সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আখতার হোসেনের সঙ্গে দীর্ঘদিন পর দেখা হলো সেই রিকশাচালকের, যিনি একসময় আখতারের সঙ্গেই জেলখানায় ছিলেন। একটি রাজনৈতিক সভার প্যান্ডেলে উপস্থিত হয়ে সেই স্মৃতি মনে করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন দুজনেই।
রিকশাচালক রাজুল ইসলাম বললেন, “ভাইরে, আপনি তো আমার জেলখানার শঙ্খ ছিলেন। আপনার কবিতাগুলার জন্য আমরা ভীষণ ভয় পাইছিলাম। মনে হইছিল আপনারে মাইরাই ফেলে দিবে। সেদিন সবাই চিৎকার করতেছিল—শেখ হাসিনা পালায়া গেছে, পালায়া গেছে!”
আখতার হোসেন তখন বললেন, “জুলাইয়ের সেই অন্ধকার সময়টাতে মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ ছিল না। রিকশাচালক, গার্মেন্টস কর্মী, মাদ্রাসার ছাত্র, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী—সবাই একসাথে দাঁড়িয়েছিল।”
রিকশাচালক রাজুল তখন আবেগময় গলায় বলেন, “ভাইরে, এখন তো আপনি বড় নেতা। আমি গ্যারেজে গাড়ি রেখে, বহুক্ষণ বসে থেকে শুধু আপনার সাথে একটুখানি দেখা করতে আসছি। আপনারা যেন সঠিক রাজনীতি করেন, যেন আমরা আপনাদেরকেও সমালোচনা করতে পারি—এই স্বাধীনতা চাই।”
আখতার হোসেন প্রতিউত্তরে বলেন, “আপনারা আমাদের জন্য দোয়া কইরেন। আমরা চাই—একটা বৈষম্যহীন বাংলাদেশ, যেখানে রিকশাচালক হোক আর সচিব হোক, সবাই মানুষ হিসেবে মর্যাদা পাবে। আমরা চাই না আর কেউ তুই-তোকারির মধ্যে পড়ে থাকুক।”
এসময় তিনি আরও বলেন, “আমাদের রাজনীতি হবে এমন, যেখানে আমরা যদি ভুল করি, তাও যেন মানুষ আমাদের সমালোচনা করতে পারে। পেশিশক্তির এই রাজনীতি থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করাই আমাদের লক্ষ্য।”
রিকশাচালক রাজুল বলেন, “আমি কোনো দলের না। কিন্তু আপনার মতো মানুষ যদি আগায়, তাহলে আমরা সাহস পাই। আপনারা ব্যবসা করছেন না, দেশের জন্য করছেন—এইটা জানি বলেই এতদূর থেকে ছুটে আসছি। ইনশাল্লাহ, দোয়া করি—আপনারা সফল হোন।”
শেষে আখতার হোসেন বলেন, “আমার এই রাজবন্দী ভাইয়ের মতো মানুষদের কারণেই আমরা লড়ছি। এই কষ্টটাকে আমরা সফলতায় পরিণত করবো, ইনশাল্লাহ।”