সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : জেডেন সিলস ও শামার জোসেফের আগুনে বোলিংয়ে পুড়লো অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটিং। পরে অস্ট্রেলিয়ান পেসারদের সামনে উড়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজের টপ অর্ডারও।
বুধবার (২৫ জুন) বারবাডোজ টেস্টের প্রথম দিনেই পতন ১৪ উইকেটের। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিনে টসজয়ী অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস শেষ ১৮০ রানেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দিন শেষ করে ৪ উইকেটে ৫৭ রান নিয়ে। এই ম্যাচ দিয়েই আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রে যাত্রা শুরু হলো দুই দলের। ক্যারিবিয়ান টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে যাত্রা শুরু হলো রোস্টন চেইসের।
অস্ট্রেলিয়ান ইনিংসে একমাত্র ফিফটি আসে ট্রাভিস হেডের ব্যাট থেকে। তার সঙ্গে উসমান খাওয়াজার জুটিতে আসে ৮৯ রান। বাকি সব জুটি মিলিয়ে ৯১ রান। দুই ক্যারিবিয়ান পেসার সিলস ও শামার মিলে ভাগাভাগি করেন ৯ উইকেট। ১৯ টেস্টে তৃতীয়বার ৫ উইকেটের স্বাদ পান সিলস।
ক্যারিবিয়ানরা চারটি ক্যাচ না ছাড়লে ৫ উইকেট হতে পারত শামারের, অস্ট্রেলিয়ার অবস্থা হতে পারত আরও নাজুক। অভিষিক্ত ব্র্যান্ডন কিং একাই হাতছাড়া করেন তিনটি সুযোগ। উইকেট শিকারে সিলস এগিয়ে থাকলেও সেরা বোলার ছিলেন নিঃসন্দেহে শামার। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম পাঁচ উইকেটের চারটিই নেন তিনি। তার প্রথম দুই স্পেল ছিল অসাধারণ, ৬-২-১২-২ ও ৫-০-১২-২।
গত বছর অস্ট্রেলিয়া সফরেই অসাধারণ বোলিং করে ক্রিকেটবিশ্বে সাড়া জাগিয়েছিলেন তিনি। বারবাডোজের কেনসিংটন ওভালে টেস্ট ম্যাচ হচ্ছে তিন বছরের বেশি সময় পর। ছয় বছরের মধ্যে এখানে মাত্র দ্বিতীয় টেস্ট এটি। উইকেট নিয়ে তাই কৌতূহল ছিল। উইকেট দেখতে ন্যাড়া হলেও মুভমেন্ট মিলেছে দিনজুড়েই, বাড়তি বাউন্সও মিলেছে মাঝেমধ্যেই।
উইকেট নিতে বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। ম্যাচের চতুর্থ ওভারে ভেতরে ঢোকা বলে একাদশে ফেরা তরুণ ওপেনার স্যাম কনস্টাসকে (৩) ফেরান শামার। তিনে নেমে গ্রিন জীবন পান শূন্য রানে। গালিতে সহজ ক্যাচ ছাড়েন কিং। পরে ৩ রানে গ্রিনকে ফেরান সেই শামারই। স্টিভেন স্মিথের জায়গায় চারে সুযোগ পাওয়া জশ ইংলিস পাল্টা আক্রমণের চেষ্টায় উইকেট হারান সিলসের বলে।
খাওয়াজা জীবন পান ২ রানে। প্রথম বাউন্ডারির জন্য অস্ট্রেলিয়াকে অপেক্ষা করতে হয় ষোড়শ ওভার পর্যন্ত। খাওয়াজা পরে আলজারি জোসেফকে পুল করে ছক্কা মারে, অফ সাইডে দুটি চার মারেন সিলসকে। হেড তার স্বভাবসুলভ আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করেন। অস্ট্রেলিয়াও বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠে অনেকটা। ৩ উইকেটে ২২ রান থেকে দলকে ১১১ রানে পৌঁছে দেয় এই জুটি।
শামার আক্রমণে ফিরে আবার দলেক লড়াইয়ে ফেরান। পুল করার চেষ্টায় আউট হন খাওয়াজা। ২২৮ মিনিট ক্রিজ কাটিয়ে ১২৮ বলে ৪৭ রানে ফেরেন অভিজ্ঞ ওপেনার। পরে দুর্দান্ত ডেলিভারিতে বাউ ওয়েবস্টারকে বোল্ড করেন শামার। সিলসের বলে চেইসের দুর্দান্ত ক্যাচের শিকার হন অ্যালেক্স কেয়ারি। বড় বাধা হয়ে থাকা হেডকে (৫৯) বিদায় করেন অলরাউন্ডার জাস্টিন গ্রেভস।
শেষ দিকে অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ১৮ বলে ২৮ রান করে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। শেষ তিন উইকেট নিয়ে সিলস পূরণ করেন ৫ উইকেট। ৬৯ রানের মধ্যে শেষ ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮০ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ওয়েস্ট ইন্ডিজে আগে ব্যাটিং বেছে নিয়ে তাদের সর্বনিম্ন স্কোর এটিই।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের সাফল্য ধরে রাখতে পারেননি ব্যাটাররা। দুই ওপেনার ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ও জন ক্যাম্পবেলকে দ্রুত বিদায় করেন মিচেল স্টার্ক। কেসি কার্টি ও ব্র্যান্ডন কিং চেষ্টা করেন প্রতিরোধের। কার্টিকে ২০ রানে ফিরিয়ে তা ভেঙে দেন কামিন্স। নাইটওয়াচম্যান জোমেল ওয়ারিক্যানকে বিদায় করেন জশ হেইজেলউড। অভিষেকের দিনে ফিল্ডিংয়ে দুঃস্বপ্নের পর ব্যাটিংয়ে লড়াই করে অপরাজিত রয়ে যান কিং।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ৫৬.৫ ওভারে ১৮০ (কনস্টাস ৩, খাওয়াজা ৪৭, গ্রিন ৩, ইংলিস ৫, হেড ৫৯, ওয়েবস্টার ১১, কেয়ারি ৮, কামিন্স ২৮, স্টার্ক ০, লায়ন ৯*, হেইজেলউড ৪, সিলস ১৫.৫-১-৬০-৫, শামার ১৬-৩-৪৬-৪, আলজারি ১২-৩-৩৭-০, চেইস ৪-০-৯-০, গ্রেভস ৯-২-২৬-১)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ২০ ওভারে ৫৭/৪ (ব্র্যাথওয়েট ৪, ক্যাম্পবেল ৭, কার্টি ২০, কিং ২৩*, ওয়ারিক্যান ০, চেইস ১*; স্টার্ক ৭-১-৩৫-২, হেইজেলউড ৭-১-১৩-১, কামিন্স ৬-২-৮-১)।