সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনীতিবিদ গোলাম মাওলা রনি বলেছেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে ‘আওয়ামী লীগ’ নামটি যেন বাংলাদেশের জন্য এক ধরনের ‘প্রাগৈতিহাসিক শব্দে’ পরিণত হয়েছে। তার দাবি, দলটির নাম উচ্চারণ করাও এখন অনেকের কাছে আতঙ্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় গোলাম মাওলা রনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের জীবনচক্র এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা দেখে মনে হয় এটি এখন অতীতের কোনো উপাখ্যান। সভ্যতার ইতিহাসে যেমন প্রাগৈতিহাসিক যুগ ছিল, ঠিক তেমনি আওয়ামী লীগ যেন ইতিহাসের আগের কোনো নাম। এর কোনো অর্জন, গর্ব, চিহ্ন—কিছুই অবশিষ্ট নেই।
গোলাম মাওলা রনি আরও বলেন, ‘আজ কেউ যদি বলেন তার বাবা আওয়ামী লীগ করতেন, তাহলে ছেলে যেন পিতৃপরিচয় ভুলে যেতে চায়। কেউ যদি বলেন, অমুক লোক আওয়ামী লীগ করেন, তাহলে মানুষ যেন পেছনে না তাকিয়ে সরে পড়ে। এ এক সামাজিক আতঙ্কে পরিণত হয়েছে, যেখানে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ—এই শব্দগুলোই মানুষ এড়িয়ে চলে।’
আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্টতা এখন সামাজিক ও অর্থনৈতিক ঝুঁকির কারণ হয়ে উঠেছে বলেও দাবি করেন তিনি। বলেন, ‘বর্তমানে কাউকে যদি আওয়ামী লীগার বলা হয়, তবে তার ঘরবাড়ি, সম্পদ, এমনকি স্ত্রী-সন্তানও ঝুঁকিতে পড়ে। যেন তিনি আর সাধারণ নাগরিক নন, বরং রাষ্ট্রের এক বিপজ্জনক চরিত্র।’
তিনি আওয়ামী লীগকে বর্তমান সময়ের ‘একটি লাশ’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘যেমন শহরে মৃত্যু হলে লাশ কফিনে রেখে ফ্রিজে রাখা হয়, ঠিক তেমনি আওয়ামী লীগ নামক লাশটিকেও এখন জনসমক্ষে রেখে ভয় দেখানো হচ্ছে। যেন মানুষ দলটির নামও মুখে না আনে।’
তবে গোলাম মাওলা রনি একইসঙ্গে প্রশ্ন তোলেন—‘আওয়ামী লীগের কি এখানেই শেষ? নাকি ফিনিক্স পাখির মতো আবার আগুন ছুঁয়ে ফিরে আসবে?’ তার ভাষায়, ‘রাজনীতি যদি আদর্শ, চেতনা ও মূল্যবোধের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে, তবে আওয়ামী লীগের নাম মুছে ফেললেও তা মানুষের স্মৃতি ও ইতিহাস থেকে মুছে যাবে না। হয়তো একদিন “জাগো বাহে” স্লোগানের মধ্য দিয়ে দলটি আবার জেগে উঠবে।’
রনির এই বক্তব্য ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা চলছে। কেউ কেউ একে ‘সরাসরি রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ বলছেন—‘এটি আওয়ামী লীগের ভবিষ্যত নিয়ে এক নির্মম অথচ প্রয়োজনীয় প্রশ্ন।’