ট্রাম্পের শুল্ক চাপে নয়াদিল্লির নতুন ভরসা কি ইসরায়েল?

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক :  রাশিয়ার সঙ্গে তেল বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়ার জের ধরে ভারতকে বড় ধরনের অর্থনৈতিক চাপের মুখে ফেলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হঠাৎ করেই ভারতীয় পণ্যের ওপর শুল্ক দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশে উন্নীত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লির কূটনৈতিক নড়াচড়া আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে আলোচনায় এসেছে।

 

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এখন বিপুল গুরুত্ব দিয়ে ভারতের শুল্ক সমস্যা মীমাংসায় নিজেদের ভূমিকা প্রসারিত করতে চাইছেন। ইতিহাসের নানা মোড়ে কার্গিল যুদ্ধ থেকে পহেলগাঁও হামলা পর্যন্ত ইসরায়েল ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে- প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম, গোয়েন্দা সহায়তা, প্রযুক্তি ও কৃষি উন্নয়নে দিয়েছে সরাসরি সহযোগিতা।

এবারও জটিল পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নয়াদিল্লি সফরের ইঙ্গিতকে অনেকেই সংকটকালের পুরনো বন্ধুত্বের পুনর্জাগরণ বলে মনে করছেন। আন্তর্জাতিক ও ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমের বিশ্লেষণ বলছে, ট্রাম্পের শুল্ক-চাপ ভারতের অর্থনীতি ও কূটনীতিতে তাৎক্ষণিক চাপ সৃষ্টি করেছে, আর তারই প্রেক্ষিতে মোদি সরকার বিকল্প কৌশল হিসেবে ইসরায়েলের মতো নির্ভরযোগ্য অংশীদারের দিকে মনোযোগ বাড়াচ্ছে।

 

তবে এটি শুধুমাত্র অর্থনৈতিক টানাপোড়েন নয়— এর সঙ্গে আছে নিরাপত্তা, প্রযুক্তি ও আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারের কূটনৈতিক হিসাবও। ধর্মনিরপেক্ষ ভারতবর্ষের ভাবমূর্তিকে বিশ্বে তুলে ধরতে সচেষ্ট কিছু আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকের মতে, ভারত আজ বহুমুখী বন্ধুত্বের সমীকরণে চলছে— যেখানে মার্কিন প্রভাব, পশ্চিম এশিয়ার অংশীদারিত্ব ও ঐতিহাসিক মিত্রতার মিশ্রণ স্পষ্ট।

 

তারা মনে করিয়ে দেন, ১৯৯৯-এ যুক্তরাষ্ট্র কার্গিল যুদ্ধের সময় প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল, তখন ইসরায়েল দ্রুত এগিয়ে এসেছিল। ফলে আজকের প্রেক্ষাপটে নয়াদিল্লির এই কূটনৈতিক ভরসা একধরনের কৌশলগত ধারাবাহিকতা, যা সংকটে দ্রুত কার্যকর সমাধান পাওয়ার এক পরীক্ষিত উপায় হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।  তথ্যসূত্র : দ্য ইকোনমিক টাইমস ও রয়টার্স।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা পৌঁছাবে মডেল মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা

» দুর্নীতি নির্মূল সম্ভব নয়, তবে কমানো যাবে: দুদক চেয়ারম্যান

» অতিরিক্ত আইজিপি হলেন সাত কর্মকর্তা

» আইন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গুপ্ত রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে : রাকিব

» কুষ্টিয়ার মিরপুরে সন্ত্রাসী হামলায় সাংবাদিক ফিরোজ আহমেদ গুরুতর আহত

» সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল ১৪ সেপ্টেম্বর

» আওয়ামী লীগ মানুষকে জিম্মি করে নিঃশেষ করে দিয়েছে : এ্যানি

» প্রধান উপদেষ্টাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করবে ইউকেএম

» বাংলাদেশসহ অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপে কোয়ালিফাই করেছে যারা

» চেকপোস্টে তল্লাশি চালিয়ে এক হাজার পিস ইয়াবাসহ নারী মাদক কারবারিকে আটক

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ট্রাম্পের শুল্ক চাপে নয়াদিল্লির নতুন ভরসা কি ইসরায়েল?

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক :  রাশিয়ার সঙ্গে তেল বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়ার জের ধরে ভারতকে বড় ধরনের অর্থনৈতিক চাপের মুখে ফেলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হঠাৎ করেই ভারতীয় পণ্যের ওপর শুল্ক দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশে উন্নীত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লির কূটনৈতিক নড়াচড়া আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে আলোচনায় এসেছে।

 

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এখন বিপুল গুরুত্ব দিয়ে ভারতের শুল্ক সমস্যা মীমাংসায় নিজেদের ভূমিকা প্রসারিত করতে চাইছেন। ইতিহাসের নানা মোড়ে কার্গিল যুদ্ধ থেকে পহেলগাঁও হামলা পর্যন্ত ইসরায়েল ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে- প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম, গোয়েন্দা সহায়তা, প্রযুক্তি ও কৃষি উন্নয়নে দিয়েছে সরাসরি সহযোগিতা।

এবারও জটিল পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নয়াদিল্লি সফরের ইঙ্গিতকে অনেকেই সংকটকালের পুরনো বন্ধুত্বের পুনর্জাগরণ বলে মনে করছেন। আন্তর্জাতিক ও ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমের বিশ্লেষণ বলছে, ট্রাম্পের শুল্ক-চাপ ভারতের অর্থনীতি ও কূটনীতিতে তাৎক্ষণিক চাপ সৃষ্টি করেছে, আর তারই প্রেক্ষিতে মোদি সরকার বিকল্প কৌশল হিসেবে ইসরায়েলের মতো নির্ভরযোগ্য অংশীদারের দিকে মনোযোগ বাড়াচ্ছে।

 

তবে এটি শুধুমাত্র অর্থনৈতিক টানাপোড়েন নয়— এর সঙ্গে আছে নিরাপত্তা, প্রযুক্তি ও আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারের কূটনৈতিক হিসাবও। ধর্মনিরপেক্ষ ভারতবর্ষের ভাবমূর্তিকে বিশ্বে তুলে ধরতে সচেষ্ট কিছু আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকের মতে, ভারত আজ বহুমুখী বন্ধুত্বের সমীকরণে চলছে— যেখানে মার্কিন প্রভাব, পশ্চিম এশিয়ার অংশীদারিত্ব ও ঐতিহাসিক মিত্রতার মিশ্রণ স্পষ্ট।

 

তারা মনে করিয়ে দেন, ১৯৯৯-এ যুক্তরাষ্ট্র কার্গিল যুদ্ধের সময় প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল, তখন ইসরায়েল দ্রুত এগিয়ে এসেছিল। ফলে আজকের প্রেক্ষাপটে নয়াদিল্লির এই কূটনৈতিক ভরসা একধরনের কৌশলগত ধারাবাহিকতা, যা সংকটে দ্রুত কার্যকর সমাধান পাওয়ার এক পরীক্ষিত উপায় হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।  তথ্যসূত্র : দ্য ইকোনমিক টাইমস ও রয়টার্স।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com