ঢাকা, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫: ব্র্যাক ব্যাংকের সেপাল টাওয়ার এবং অনিক টাওয়ারের রিডিং ক্যাফেতে সম্প্রতি আলবেয়ার কাম্যু এবং বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের দু’টি কালজয়ী সৃষ্টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বই দুইটি হলো ফ্রেঞ্চ-আলজেরিয়ান লেখক আলবেয়ার কাম্যু‘র ‘দ্য স্ট্রেঞ্জার’ এবং বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিখ্যাত ছোটগল্প সমগ্র ‘তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র’।
এই মাসিক পাঠচক্রগুলোতে ব্র্যাক ব্যাংকের সাহিত্য অনুরাগী কর্মকর্তারা একত্রিত হন এবং তারা বিখ্যাত সব সাহিত্যকর্ম নিয়ে আলোচনা করেন। এখানে সুচিন্তিত আলোচনা-সমালোচনার মাধ্যমে সদস্যগণ তাদের প্রফেশনাল লাইফের বাইরে তাদের সাহিত্য অনুরাগের সুস্পষ্ট প্রতিফলন ঘটান।
সেপাল টাওয়ার রিডিং ক্যাফেতে সদস্যরা আলবেয়ার কাম্যু‘র উপন্যাস ‘দ্য স্ট্রেঞ্জার’ নিয়ে আলোচনা করেন। বইটি পড়ে তারা অস্তিত্ববাদ, নৈতিকতা আর সমাজ থেকে আলাদা হয়ে পড়ার মতো বিষয়গুলো নিয়ে তাদের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। আলোচনার সময় অংশগ্রহণকারীরা বুঝতে পারেন, বইটি বিদেশি একজন লেখকের হলেও এর অনেক ভাবনা আমাদের জীবনেও খুব মিলে যায়। কাম্যু’র লেখার ভেতর দিয়ে মানুষের জীবন এবং আধুনিক জীবনের অদ্ভুত বিষয় সম্পর্কে গভীর আলোচনা হয়। এই আলোচনা সবার মাঝে চিন্তার একটা জায়গা তৈরি করে। পাঠকরা উপলব্ধি করেন, কীভাবে সাহিত্যের মাধ্যমে আমরা নিজেদের আর আশেপাশের দুনিয়াকে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারা যায়।
এদিকে অনিক টাওয়ারে অনুষ্ঠিত আরেকটি সেশনে পাঠকেরা ডুবে যান ‘তারানাথ তান্ত্রিক’-এর রহস্যময় জগতে। আলোচনায় উঠে আসে বিভূতিভূষণের অসাধারণ গল্প বলার শৈলী, বাস্তবতা, কল্পনা আর তান্ত্রিকতার মিশেলে তৈরি এই গল্পগুলোর ভিন্নরকম স্বাদ। তারানাথ চরিত্রের জটিলতা, গল্পের অদ্ভুত অভিজ্ঞতা আর অতিপ্রাকৃত ও অলৌকিক ঘটনার পেছনের মানুষের মানসিকতা নিয়ে হয় নানা আলোচনা। সেই সঙ্গে উঠে আসে সমাজে প্রচলিত কুসংস্কার, ভয় এবং আজও বিদ্যমান নানা ট্যাবু— যা এই গল্পগুলোর মধ্য দিয়ে নতুন আলোকে দেখা যায়। এই সেশন পাঠকদের শুধু গল্প নয়, নিজের ভেতরের অনেক প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করায়।
ব্র্যাক ব্যাংক বর্তমানে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও চুয়াডাঙ্গায় চারটি রিডিং ক্যাফে পরিচালনা করছে। সহকর্মীদের মধ্যে জ্ঞানচর্চা ও আজীবন শেখার সংস্কৃতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা এবং ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির আদান-প্রদানের মাধ্যমে রিডিং ক্যাফেগুলো সহকর্মীদের মধ্যে বিশ্লেষণমূলক চিন্তাভাবনা এবং কর্মস্থলের বাইরে জ্ঞানের প্রতি ভালোবাসা জাগিয়ে তোলার একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে।