সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ বলেছেন, ‘রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াত তাদের মহাসমাবেশে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানায়নি। আমন্ত্রণ না জানিয়ে দলটি একটি স্পষ্ট রাজনৈতিক বার্তা দিয়েছে। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সঙ্গী বিএনপিকে বাদ দিয়ে জামায়াত নিজেদের ভিন্ন অবস্থান ও কৌশল সামনে এনেছে। এ সমাবেশের মাধ্যমে জামায়াত একদিকে যেমন নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান ও কর্মসূচিকে জোরালোভাবে তুলে ধরেছে, অন্যদিকে বিএনপিকে বর্জন করে ভবিষ্যতের পথচলায় পৃথক অবস্থানের ইঙ্গিত দিয়েছে।
শনিবার (১৯ জুলাই) ভয়েস বাংলা ইউটিউব চ্যানেলের এক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।
সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ‘জামায়াতের এই পদক্ষেপ শুধুই কৌশলগত নয়, বরং একটি স্পষ্ট বার্তা। তারা এখন আর বিএনপির ছায়ায় নয়, বরং নিজস্ব অবস্থান থেকে রাজনৈতিক সমীকরণে ভূমিকা রাখতে চায়। অতীতের ১৫ বছরের আন্দোলন, জোট ও হাসিনাবিরোধী লড়াইয়ে একসঙ্গে থাকলেও বর্তমানে দুই দলের মধ্যে মতপার্থক্য ও লক্ষ্যগত ভিন্নতা দিন দিন স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
এ সমাবেশে বিএনপির অনুপস্থিতি এবং অন্য দলগুলোর উপস্থিতিই প্রমাণ করে—জামায়াত এখন আলাদা পথের যাত্রী।’
তিনি বলেন, ‘সমাবেশে অংশ না নিয়ে বিএনপি যেমন রাজনৈতিকভাবে আড়ালে রইল তেমনি জামায়াত নিজেদের শক্তি ও স্বকীয়তা প্রদর্শনে সফল এক শোডাউন করল।’
তিনি আরো বলেন, ‘জামায়াত এই সমাবেশে বিএনপির পাশাপাশি এবি পার্টিকেও আমন্ত্রণ জানায়নি। এবি পার্টি জামায়াত ভাঙনের ফলে গঠিত।
তাই তাদের না ডাকার যৌক্তিকতা রয়েছে। তবে বিএনপিকে বাদ দেওয়ার পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক মতপার্থক্য। জামায়াত মনে করছিল, তাদের সমাবেশে বিএনপি এসে ভিন্নমত পোষণ করতে পারে, বিশেষ করে স্থানীয় সরকার নির্বাচন, পিআর (প্রতিনিধিত্বমূলক) পদ্ধতি ও সংস্কার ও বিচারব্যবস্থার মতো ইস্যুতে। সে কারণে তারা বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানায়নি।’
মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই জামায়াত ও বিএনপির মধ্যে বিরোধ দানা বাঁধছে।
এই দূরত্বের সূচনা হয় লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার একটি বৈঠকের পর। এর পর থেকেই দুই দলের রাজনৈতিক কৌশল ও দাবিতে দেখা দিয়েছে মতানৈক্য। জামায়াত জাতীয় নির্বাচনের আগে সংস্কার ও বিচার প্রক্রিয়ার দাবি জানালেও বিএনপি দ্রুত নির্বাচন চায়—যা প্রথমে ডিসেম্বর, পরে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানায় বিএনপি। অন্যদিকে জামায়াত সংস্কার ছাড়া নির্বাচন চায় না।’
তিনি আরো বলেন, ‘সব রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানালেও বিএনপিকে বাদ দেওয়ার মাধ্যমে জামায়াত একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে—তারা এখন আর বিএনপির অংশ নয় বরং একটি ভিন্ন রাজনৈতিক অবস্থানে দাঁড়িয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই মহাসমাবেশ ছিল তাদের শক্তির প্রকাশ, একই সঙ্গে বিএনপির সঙ্গে তাদের সম্পর্কের অবসানের একটি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা।’