উল্কাবৃষ্টি কেন হয়?

ছবি সংগৃহীত

 

ফিচার ডেস্ক : পার্সেইড উল্কাবৃষ্টি নামে পরিচিত এই উল্কাবৃষ্টি প্রতি বছর একই সময়ে হয়ে থাকে। এ বছর বাংলাদেশের আকাশ থেকে দেখা যাবে উল্কাবৃষ্টি। বাংলাদেশ ছাড়াও উত্তর গোলার্ধের যে কোনো স্থান থেকে পার্সেইড উল্কা বৃষ্টি দেখা যাবে।

 

মূলত আকাশে হঠাৎ অনেকগুলো উজ্জ্বল আলোকরেখা একসঙ্গে ছুটে যেতে দেখলে আমরা তাকে বলি উল্কাবৃষ্টি বা মেটেওর শাওয়ার। এটি দেখতে যতটা রোমাঞ্চকর, এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা ততটাই আকর্ষণীয়। অনেকের মনেই প্রশ্ন আসতে পারে উল্কাবৃষ্টি কেন হয়?

উল্কা আসলে মহাকাশের ছোট ছোট শিলা, ধূলিকণা বা ধাতব টুকরা, যাদেরকে সম্মিলিতভাবে বলা হয় মিটিওরয়েড। এগুলো মূলত ধূমকেতু বা গ্রহাণু থেকে আসে। যখন কোনো ধূমকেতু সূর্যের কাছাকাছি আসে, তখন এর বরফ গলে গ্যাস ও ধুলা বের হয়ে যায়। সেই ধূলিকণা ও ছোট টুকরো এক প্রকার পথ বা মহাকাশীয় ধূলোর রেখা তৈরি করে।

উল্কাবৃষ্টি হয় কেন?

পৃথিবী সূর্যের চারপাশে প্রতি বছর একই পথে ঘুরতে থাকে। এই পথে যদি ধূমকেতুর ফেলে যাওয়া ধূলিকণা বা টুকরোর রেখার সঙ্গে পৃথিবীর কক্ষপথের মিল হয়, তখন পৃথিবী সেই ধূলোর মেঘের মধ্যে দিয়ে চলে যায়।

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করার সময় ধূলিকণা বা শিলা প্রচণ্ড গতিতে (প্রায় ১১-৭২ কিমি/সেকেন্ড) ঘর্ষণের কারণে উত্তপ্ত হয়ে জ্বলে ওঠে। এই আলোর রেখাগুলোকেই আমরা উল্কা বলি। যখন একসঙ্গে অনেকগুলো উল্কা দেখা যায়, তখন সেটিকে উল্কাবৃষ্টি বলা হয়।

 

ধূমকেতুর ধূলোর রেখা মহাকাশে স্থায়ীভাবে একটি নির্দিষ্ট পথে থাকে। প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে পৃথিবী যখন সেই পথে প্রবেশ করে, তখনই উল্কাবৃষ্টি দেখা যায়। পার্সেইড উল্কাবৃষ্টি: প্রতি বছর আগস্টে হয়, যার উৎস ধূমকেতু সুইফট-টুটেল। জেমিনিড উল্কাবৃষ্টি: ডিসেম্বর মাসে হয়, উৎস গ্রহাণু ৩২০০ প্যাথন।

 

প্রতিটি উল্কাবৃষ্টির নামকরণ করা হয় সেই নক্ষত্রপুঞ্জের নাম অনুসারে যেখান থেকে উল্কাগুলো আসছে বলে মনে হয়। যেমন-পার্সেইড উল্কাবৃষ্টি পারসিয়াস নক্ষত্রপুঞ্জের দিক থেকে আসছে বলে মনে হয়।

উল্কাবৃষ্টি কি বিপজ্জনক?

উল্কাবৃষ্টি মানুষের জন্য বিপজ্জনক নয়। অধিকাংশ উল্কা খুবই ছোট-মটরশুঁটির দানার মতো আকার এবং বায়ুমণ্ডলেই সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায়। কেবল বড় টুকরোগুলো কখনো কখনো মাটিতে পৌঁছায়, যেগুলোকে বলে উল্কাপিণ্ড। যা আমরা দেখতে পাই।

 

চাইলে আপনিও সাক্ষী হতে পারেন বিরল এই দৃশ্যের। আজ (১৩ আগস্ট, ২০২৫) রাতে যখন পৃথিবী ধূমকেতু সুইফট–টাটল-এর ধূলিকণা মণ্ডলের ভেতর দিয়ে অতিক্রম করবে, তখন পার্সেইড উল্কাবৃষ্টি তার সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাবে। এ সময় মধ্যরাত থেকে ভোরের আগে পর্যন্ত পৃথিবীর আকাশে ঘণ্টায় প্রায় ৫০-১০০ উল্কা ছুটে যেতে দেখা যেতে পারে।

 

বাংলাদেশ থেকেও দেখা যাবে আজ রাতের পার্সেইড উল্কাবৃষ্টি, তবে কিছু সীমাবদ্ধতা থাকবে। যেহেতু এ বছর প্রায় পূর্ণ চাঁদের আলো আকাশকে উজ্জ্বল করে রাখবে, তাই তুলনামূলক উজ্জ্বল উল্কাগুলোই বেশি চোখে পড়বে।

রাত ১২টার পর থেকে ভোরের আগে পর্যন্ত উত্তর-পূর্ব দিকের আকাশের দিকে তাকালে আপনিও দেখতে পাবেন এই অপূর্ব দৃশ্য। তবে ঢাকা বা বড় শহরে থাকলে খোলা মাঠ বা উঁচু জায়গায় যেতে হবে আপনাকে।

সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» উপদেষ্টাদের মধ্যে যারা রাজনীতি করবেন তাদের পদত্যাগ করা উচিৎ : আসিফ মাহমুদ

» আল্লামা সাঈদীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ

» ভালুকায় বিদেশি মদ-অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার বাহাদুর

» ডাকসু নির্বাচনে ভোটার হলেন নাহিদ ইসলাম

» গুলশানের চাঁদাবাজির ঘটনায় উপদেষ্টা জড়িত কিনা, স্পষ্ট করা দরকার: সালাহউদ্দিন আহমদ

» ড্রোন প্রশিক্ষণ নিতে চীনে যাচ্ছে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল

» রাজধানীতে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে ২১৪৯ মামলা

» ২৪ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে চলে গেলেন মাইলস্টোনের শিক্ষিকা মাহফুজা

» উল্কাবৃষ্টি কেন হয়?

» দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৩ জন নিহত

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

উল্কাবৃষ্টি কেন হয়?

ছবি সংগৃহীত

 

ফিচার ডেস্ক : পার্সেইড উল্কাবৃষ্টি নামে পরিচিত এই উল্কাবৃষ্টি প্রতি বছর একই সময়ে হয়ে থাকে। এ বছর বাংলাদেশের আকাশ থেকে দেখা যাবে উল্কাবৃষ্টি। বাংলাদেশ ছাড়াও উত্তর গোলার্ধের যে কোনো স্থান থেকে পার্সেইড উল্কা বৃষ্টি দেখা যাবে।

 

মূলত আকাশে হঠাৎ অনেকগুলো উজ্জ্বল আলোকরেখা একসঙ্গে ছুটে যেতে দেখলে আমরা তাকে বলি উল্কাবৃষ্টি বা মেটেওর শাওয়ার। এটি দেখতে যতটা রোমাঞ্চকর, এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা ততটাই আকর্ষণীয়। অনেকের মনেই প্রশ্ন আসতে পারে উল্কাবৃষ্টি কেন হয়?

উল্কা আসলে মহাকাশের ছোট ছোট শিলা, ধূলিকণা বা ধাতব টুকরা, যাদেরকে সম্মিলিতভাবে বলা হয় মিটিওরয়েড। এগুলো মূলত ধূমকেতু বা গ্রহাণু থেকে আসে। যখন কোনো ধূমকেতু সূর্যের কাছাকাছি আসে, তখন এর বরফ গলে গ্যাস ও ধুলা বের হয়ে যায়। সেই ধূলিকণা ও ছোট টুকরো এক প্রকার পথ বা মহাকাশীয় ধূলোর রেখা তৈরি করে।

উল্কাবৃষ্টি হয় কেন?

পৃথিবী সূর্যের চারপাশে প্রতি বছর একই পথে ঘুরতে থাকে। এই পথে যদি ধূমকেতুর ফেলে যাওয়া ধূলিকণা বা টুকরোর রেখার সঙ্গে পৃথিবীর কক্ষপথের মিল হয়, তখন পৃথিবী সেই ধূলোর মেঘের মধ্যে দিয়ে চলে যায়।

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করার সময় ধূলিকণা বা শিলা প্রচণ্ড গতিতে (প্রায় ১১-৭২ কিমি/সেকেন্ড) ঘর্ষণের কারণে উত্তপ্ত হয়ে জ্বলে ওঠে। এই আলোর রেখাগুলোকেই আমরা উল্কা বলি। যখন একসঙ্গে অনেকগুলো উল্কা দেখা যায়, তখন সেটিকে উল্কাবৃষ্টি বলা হয়।

 

ধূমকেতুর ধূলোর রেখা মহাকাশে স্থায়ীভাবে একটি নির্দিষ্ট পথে থাকে। প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে পৃথিবী যখন সেই পথে প্রবেশ করে, তখনই উল্কাবৃষ্টি দেখা যায়। পার্সেইড উল্কাবৃষ্টি: প্রতি বছর আগস্টে হয়, যার উৎস ধূমকেতু সুইফট-টুটেল। জেমিনিড উল্কাবৃষ্টি: ডিসেম্বর মাসে হয়, উৎস গ্রহাণু ৩২০০ প্যাথন।

 

প্রতিটি উল্কাবৃষ্টির নামকরণ করা হয় সেই নক্ষত্রপুঞ্জের নাম অনুসারে যেখান থেকে উল্কাগুলো আসছে বলে মনে হয়। যেমন-পার্সেইড উল্কাবৃষ্টি পারসিয়াস নক্ষত্রপুঞ্জের দিক থেকে আসছে বলে মনে হয়।

উল্কাবৃষ্টি কি বিপজ্জনক?

উল্কাবৃষ্টি মানুষের জন্য বিপজ্জনক নয়। অধিকাংশ উল্কা খুবই ছোট-মটরশুঁটির দানার মতো আকার এবং বায়ুমণ্ডলেই সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায়। কেবল বড় টুকরোগুলো কখনো কখনো মাটিতে পৌঁছায়, যেগুলোকে বলে উল্কাপিণ্ড। যা আমরা দেখতে পাই।

 

চাইলে আপনিও সাক্ষী হতে পারেন বিরল এই দৃশ্যের। আজ (১৩ আগস্ট, ২০২৫) রাতে যখন পৃথিবী ধূমকেতু সুইফট–টাটল-এর ধূলিকণা মণ্ডলের ভেতর দিয়ে অতিক্রম করবে, তখন পার্সেইড উল্কাবৃষ্টি তার সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাবে। এ সময় মধ্যরাত থেকে ভোরের আগে পর্যন্ত পৃথিবীর আকাশে ঘণ্টায় প্রায় ৫০-১০০ উল্কা ছুটে যেতে দেখা যেতে পারে।

 

বাংলাদেশ থেকেও দেখা যাবে আজ রাতের পার্সেইড উল্কাবৃষ্টি, তবে কিছু সীমাবদ্ধতা থাকবে। যেহেতু এ বছর প্রায় পূর্ণ চাঁদের আলো আকাশকে উজ্জ্বল করে রাখবে, তাই তুলনামূলক উজ্জ্বল উল্কাগুলোই বেশি চোখে পড়বে।

রাত ১২টার পর থেকে ভোরের আগে পর্যন্ত উত্তর-পূর্ব দিকের আকাশের দিকে তাকালে আপনিও দেখতে পাবেন এই অপূর্ব দৃশ্য। তবে ঢাকা বা বড় শহরে থাকলে খোলা মাঠ বা উঁচু জায়গায় যেতে হবে আপনাকে।

সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com