শিশুদের প্রযুক্তির নিরাপদ ব্যবহার শেখাবেন যেভাবে

সংগৃহীত ছবি

 

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক : এখন প্রযুক্তি শিশুর জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ কিংবা ইন্টারনেট, এসবের সংস্পর্শে শিশুরা অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। অনলাইন ক্লাস, কার্টুন দেখা, গেম খেলা, ইউটিউব দেখা, সব কিছুতেই প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। তবে এই সুযোগের পাশাপাশি রয়েছে নানা ধরনের ঝুঁকি। অনুপযুক্ত কনটেন্ট, স্ক্রিন অ্যাডিকশন, সাইবারবুলিং, কিংবা গোপনীয়তার লঙ্ঘনের মতো সমস্যাও বেড়েছে। তাই সময় এসেছে অভিভাবকদের আরও সচেতন হওয়ার। নিচে কিছু উপায় তুলে ধরা হলো যেভাবে আপনি শিশুদের প্রযুক্তি ব্যবহারকে নিরাপদ রাখতে পারেন-

১. সময়সীমা নির্ধারণ করুন

প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য শিশুদের জন্য প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ৫ বছরের নিচের শিশুদের জন্য স্ক্রিন টাইম দিনে ১ ঘণ্টার বেশি হওয়া উচিত নয়। বড় শিশুদের জন্যও নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম সীমিত করতে হবে।

 

২. বয়স উপযোগী কনটেন্ট নির্বাচন করুন

শিশুরা কী দেখছে বা পড়ছে, তা মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করুন। ইউটিউব কিডস, নেটফ্লিক্স কিডস বা অন্য শিশুদের উপযোগী অ্যাপস ব্যবহার করান। গেম ও ভিডিও বাছাইয়ে পিইজিআই বা ইএসআরবি রেটিং অনুসরণ করুন।

৩. প্যারেন্টাল কন্ট্রোল ব্যবহার করুন

প্রায় সব স্মার্টফোন, ট্যাব বা ল্যাপটপেই প্যারেন্টাল কন্ট্রোল ফিচার থাকে। এর মাধ্যমে আপনি নির্দিষ্ট অ্যাপ বা ওয়েবসাইট ব্লক করতে পারবেন, স্ক্রিন টাইম নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন এবং শিশুর অনলাইন কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।

 

৪. স্ক্রিন টাইমে বিরতি রাখুন

টানা স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকা চোখের জন্য ক্ষতিকর। শিশুদের প্রতিদিনের স্ক্রিন টাইমে ২০-৩০ মিনিট পরপর বিরতি নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। তাদের বাইরে খেলা, বই পড়া কিংবা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে উৎসাহিত করুন।

 

৫. গোপনীয়তা সম্পর্কে শিক্ষা দিন

শিশুকে শেখান কখনোই যেন তারা তাদের নাম, ঠিকানা, স্কুলের নাম, ছবি বা অন্য কোনো ব্যক্তিগত তথ্য অনলাইনে না দেয়। এটি তাদের সাইবার ঝুঁকি থেকে রক্ষা করবে।

৬. নিজে উদাহরণ হয়ে উঠুন

আপনি যদি সারাক্ষণ ফোন বা ট্যাবলেট নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, তাহলে সন্তানও তাই করবে। নিজের স্ক্রিন টাইমও নিয়ন্ত্রণ করুন এবং একসঙ্গে ‘নো স্ক্রিন টাইম’ পারিবারিক সময় গড়ে তুলুন।

৭. অনলাইনে কী করছে তা নিয়ে আগ্রহ দেখান

শিশু কী গেম খেলছে, কী ভিডিও দেখছে তা জেনে নিন এবং তার সঙ্গে আলোচনা করুন। এতে শিশু খোলামেলা থাকবে এবং বিপদে পড়লে সহজে আপনার কাছে আসবে।

৮. প্রযুক্তিকে শত্রু নয়, সহযোগী হিসেবে নিন

শুধু নিষেধ বা নিয়ন্ত্রণ না করে, শিশুদের সঙ্গে বসে মজার শিক্ষামূলক ভিডিও দেখুন, গুগল আর্টস, ডুডল গেমস বা বিজ্ঞানভিত্তিক অ্যাপ ব্যবহার করে তাদের আগ্রহী করে তুলুন। এতে তারা প্রযুক্তি ব্যবহার শিখবে ইতিবাচকভাবে।

 

প্রযুক্তিকে পুরোপুরি বাদ দেওয়া সম্ভব নয়, বরং শিশুদের সঙ্গে সময় নিয়ে এর নিরাপদ ব্যবহার শেখানোই বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জ। সচেতন অভিভাবক হিসেবে আপনি যদি সময় দেন, গাইড করেন ।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহার আটক

» খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিদায়ী জার্মান রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

» যুবককে গুলি করে হত্যা

» নির্বাচনের কথা বললেই আপনারা গোসসা করেন: সরকারকে আলাল

» গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : মির্জা ফখরুল

» ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বৈঠক

» সমুদ্রসীমার পরিপূর্ণ হাইড্রোগ্রাফিক তথ্যভাণ্ডার গড়ে তুলতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা

» বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ১৮ জন গ্রেফতার

» ইরানের সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে আহত ১৭

» আবারও ইসরায়েলকে ‘কালো তালিকায়’ অন্তর্ভুক্ত করেছে জাতিসংঘ

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

শিশুদের প্রযুক্তির নিরাপদ ব্যবহার শেখাবেন যেভাবে

সংগৃহীত ছবি

 

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক : এখন প্রযুক্তি শিশুর জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ কিংবা ইন্টারনেট, এসবের সংস্পর্শে শিশুরা অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। অনলাইন ক্লাস, কার্টুন দেখা, গেম খেলা, ইউটিউব দেখা, সব কিছুতেই প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। তবে এই সুযোগের পাশাপাশি রয়েছে নানা ধরনের ঝুঁকি। অনুপযুক্ত কনটেন্ট, স্ক্রিন অ্যাডিকশন, সাইবারবুলিং, কিংবা গোপনীয়তার লঙ্ঘনের মতো সমস্যাও বেড়েছে। তাই সময় এসেছে অভিভাবকদের আরও সচেতন হওয়ার। নিচে কিছু উপায় তুলে ধরা হলো যেভাবে আপনি শিশুদের প্রযুক্তি ব্যবহারকে নিরাপদ রাখতে পারেন-

১. সময়সীমা নির্ধারণ করুন

প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য শিশুদের জন্য প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ৫ বছরের নিচের শিশুদের জন্য স্ক্রিন টাইম দিনে ১ ঘণ্টার বেশি হওয়া উচিত নয়। বড় শিশুদের জন্যও নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম সীমিত করতে হবে।

 

২. বয়স উপযোগী কনটেন্ট নির্বাচন করুন

শিশুরা কী দেখছে বা পড়ছে, তা মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করুন। ইউটিউব কিডস, নেটফ্লিক্স কিডস বা অন্য শিশুদের উপযোগী অ্যাপস ব্যবহার করান। গেম ও ভিডিও বাছাইয়ে পিইজিআই বা ইএসআরবি রেটিং অনুসরণ করুন।

৩. প্যারেন্টাল কন্ট্রোল ব্যবহার করুন

প্রায় সব স্মার্টফোন, ট্যাব বা ল্যাপটপেই প্যারেন্টাল কন্ট্রোল ফিচার থাকে। এর মাধ্যমে আপনি নির্দিষ্ট অ্যাপ বা ওয়েবসাইট ব্লক করতে পারবেন, স্ক্রিন টাইম নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন এবং শিশুর অনলাইন কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।

 

৪. স্ক্রিন টাইমে বিরতি রাখুন

টানা স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকা চোখের জন্য ক্ষতিকর। শিশুদের প্রতিদিনের স্ক্রিন টাইমে ২০-৩০ মিনিট পরপর বিরতি নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। তাদের বাইরে খেলা, বই পড়া কিংবা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে উৎসাহিত করুন।

 

৫. গোপনীয়তা সম্পর্কে শিক্ষা দিন

শিশুকে শেখান কখনোই যেন তারা তাদের নাম, ঠিকানা, স্কুলের নাম, ছবি বা অন্য কোনো ব্যক্তিগত তথ্য অনলাইনে না দেয়। এটি তাদের সাইবার ঝুঁকি থেকে রক্ষা করবে।

৬. নিজে উদাহরণ হয়ে উঠুন

আপনি যদি সারাক্ষণ ফোন বা ট্যাবলেট নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, তাহলে সন্তানও তাই করবে। নিজের স্ক্রিন টাইমও নিয়ন্ত্রণ করুন এবং একসঙ্গে ‘নো স্ক্রিন টাইম’ পারিবারিক সময় গড়ে তুলুন।

৭. অনলাইনে কী করছে তা নিয়ে আগ্রহ দেখান

শিশু কী গেম খেলছে, কী ভিডিও দেখছে তা জেনে নিন এবং তার সঙ্গে আলোচনা করুন। এতে শিশু খোলামেলা থাকবে এবং বিপদে পড়লে সহজে আপনার কাছে আসবে।

৮. প্রযুক্তিকে শত্রু নয়, সহযোগী হিসেবে নিন

শুধু নিষেধ বা নিয়ন্ত্রণ না করে, শিশুদের সঙ্গে বসে মজার শিক্ষামূলক ভিডিও দেখুন, গুগল আর্টস, ডুডল গেমস বা বিজ্ঞানভিত্তিক অ্যাপ ব্যবহার করে তাদের আগ্রহী করে তুলুন। এতে তারা প্রযুক্তি ব্যবহার শিখবে ইতিবাচকভাবে।

 

প্রযুক্তিকে পুরোপুরি বাদ দেওয়া সম্ভব নয়, বরং শিশুদের সঙ্গে সময় নিয়ে এর নিরাপদ ব্যবহার শেখানোই বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জ। সচেতন অভিভাবক হিসেবে আপনি যদি সময় দেন, গাইড করেন ।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com