সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : সিরিয়ার বিস্তীর্ণ কৃষিজমিতে ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
শুক্রবার দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এলাকার কুনেইত্রা প্রদেশের গোলান মালভূমির সীমান্তবর্তী আল-রাফিদ শহরের কাছে এই ঘটনা ঘটে।
সংবাদমাধ্যম আল-ইখবারিয়া সিরিয়া এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, “ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী সীমান্ত বেড়ার কাছে আল-রাফিদের পশ্চিমে একাধিক জায়গায় আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে বহু ডুনাম (১ ডুনাম = ১,০০০ বর্গমিটার) জমি পুড়ে যায়।”
নিজেদের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে আল-ইখবারিয়া জানায়, জাতিসংঘের বাহিনী প্রাথমিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু পর্যাপ্ত সরঞ্জামের অভাবে বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। তবে বিস্তারিত কোনও তথ্য দেয়নি সংবাদমাধ্যমটি।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী স্থানীয় সময় বিকাল ৩টা ১৫ মিনিট (জিএমটি) পর্যন্ত এই ঘটনার কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি।
এর আগে একই দিন, কুনেইত্রার ডেপুটি গভর্নর মুহাম্মদ আল-সাঈদ সংবাদমাধ্যমকে জানান, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বাশার আল-আসাদের পতনের পর থেকে ইসরায়েল ওই অঞ্চলে আটটির বেশি সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করেছে। এসব ঘাঁটি কুনেইত্রার উত্তরে — বিশেষত ইয়ারমুক অববাহিকার ভেতরে গড়ে তোলা হয়েছে, যা সরাসরি ১৯৭৪ সালের ডিসেংগেজমেন্ট চুক্তির লঙ্ঘন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, “এই ঘাঁটিগুলোর কারণে প্রায় ৬,০০০ হেক্টর (১৪,৮০০ একর) কৃষি জমি ও পশু চারণভূমি এখন কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বহু পরিবার তাদের গবাদিপশুর খাবার এবং জীবিকা হারাচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, ইসরায়েল ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে সিরিয়ার গোলান মালভূমির অধিকাংশ অঞ্চল দখল করে নেয় এবং পরে তা একতরফাভাবে নিজেদের ভূখণ্ড হিসেবে ঘোষণা করে। তবে এখনও পর্যন্ত এই পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় স্বীকৃতি দেয়নি।
মূলত ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়ার ভেতরে ইসরায়েলি হামলা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। আসাদের পতনের পর ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে আহমাদ আল-শারার নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠিত হয়। ওই সময় আনুষ্ঠানিকভাবে বাথ পার্টির পাঁচ দশকের শাসনের অবসান ঘটে এবং রাশিয়ায় পালিয়ে যায় আসাদ পরিবার।
ইসরায়েল শুধু হামলাতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং তারা ১৯৭৪ সালের যুদ্ধবিরতির পর গঠিত ‘বাফার জোন’ বা নিরপেক্ষ অঞ্চলকে কার্যত ‘অকার্যকর’ ঘোষণা করে সেখানে নিজেদের সেনা মোতায়েন এবং নির্মাণ কাজ শুরু করেছে। সূত্র: আল-মায়াদিন, টাইমস অব ইসরায়েল