বৈধ না হলে নির্বাচনের কোনো মানে নেই: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক :  নির্বাচন যদি বৈধ বা আইনসঙ্গত না হয়, তাহলে তার কোনো মানে হয় না বলে মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, গ্রহণযোগ্য, পরিচ্ছন্ন এবং উপভোগ্য একটি নির্বাচন নিশ্চিত করাই আমার কাজ।

 

প্রধান উপদেষ্টা   বলেন, গণ-অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের বিচার ও সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে বাংলাদেশে আবার পুরোনো সংকটগুলো ফিরে আসবে।

গত বুধবার মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে সিঙ্গাপুরভিত্তিক চ্যানেল নিউজ এশিয়া (সিএনএ) টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।

 

সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশে একটি গ্রহণযোগ্য, পরিষ্কার ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনের কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর যেসব লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলেন, সেগুলো অর্জনের কাছাকাছি পৌঁছেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। নির্বাচনের পরে সরকারে থাকার কোনো পরিকল্পনা নেই বলেও জানিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস।

 

ড. ইউনূস বলেন, আমরা প্রায় আমাদের লক্ষ্যের কাছে পৌঁছে গেছি। বহু বিষয় সংস্কার প্রয়োজন, কারণ যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা ছিল তা দুর্নীতিগ্রস্ত, অপব্যবহার ও অপপ্রয়োগে ভরা।

 

প্রধান উপদেষ্টা  বলেন, নির্বাচন যদি বৈধ না হয়, তাহলে এর কোনো অর্থ নেই। আমার কাজ হলো এমন একটি গ্রহণযোগ্য, পরিষ্কার ও আনন্দদায়ক নির্বাচন নিশ্চিত করা।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান বলেন, আমাদের অঙ্গীকার ছিল গণ-অভ্যুত্থানের সময় জাতির যে আকাঙ্ক্ষা, তা নিশ্চিত করা। এগুলো তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন।

 

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আগস্টে হাসিনা প্রতিবেশী দেশ ভারতে পালিয়ে যান এবং তার অনুপস্থিতিতে বিচার শুরু হয়েছে। হাসিনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দমনে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগও আনা হয়েছে। বাংলাদেশ তাকে ফেরত দেওয়ার জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ করলেও দিল্লি সাড়া দেয়নি।

 

ইউনূস জানান, হাসিনা যেন বাংলাদেশ অস্থিতিশীল করার সুযোগ না পান, সে বিষয়ে ভারতের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। আমরা বলেছি, আপনারা তাকে রাখুন, আমাদের বিচার চলবে। কিন্তু তিনি যেন দেশকে অস্থিতিশীল করার কোনো সুযোগ না পান।

 

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে এবং আমরা ভারতের সঙ্গেও ভালো সম্পর্ক রাখতে চাই। আমরা কখনো বলিনি, আমরা ভালো সম্পর্ক রাখতে চাই না। নেপাল ও ভুটানকে অর্থনৈতিক অঞ্চলে আনতে পারি। ভারতের সেভেন সিস্টার্স- সাতটি রাজ্যও এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে থাকতে পারে। কারণ, আমরা বঙ্গোপসাগরের মাধ্যমে একই সুবিধা ভাগ করে নিতে পারি।

 

মুহম্মদ ইউনূস জানান, প্রথমে তিনি দায়িত্ব নিতে না চাইলেও ছাত্রনেতাদের অনুরোধ এবং জনগণের ত্যাগ তাকে রাজি করায়। নির্বাচন শেষে তিনি রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াবেন বলেও জানান।

 

শেষে তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ আর পথভ্রষ্ট হবে না। যুবসমাজ যেন ভোট দিয়ে তাদের স্বপ্ন ও প্রত্যাশা ব্যালট বাক্সে তুলে ধরে। আমি চাই, একটি ভালো সরকার আসুক এবং তা গণতান্ত্রিক নীতিমালা মেনে চলুক।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দলে পরিণত হতে পারেনি: এ্যানি

» ৯ কেজি ওজনের চিতল মাছ বিক্রি ১৯ হাজার ৮০০ টাকা

» খালেদা জিয়াকে কারাগারে চরম নির্যাতন করা হয়েছে : আব্বাস

» কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ৬ নেতাকর্মী গ্রেফতার

» সড়ক দুর্ঘটনায় মা ও শিশু নিহত

» খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্মদিন আজ

» বৈধ না হলে নির্বাচনের কোনো মানে নেই: প্রধান উপদেষ্টা

» জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কোনো সুযোগ নেই : ধর্ম উপদেষ্টা

» ফের বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম, অপরিবর্তিত মাছ-গরু-খাসি

» সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আল্লাহ ছাড়া বিএনপিকে কেউ রুখতে পারবে না : ফারুক

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

বৈধ না হলে নির্বাচনের কোনো মানে নেই: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক :  নির্বাচন যদি বৈধ বা আইনসঙ্গত না হয়, তাহলে তার কোনো মানে হয় না বলে মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, গ্রহণযোগ্য, পরিচ্ছন্ন এবং উপভোগ্য একটি নির্বাচন নিশ্চিত করাই আমার কাজ।

 

প্রধান উপদেষ্টা   বলেন, গণ-অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের বিচার ও সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে বাংলাদেশে আবার পুরোনো সংকটগুলো ফিরে আসবে।

গত বুধবার মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে সিঙ্গাপুরভিত্তিক চ্যানেল নিউজ এশিয়া (সিএনএ) টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।

 

সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশে একটি গ্রহণযোগ্য, পরিষ্কার ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনের কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর যেসব লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলেন, সেগুলো অর্জনের কাছাকাছি পৌঁছেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। নির্বাচনের পরে সরকারে থাকার কোনো পরিকল্পনা নেই বলেও জানিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস।

 

ড. ইউনূস বলেন, আমরা প্রায় আমাদের লক্ষ্যের কাছে পৌঁছে গেছি। বহু বিষয় সংস্কার প্রয়োজন, কারণ যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা ছিল তা দুর্নীতিগ্রস্ত, অপব্যবহার ও অপপ্রয়োগে ভরা।

 

প্রধান উপদেষ্টা  বলেন, নির্বাচন যদি বৈধ না হয়, তাহলে এর কোনো অর্থ নেই। আমার কাজ হলো এমন একটি গ্রহণযোগ্য, পরিষ্কার ও আনন্দদায়ক নির্বাচন নিশ্চিত করা।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান বলেন, আমাদের অঙ্গীকার ছিল গণ-অভ্যুত্থানের সময় জাতির যে আকাঙ্ক্ষা, তা নিশ্চিত করা। এগুলো তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন।

 

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আগস্টে হাসিনা প্রতিবেশী দেশ ভারতে পালিয়ে যান এবং তার অনুপস্থিতিতে বিচার শুরু হয়েছে। হাসিনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দমনে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগও আনা হয়েছে। বাংলাদেশ তাকে ফেরত দেওয়ার জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ করলেও দিল্লি সাড়া দেয়নি।

 

ইউনূস জানান, হাসিনা যেন বাংলাদেশ অস্থিতিশীল করার সুযোগ না পান, সে বিষয়ে ভারতের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। আমরা বলেছি, আপনারা তাকে রাখুন, আমাদের বিচার চলবে। কিন্তু তিনি যেন দেশকে অস্থিতিশীল করার কোনো সুযোগ না পান।

 

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে এবং আমরা ভারতের সঙ্গেও ভালো সম্পর্ক রাখতে চাই। আমরা কখনো বলিনি, আমরা ভালো সম্পর্ক রাখতে চাই না। নেপাল ও ভুটানকে অর্থনৈতিক অঞ্চলে আনতে পারি। ভারতের সেভেন সিস্টার্স- সাতটি রাজ্যও এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে থাকতে পারে। কারণ, আমরা বঙ্গোপসাগরের মাধ্যমে একই সুবিধা ভাগ করে নিতে পারি।

 

মুহম্মদ ইউনূস জানান, প্রথমে তিনি দায়িত্ব নিতে না চাইলেও ছাত্রনেতাদের অনুরোধ এবং জনগণের ত্যাগ তাকে রাজি করায়। নির্বাচন শেষে তিনি রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াবেন বলেও জানান।

 

শেষে তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ আর পথভ্রষ্ট হবে না। যুবসমাজ যেন ভোট দিয়ে তাদের স্বপ্ন ও প্রত্যাশা ব্যালট বাক্সে তুলে ধরে। আমি চাই, একটি ভালো সরকার আসুক এবং তা গণতান্ত্রিক নীতিমালা মেনে চলুক।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com