ছদ্মবেশ ধারণ করেও বাঁচতে পারেননি ইরানি যে জেনারেল!

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : গত ১২ জুন দিবাগত মধ্যরাতে ইরানে হামলা চালায় ইসরায়েল। দেশটির বিভিন্ন পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি আবাসিক ভবনেও হামলায় ইহুদিবাদী সেনারা। হামলায় টার্গেট করা হয় ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানীদের। এ সময় ইসরায়েলি হামলায় ইরানের বেশ কিছু শীর্ষ জেনারেল নিহত হন। তাদের মধ্যে অন্যতম ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ঘনিষ্ঠ আলী শাদমানি।

 

জানা গেছে, ইসরায়েলের পক্ষ থেকে তাকে হত্যার হুমকি ছিল। তাই সামরিক উর্দি খুলে ছদ্মবেশ ধারণ করেন ইরানি এই শীর্ষ জেনারেল। মোবাইল ফোন তো দূরের কথা; সঙ্গে ছিল না কোনও ইলেকট্রিক ডিভাইস। তবুও ইসরায়েলি হামলা থেকে বাঁচতে পারেননি তিনি।

ইরানের খাতাম আল-আম্বিয়া কেন্দ্রীয় সদর দফতরের কমান্ডার নিযুক্ত আলী শাদমানিকে দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র চার দিন পরেই হত্যা করা হয়। তার পূর্বসূরি গোলাম আলী রশিদও ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন।

 

শাদমানিকে হত্যার পর ইরানজুড়ে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। দাবি করা হয়, হোয়াটসঅ্যাপের ডেটা ফাঁসের মাধ্যমেই শাদমানিকে খুঁজে পায় ইসরায়েল। কিন্তু এক চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন তার মেয়ে।

 

ইসরায়েল তাদের লক্ষ্যবস্তু খুঁজে বের করার জন্য হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করত বলে অভিযোগ ওঠার পর আলী শাদমানির মেয়ে মাহদিহ শাদমানি মুখ খোলেন ।

 

শুক্রবার ইনস্টাগ্রামে তিনি লিখেছেন, আমার বাবার অবস্থান প্রতি কয়েক ঘণ্টা অন্তর পরিবর্তিত হতো। তিনি কোনও স্মার্ট ডিভাইস বা ফোন বহন করতেন না। নিরাপত্তা প্রোটোকল অনুসরণ করা হতো, তবুও যুদ্ধ সদর দফতরের কমান্ডিং করার সময় তাকে ইসরায়েল হত্যার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে সমর্থ হয়।

 

শাদমানির মেয়ে লিখেন, তার বাবা হত্যার সময় ইউনিফর্ম পরিহিত ছিলেন না। সাধারণ, ধুলোমাখা পোশাক পরে সামরিক প্রতীক ছাড়াই অবস্থান করছিলেন। ওই সময় তাকে ট্র্যাক করে হত্যা করা হয়েছিল।

 

ইরানি সামরিক কমান্ডারদের খুঁজে বের করার জন্য ইসরায়েল হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করেছিল বলে অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

 

টানা ১২ দিনের যুদ্ধের সময় ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম নাগরিকদের তাদের স্মার্টফোন থেকে হোয়াটসঅ্যাপ মুছে ফেলার আহ্বান জানিয়েছিল। অভিযোগ করেছিল, অ্যাপটি ইসরায়েলে তথ্য সংগ্রহ করে পাঠায়।

 

হোয়াটসঅ্যাপ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বলেছে, এই ধরনের দাবি ইরানের অভ্যন্তরে ব্যবহারকারীদের পরিষেবা অ্যাক্সেস সীমিত করার অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

 

যুদ্ধের সময় ইসরায়েল ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের বেশ কয়েকজন শীর্ষ কমান্ডারকে হত্যা করে। তাদের মধ্যে রয়েছেন- সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, বিপ্লবী গার্ডের প্রধান হোসেইন সালামি, আইআরজিসি এরোস্পেস ফোর্স কমান্ডার আমির আলী হাজিজাদেহ এবং আইআরজিসি ডেপুটি ফর অপারেশনস মেহেদী রব্বানি প্রমুখ। সূত্র: ইরান ইন্টারন্যাশনাল

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আ.লীগের ব্যবসাগুলো কারা চালায় আমরা জানি: হাসনাত আবদুল্লাহ

» এনসিপি ১০ জনের একটা দল, সেখানেও যৌন হয়রানি: রুমিন ফারহানা

» ‘দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিন’: গয়েশ্বর

» ভারতের মোদিকে কসাই আখ্যা দিলেন হাসনাত আবদুল্লাহ

» রংপুর বিভাগের ৩৩ আসনে জামায়াতের প্রার্থীর চুড়ান্ত তালিকা প্রকাশ

» সংস্কারের নামে নির্বাচন বিলম্বিত করে ক্ষমতায় থাকতে চাওয়া হবে দুঃস্বপ্ন

» আওয়ামী লীগ সারাদেশকেই কারবালার প্রান্তরে পরিণত করেছিল : মির্জা ফখরুল

» পবিত্র আশুরা শোক, শ্রদ্ধা ও আত্মত্যাগের দিন: তারেক রহমান

» পবিত্র আশুরা অবিচারের বিরুদ্ধে সত্য প্রতিষ্ঠায় সাহস জোগাবে : প্রধান উপদেষ্টা

» করোনায় আরও একজনের মৃত্যু, শনাক্ত ৬

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ছদ্মবেশ ধারণ করেও বাঁচতে পারেননি ইরানি যে জেনারেল!

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : গত ১২ জুন দিবাগত মধ্যরাতে ইরানে হামলা চালায় ইসরায়েল। দেশটির বিভিন্ন পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি আবাসিক ভবনেও হামলায় ইহুদিবাদী সেনারা। হামলায় টার্গেট করা হয় ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানীদের। এ সময় ইসরায়েলি হামলায় ইরানের বেশ কিছু শীর্ষ জেনারেল নিহত হন। তাদের মধ্যে অন্যতম ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ঘনিষ্ঠ আলী শাদমানি।

 

জানা গেছে, ইসরায়েলের পক্ষ থেকে তাকে হত্যার হুমকি ছিল। তাই সামরিক উর্দি খুলে ছদ্মবেশ ধারণ করেন ইরানি এই শীর্ষ জেনারেল। মোবাইল ফোন তো দূরের কথা; সঙ্গে ছিল না কোনও ইলেকট্রিক ডিভাইস। তবুও ইসরায়েলি হামলা থেকে বাঁচতে পারেননি তিনি।

ইরানের খাতাম আল-আম্বিয়া কেন্দ্রীয় সদর দফতরের কমান্ডার নিযুক্ত আলী শাদমানিকে দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র চার দিন পরেই হত্যা করা হয়। তার পূর্বসূরি গোলাম আলী রশিদও ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন।

 

শাদমানিকে হত্যার পর ইরানজুড়ে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। দাবি করা হয়, হোয়াটসঅ্যাপের ডেটা ফাঁসের মাধ্যমেই শাদমানিকে খুঁজে পায় ইসরায়েল। কিন্তু এক চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন তার মেয়ে।

 

ইসরায়েল তাদের লক্ষ্যবস্তু খুঁজে বের করার জন্য হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করত বলে অভিযোগ ওঠার পর আলী শাদমানির মেয়ে মাহদিহ শাদমানি মুখ খোলেন ।

 

শুক্রবার ইনস্টাগ্রামে তিনি লিখেছেন, আমার বাবার অবস্থান প্রতি কয়েক ঘণ্টা অন্তর পরিবর্তিত হতো। তিনি কোনও স্মার্ট ডিভাইস বা ফোন বহন করতেন না। নিরাপত্তা প্রোটোকল অনুসরণ করা হতো, তবুও যুদ্ধ সদর দফতরের কমান্ডিং করার সময় তাকে ইসরায়েল হত্যার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে সমর্থ হয়।

 

শাদমানির মেয়ে লিখেন, তার বাবা হত্যার সময় ইউনিফর্ম পরিহিত ছিলেন না। সাধারণ, ধুলোমাখা পোশাক পরে সামরিক প্রতীক ছাড়াই অবস্থান করছিলেন। ওই সময় তাকে ট্র্যাক করে হত্যা করা হয়েছিল।

 

ইরানি সামরিক কমান্ডারদের খুঁজে বের করার জন্য ইসরায়েল হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করেছিল বলে অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

 

টানা ১২ দিনের যুদ্ধের সময় ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম নাগরিকদের তাদের স্মার্টফোন থেকে হোয়াটসঅ্যাপ মুছে ফেলার আহ্বান জানিয়েছিল। অভিযোগ করেছিল, অ্যাপটি ইসরায়েলে তথ্য সংগ্রহ করে পাঠায়।

 

হোয়াটসঅ্যাপ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বলেছে, এই ধরনের দাবি ইরানের অভ্যন্তরে ব্যবহারকারীদের পরিষেবা অ্যাক্সেস সীমিত করার অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

 

যুদ্ধের সময় ইসরায়েল ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের বেশ কয়েকজন শীর্ষ কমান্ডারকে হত্যা করে। তাদের মধ্যে রয়েছেন- সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, বিপ্লবী গার্ডের প্রধান হোসেইন সালামি, আইআরজিসি এরোস্পেস ফোর্স কমান্ডার আমির আলী হাজিজাদেহ এবং আইআরজিসি ডেপুটি ফর অপারেশনস মেহেদী রব্বানি প্রমুখ। সূত্র: ইরান ইন্টারন্যাশনাল

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com