সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : দুর্দান্ত বোলিংয়ে পাকিস্তানকে অল্প রানে আটকে রেখে জয়ের অর্ধেক কাজ সেরে রেখেছিলেন বোলাররা। ব্যাটাররাও দিয়েছেন প্রতিদান। নিজেদের কাজ সারলেন দারুণভাবে। পারভেজ হোসেন ইমনের ফিফটি আর তাওহীদ হৃদয়ের কার্যকর এক ইনিংসের সৌজন্যে ২৭ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটে বড় জয় পেল বাংলাদেশ। ৯ বছরের বেশি সময় পর পাকিস্তানের বিপক্ষে কুড়ি ওভারের ম্যাচ জিতল স্বাগতিকেরা। সবশেষ জিতেছিল ২০১৬ সালের মার্চে।
মিরপুরের উইকেট ছিল কিছুটা ধীর গতির। চেনা কন্ডিশনের সুবিধা কাজে লাগিয়ে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানকে দাঁড়াতেই দিল না বাংলাদেশ। তাসকিন-মোস্তাফিজদের তোপের মুখে ১৯.৩ ওভারে ১১০ রানেই গুটিয়ে যায় সফরকারীরা। কুড়ি ওভারের সংস্করণে বাংলাদেশের বিপক্ষে অতিথিদের এটি সর্বনিম্ন স্কোর। পাকিস্তানের তিন ব্যাটার ছাড়া দুই অঙ্কের ঘরে পোঁছাতে পারেননি কেউ। ১৫.৩ ওভারে ১১১ রানের লক্ষ্য তাড়া করে বাংলাদেশ।
১১১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ৭ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। অভিষিক্ত পেসার সালমান মির্জা প্রথম ওভারে পাকিস্তানকে দারুণ শুরু এনে দেন। তাঁর পঞ্চম বলে মিড অনে ফখর জামানকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তানজিদ হাসান তামিম (১)। নিজের দ্বিতীয় ওভারে আবারও সালমানের আঘাত। এবার আউট বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস (১)। তবে এই উইকেটে কৃতিত্ব দিতে হবে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আঘাকে। স্লিপে বাজপাখির মতো ঝাঁপিয়ে বলটাকে তালুবন্দী করেন।
তৃতীয় উইকেটে পারভেজ হোসেন ইমন ও তাওহীদ হৃদয়ের ৬২ বলে ৭৩ রানের রানের জুটিতে শুরুর বিপর্যয় সামলে জয়ের পথে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। ১৩ তম ওভারে হৃদয়কে বোল্ড করে পাকিস্তানকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন আব্বাস আফ্রিদি। ৩৭ বলে ৩৬ রান করে বোল্ড হন হৃদয়। ৩৯ বলে ৫৬ রানে অপরাজিত থাকেন ইমন। টি-টোয়েন্টিদে এটি তাঁর দ্বিতীয় ফিফটি। ইনিংসে ৫টি ছক্কার সঙ্গে মেরেছেন ৩টি চার। ১০ বলে ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন জাকের আলী অনিকও। পাকিস্তানের বোলারদের মধ্যে সালমান ২টি ও আব্বাস নিয়েছেন ১টি উইকেট।
তার আগে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস। পাওয়ার-প্লেতে পাকিস্তানকে রীতিমতো কাঁপিয়ে দেয় বাংলাদেশ। ৪১ রানে তুলে নেয় ৪ উইকেট।
চতুর্থ বলেই উইকেট নেওয়ার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। শেখ মেহেদী বল স্লগ সুইপ করতে দিলে শর্ট ফাইন লেগে অনেক ওপরে তুলে দেন ফখর জামান। বল হাতের তালুতে পড়লেও বন্দী করতে পারেননি তাসকিন আহমেদ। তবে দ্বিতীয় ওভারে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন তাসকিন। ব্যাক অব লেংথের বল ফ্লিক করতে গিয়ে ডিপ ফাইন লেগে মোস্তাফিজুর রহমানের হাতে ধরা পড়েন সাইম আইয়ুব (৬)।
উইকেট হারালেও পাকিস্তানের রানের গতি থাকে সাবলীল। তৃতীয় ওভারে মেহেদী হজম করেন ৩টি চার। তবে ওভারের শেষ বলে ফেরান তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামা মোহাম্মদ হারিসকে (৪)। মিডউইকেটে ক্যাচ নেন শামীম হোসেন।
প্রথম ৩ ওভারে ৩২ রান স্কোর যোগ করে পাকিস্তান। তবে পঞ্চম ওভারে ২ ও ষষ্ঠ ওভারে ১ রান দিয়ে উইকেট নেন সাকিব ও মোস্তাফিজ। সাকিব ৩ রানে ফেরান অধিনায়ক সালমান আলী আঘাকে। মোস্তাফিজ ফেরান হাসান নওয়াজকে (০)। অষ্টম ওভারে ৩ রানে রানআউট হয়েছেন দেড় বছর পর দলে সুযোগ পাওয়া মোহাম্মদ নওয়াজ।
১০ম ওভারে আরও একবার মেহেদীর বলে জীবন পান ফখর। সোজাসুজি খেলেছিলেন, বল হাতে রাখতে পারেননি মেহেদী। বলের গতিও ছিল কিছুটা বেশি, উল্টো মাথার এক পাশে লাগলে আঘাত পান তিনি। তবে ইনিংসের ১৩ তম ওভারে এই তাসকিনের থ্রোতে, লিটনের দারুণ স্টাম্পিংয়ে রান আউট হয়ে ফেরেন ফখর। ৩৪ বলে ৪৪ রান আসে তাঁর ব্যাট থেকে। ইনিংসে ছিল ৬টি চার ও ১টি ছক্কা।
সপ্তম উইকেটে খুশদিল শাহ ও আব্বাস আফ্রিদির রানের জুটিতে ১০০ পেরোয় পাকিস্তান। ১৭ তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মোস্তাফিজের স্লোয়ারে মিড-অফে রিশাদ হোসেনকে ক্যাচ দিয়ে খুশদিল আউট হলে ভাঙে জুটি। ২৩ বলে ১৭ রান আসে তাঁর ব্যাট থেকে। তিন ছক্কায় ২৪ বলে ২২ রান করেছেন আব্বাস আফ্রিদি। এ ছাড়া সুবিধা করতে পারেননি লেজের ব্যাটাররাও।
২২ রান দিয়ে তাসকিন নিয়েছেন ৩ উইকেট, ৪ ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়ে মোস্তাফিজুর রহমানের শিকার ২ উইকেট।