মরুভূমির মধ্যে এক দানবীয় হাত, এর রহস্য কী?

চিলির আটাকামা মরুভূমির মধ্যে দেখা মিলবে এক দানবীয় হাত। যেখানে মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে রয়েছে হাতের পাঁচটি আঙ্গুল। হঠাৎ করে দেখলে মনে হয়, মরুর বালি ফুঁড়ে উঠে আসা হাতটি যেন থামতে বলছে কাউকে। 

 

আচমকা দেখলে মনে হতেই পারে, কোন সিনেমার সেট-এর দৃশ্য এটি। কিন্তু এই হাতটি একান্ত ভাবেই সত্য। তবে এর রহস্য কি? আসলে ‘মানো দেল দেসিয়ার্তো’ বা ‘হ্যান্ড অফ দ্য ডেজার্ট’ ৩৬ ফুট উঁচু একটি হাতের ভাস্কর্য। এর পাঁচটি আঙ্গুল আকাশের দিকে নির্দেশ করা রয়েছে আর ভাস্কর্যের কবজির নিচের অংশ আছে বালির গভীরে।

ভাস্কর্যের কবজির নিচের অংশ আছে বালির গভীরে

ভাস্কর্যের কবজির নিচের অংশ আছে বালির গভীরে

৩০ বছর আগে আটিকে তৈরি করেন চিলির প্রখ্যাত ভাস্করশিল্পী মারিও ইররাজাবালা। এটি নির্মাণ করা হয় সুবিশাল এক লৌহ কাঠামোর উপর। তবে হ্যান্ড অফ দ্য ডেজার্টকে দেখলে মনে হবে এটি মরুর বালি দিয়েই তৈরি। মরুভূমির আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে যাতে এই ভাস্কর্যটির কোনো ক্ষতি হতে না পারে, তার ব্যবস্থাও করেছেন ভাস্কর ইররাজাবালা।

 

হ্যান্ড অফ দ্য ডেজার্ট তৈরি হয়েছে কাউকে ভয় দেখানো বা চমক তৈরি করার জন্য নয়, ইররাজাবালা এটি তৈরি করেন সম্পূর্ণ অন্যরকম এক ভাবনা থেকে। মহাবিশ্বের কাছে মানুষের ক্ষুদ্রতাকে বোঝানোর জন্যই ইররাজাবাল এই হাতটি তৈরি করেন। দিকচিহ্নহীন মরুর প্রান্তরে এই হাতটি মানুষকে যেন জানিয়ে দেয় তার ক্ষণস্থায়িত্ব, মহাপ্রকৃতির সামনে তার অসহায় অবস্থান।

৩০ বছর আগে আটিকে তৈরি করেন চিলির প্রখ্যাত ভাস্করশিল্পী মারিও ইররাজাবালা

৩০ বছর আগে আটিকে তৈরি করেন চিলির প্রখ্যাত ভাস্করশিল্পী মারিও ইররাজাবালা

তার সঙ্গে শিল্পী আরো তুলে ধরতে চেয়েছেন ভয়াবহ মানবাধিকারের বিষয়গুলো যা চিলির জনগণ অতীতের সঙ্গে মোকাবিলা করেছে। সেই সঙ্গে এটি যেন থামতে বলে অন্যায়, একাকীত্ব, নির্যাতনের বিরুদ্ধে। সমুদ্রপৃষ্ট থেকে এক হাজার ১০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত ভাস্কর্যটি এক কথায় অপূর্ব। শিল্পীর নিপুণ হাতের পরশ ভাস্কর্যটিকে করে তুলেছে জীবন্ত। একটি স্থানীয় বুস্টার সংস্থা ‘কর্পোরেশন প্রো অ্যান্টোফাগস্টা’ এই ভাস্কর্য তদারকির দায়িত্বে ছিল।

 

নির্মাণের পর থেকে এখনো পর্যন্ত হ্যান্ড অফ দ্য ডেজার্ট বিশ্বের সবার কাছে বিস্ময় হিসেবে রয়ে গেছে। সেই জন্য বছরের যে কোনো সময় বিপুল পরিমাণ পর্যটক ভিড় জমান এটি দেখতে। ভাস্কর্যের সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠান বছরে দু’বার ভাস্কর্যটি পরিষ্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ তদারকি করে থাকে।  তবে দু:খজনক বিষয় হলো কিছু পর্যটক রয়েছে এই ভাস্কর্যের দেয়ালে তাদের নানা চিত্রকর্ম ফুটিয়ে তুলতে সচেষ্ট থাকেন। ফলে ভাস্কর্যটির সৌন্দর্য দিন দিন নষ্ট হচ্ছে।

 

ভাস্কর্যের দেয়ালে তাদের নানা চিত্রকর্ম ফুটিয়ে তুলতে সচেষ্ট থাকেন। ফলে ভাস্কর্যটির সৌন্দর্য দিন দিন নষ্ট হচ্ছে

ভাস্কর্যের দেয়ালে তাদের নানা চিত্রকর্ম ফুটিয়ে তুলতে সচেষ্ট থাকেন। ফলে ভাস্কর্যটির সৌন্দর্য দিন দিন নষ্ট হচ্ছে

মরুভূমির বুকে এক আশ্চর্য নকশা হচ্ছে জানকা লাইম। পেরুর রাজধানী লিমা থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দক্ষিণের মরুভূমি জুড়ে রয়েছে কিছু বিশালা আক্রতির রেখা চিত্র। আশ্চর্য এই রেখাগুলোকে চিহ্নিত করা হয় নাজকা রেখা বা নাজকা লাইন নামে। মরুভূমির প্রায় ৫০০ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে ১০ হাজারেরও বেশি অতিকায় রেখা রয়েছে। সেখানে রয়েছে বিপুল আয়ত, ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, আয়তক্ষেত্র এবং সামান্তরিক এরকম অনেক জ্যামিতিক নকশা।

মাকড়শা ও ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, আয়তক্ষেত্র এবং সামান্তরিক এরকম অনেক জ্যামিতিক নকশা

মাকড়শা ও ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, আয়তক্ষেত্র এবং সামান্তরিক এরকম অনেক জ্যামিতিক নকশা

এছাড়াও আকাশ থেকে দেখলে যেখানে পাখি, বানর, কুকুর ও মাকড়শার মতো ৭০টি প্রাণী এবং ৩০০ মতো ভৌগোলিকি আকৃতি চোখে পরে। নাজকা লাইন প্রথম মানুষের দৃষ্টিবচ হয় ১৯২৬ সালে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এগুলো তৈরি করা হয়েছে আজ থেকে প্রায় তিন হাজার বছরের আগে। যা কিনা প্রাচীন নাজকা বা পরাকাস সংস্কৃতির সাক্ষ্য বহন করে। গবেষকরা নাজকা লাইনের রহ্যস সম্পর্কে তেমন কোনো ব্যাখা দিতে পারেননি বলে মনে করেন। এলিয়ানদের শায়তায় নাজকার প্রাচীন বাসিন্দারা এগুলো তৈরি করেছিল।   সূএ:ডেইলি বাংলাদেশ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আমরা এনালগ সিস্টেমে আছি, আপনারা ক্ষমতায় থেকেও ডিজিটাল সিস্টেম করে যাননি

» রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারে সচেতনভাবে এগোচ্ছে বিএনপি: ফখরুল

» বিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধ হয়ে নিহত ৫ জনের পরিচয় শনাক্ত ডিএনএ টেস্টে

» আওয়ামী শাসনব্যবস্থা রাষ্ট্রকে জনগণের বিরুদ্ধে অস্ত্রে পরিণত করেছিল: আদিলুর রহমান

» চাঁদা না দিলে পুলিশ-সেনাবাহিনী দিয়ে গ্রেফতারের ভয় দেখানো হয়

» শাহজালালে যাত্রীদের বিদায়-স্বাগত জানাতে ঢুকতে পারবেন ২ জন, আজ থেকে কার্যকর

» জুলাই অভ্যুত্থান : ২৭ জুলাই সারজিস-হাসনাতকে তুলে নেয় ডিবি, সরকারের নির্মম দমন-পীড়ন

» রাতে ঢাকায় আসছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর কন্যা

» গাজায় প্রতিদিন ১০ ঘণ্টার ‘যুদ্ধবিরতি’ ঘোষণা

» ৭২ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

মরুভূমির মধ্যে এক দানবীয় হাত, এর রহস্য কী?

চিলির আটাকামা মরুভূমির মধ্যে দেখা মিলবে এক দানবীয় হাত। যেখানে মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে রয়েছে হাতের পাঁচটি আঙ্গুল। হঠাৎ করে দেখলে মনে হয়, মরুর বালি ফুঁড়ে উঠে আসা হাতটি যেন থামতে বলছে কাউকে। 

 

আচমকা দেখলে মনে হতেই পারে, কোন সিনেমার সেট-এর দৃশ্য এটি। কিন্তু এই হাতটি একান্ত ভাবেই সত্য। তবে এর রহস্য কি? আসলে ‘মানো দেল দেসিয়ার্তো’ বা ‘হ্যান্ড অফ দ্য ডেজার্ট’ ৩৬ ফুট উঁচু একটি হাতের ভাস্কর্য। এর পাঁচটি আঙ্গুল আকাশের দিকে নির্দেশ করা রয়েছে আর ভাস্কর্যের কবজির নিচের অংশ আছে বালির গভীরে।

ভাস্কর্যের কবজির নিচের অংশ আছে বালির গভীরে

ভাস্কর্যের কবজির নিচের অংশ আছে বালির গভীরে

৩০ বছর আগে আটিকে তৈরি করেন চিলির প্রখ্যাত ভাস্করশিল্পী মারিও ইররাজাবালা। এটি নির্মাণ করা হয় সুবিশাল এক লৌহ কাঠামোর উপর। তবে হ্যান্ড অফ দ্য ডেজার্টকে দেখলে মনে হবে এটি মরুর বালি দিয়েই তৈরি। মরুভূমির আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে যাতে এই ভাস্কর্যটির কোনো ক্ষতি হতে না পারে, তার ব্যবস্থাও করেছেন ভাস্কর ইররাজাবালা।

 

হ্যান্ড অফ দ্য ডেজার্ট তৈরি হয়েছে কাউকে ভয় দেখানো বা চমক তৈরি করার জন্য নয়, ইররাজাবালা এটি তৈরি করেন সম্পূর্ণ অন্যরকম এক ভাবনা থেকে। মহাবিশ্বের কাছে মানুষের ক্ষুদ্রতাকে বোঝানোর জন্যই ইররাজাবাল এই হাতটি তৈরি করেন। দিকচিহ্নহীন মরুর প্রান্তরে এই হাতটি মানুষকে যেন জানিয়ে দেয় তার ক্ষণস্থায়িত্ব, মহাপ্রকৃতির সামনে তার অসহায় অবস্থান।

৩০ বছর আগে আটিকে তৈরি করেন চিলির প্রখ্যাত ভাস্করশিল্পী মারিও ইররাজাবালা

৩০ বছর আগে আটিকে তৈরি করেন চিলির প্রখ্যাত ভাস্করশিল্পী মারিও ইররাজাবালা

তার সঙ্গে শিল্পী আরো তুলে ধরতে চেয়েছেন ভয়াবহ মানবাধিকারের বিষয়গুলো যা চিলির জনগণ অতীতের সঙ্গে মোকাবিলা করেছে। সেই সঙ্গে এটি যেন থামতে বলে অন্যায়, একাকীত্ব, নির্যাতনের বিরুদ্ধে। সমুদ্রপৃষ্ট থেকে এক হাজার ১০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত ভাস্কর্যটি এক কথায় অপূর্ব। শিল্পীর নিপুণ হাতের পরশ ভাস্কর্যটিকে করে তুলেছে জীবন্ত। একটি স্থানীয় বুস্টার সংস্থা ‘কর্পোরেশন প্রো অ্যান্টোফাগস্টা’ এই ভাস্কর্য তদারকির দায়িত্বে ছিল।

 

নির্মাণের পর থেকে এখনো পর্যন্ত হ্যান্ড অফ দ্য ডেজার্ট বিশ্বের সবার কাছে বিস্ময় হিসেবে রয়ে গেছে। সেই জন্য বছরের যে কোনো সময় বিপুল পরিমাণ পর্যটক ভিড় জমান এটি দেখতে। ভাস্কর্যের সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠান বছরে দু’বার ভাস্কর্যটি পরিষ্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ তদারকি করে থাকে।  তবে দু:খজনক বিষয় হলো কিছু পর্যটক রয়েছে এই ভাস্কর্যের দেয়ালে তাদের নানা চিত্রকর্ম ফুটিয়ে তুলতে সচেষ্ট থাকেন। ফলে ভাস্কর্যটির সৌন্দর্য দিন দিন নষ্ট হচ্ছে।

 

ভাস্কর্যের দেয়ালে তাদের নানা চিত্রকর্ম ফুটিয়ে তুলতে সচেষ্ট থাকেন। ফলে ভাস্কর্যটির সৌন্দর্য দিন দিন নষ্ট হচ্ছে

ভাস্কর্যের দেয়ালে তাদের নানা চিত্রকর্ম ফুটিয়ে তুলতে সচেষ্ট থাকেন। ফলে ভাস্কর্যটির সৌন্দর্য দিন দিন নষ্ট হচ্ছে

মরুভূমির বুকে এক আশ্চর্য নকশা হচ্ছে জানকা লাইম। পেরুর রাজধানী লিমা থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দক্ষিণের মরুভূমি জুড়ে রয়েছে কিছু বিশালা আক্রতির রেখা চিত্র। আশ্চর্য এই রেখাগুলোকে চিহ্নিত করা হয় নাজকা রেখা বা নাজকা লাইন নামে। মরুভূমির প্রায় ৫০০ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে ১০ হাজারেরও বেশি অতিকায় রেখা রয়েছে। সেখানে রয়েছে বিপুল আয়ত, ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, আয়তক্ষেত্র এবং সামান্তরিক এরকম অনেক জ্যামিতিক নকশা।

মাকড়শা ও ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, আয়তক্ষেত্র এবং সামান্তরিক এরকম অনেক জ্যামিতিক নকশা

মাকড়শা ও ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, আয়তক্ষেত্র এবং সামান্তরিক এরকম অনেক জ্যামিতিক নকশা

এছাড়াও আকাশ থেকে দেখলে যেখানে পাখি, বানর, কুকুর ও মাকড়শার মতো ৭০টি প্রাণী এবং ৩০০ মতো ভৌগোলিকি আকৃতি চোখে পরে। নাজকা লাইন প্রথম মানুষের দৃষ্টিবচ হয় ১৯২৬ সালে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এগুলো তৈরি করা হয়েছে আজ থেকে প্রায় তিন হাজার বছরের আগে। যা কিনা প্রাচীন নাজকা বা পরাকাস সংস্কৃতির সাক্ষ্য বহন করে। গবেষকরা নাজকা লাইনের রহ্যস সম্পর্কে তেমন কোনো ব্যাখা দিতে পারেননি বলে মনে করেন। এলিয়ানদের শায়তায় নাজকার প্রাচীন বাসিন্দারা এগুলো তৈরি করেছিল।   সূএ:ডেইলি বাংলাদেশ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com