ষপ্রবণ উন্মাদ বলে অভিহিত করেছে তাদের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
অন্যদিকে, লি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে চান এবং বলেছেন, শান্তিপূর্ণ কোরীয় উপদ্বীপ গড়ে তুলতে তিনি কিমের সঙ্গে কথা বলতে প্রস্তুত। কিন্তু কুচকাওয়াজে যোগ দেওয়া তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে—কারণ সেখানে রাশিয়া, বেলারুশ ও ইরানের নেতাদের উপস্থিতিতে তার অবস্থান কূটনৈতিক জটিলতা তৈরি করতে পারে।
সূত্র: বিবিসি