সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্র থেকে অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার বিষয়ে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে ভারত। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ এক মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানায়, ওয়াশিংটনের সঙ্গে শুল্ক এবং ভূরাজনৈতিক বিভিন্ন ইস্যুতে চলমান টানাপোড়েনের প্রেক্ষাপটে নয়াদিল্লি এমন অবস্থান নিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক ভারতের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের সম্পর্কে ফাটল ধরিয়েছে। যদিও আলোচনার দরজা এখনো খোলা রেখেছে নয়াদিল্লি, তবে সামরিক সরঞ্জাম ক্রয়ের বিষয়ে আগ্রহ হ্রাস পেয়েছে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার প্রস্তাব দেন। সফরটি ছিল উষ্ণ কূটনৈতিক মুহূর্তের একটি উদাহরণ, যেখানে প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্যিক অংশীদারিত্ব নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়।
কিন্তু মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে সেই সম্পর্কেই দেখা দিয়েছে শীতলতা। ভারতীয় পণ্যের ওপর উচ্চ আমদানি শুল্ক আরোপ করে ট্রাম্প প্রশাসন। পাশাপাশি, সামাজিক মাধ্যমে ভারতের শুল্কনীতির তীব্র সমালোচনা করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই। রাশিয়া থেকে জ্বালানি ও সামরিক সরঞ্জাম কেনার বিষয়েও ভারতের বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এই প্রেক্ষাপটে নয়াদিল্লি যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান না কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। ব্লুমবার্গকে দেওয়া বক্তব্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ভারতের পক্ষ থেকে এফ-৩৫ কিনতে আগ্রহ নেই বলে জানানো হয়েছে। এমনকি ভবিষ্যতেও যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কিনবে কি না— সে বিষয়েও এখন অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, যুদ্ধবিমান কিনে আনার পরিবর্তে ভারত এর ডিজাইন ও উৎপাদন যৌথভাবে করতে চেয়েছিল। তবে সাম্প্রতিক কূটনৈতিক পরিবেশে সেই পরিকল্পনাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এদিকে, হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ‘রাফ রেইডার্স’ ভিএফ-১২৫ স্কোয়াড্রনের এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের একটি ইউনিট সম্প্রতি ক্যালিফোর্নিয়ায় বিধ্বস্ত হয়েছে। ৩১ জুলাইয়ের এই দুর্ঘটনার কারণ এখনো তদন্তাধীন।
যুদ্ধবিমান না কিনলেও যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস, স্বর্ণ এবং যোগাযোগ সরঞ্জাম আমদানি বাড়ানোর চিন্তা করছে ভারত। রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেও কিছু খাতে বাণিজ্যিক সহযোগিতা ধরে রাখতে চায় নয়াদিল্লি। বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের এই সিদ্ধান্ত শুধু কূটনৈতিক বার্তাই নয়, বরং প্রতিরক্ষা খাতে আত্মনির্ভরতার দিকেও এক ধরনের অঙ্গীকার। তথ্যসূত্র : ব্লুমবার্গ ও হিন্দুস্তান টাইমস।