সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : আওয়ামী লীগ ভোট কারচুপি করে টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় ছিল দাবি করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তার দল আওয়ামী লীগের মতো ভোট কারচুপি এবং আইন ভঙ্গ করবে না। তিনি বলেন, বিএনপি জনগণের অধিকার হরণ করে নয়, বরং বিনয়ী হয়ে ভোট চাইবে।
বুধবার (১৮ জুন) দুপুরে রাজধানীর উত্তরায় বিএনপির সদস্য নবায়ন এবং প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ অভিযান কর্মসূচির ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সময় ভোটকেন্দ্রে কেউ যেতে পারেনি। ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আগেই তার ভোট দেওয়া হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমরা এটি চাই না। আমরা নির্বাচনের সময় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার চেয়েছিলাম, যাতে সবাই তার নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।
ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও একই কথা বলেছেন যে, মানুষকে শাসিয়ে বা তাদের অধিকার হরণ করে ভোট পাওয়া যাবে না; বরং বিনয়ী হয়ে ভোট চাইতে হবে।
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘একটি ফ্যাসিবাদী সরকার গত ১৫ বছর ধরে আমাদের সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করেছে। নির্বাচনব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে এবং প্রশাসনকে দলীয়করণ করেছে।
ফখরুল বলেন, ‘এই ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ যা করেছে আমরা এসব কিছুই করব না। আওয়ামী লীগের পরিণতি থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। আমরা যেন সবার অধিকার রক্ষা করতে পারি।’
অনুষ্ঠানে তারেক রহমানের বিচক্ষণতার প্রশংসা ও ড. ইউনূসের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে লন্ডনের বৈঠককে ‘ঐতিহাসিক’ বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। বলেন, ‘আমরা ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা বলেছিলাম, আর ইউনূস সাহেব বলেছিলেন এপ্রিলে। এখানে এক প্রকার দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছিল। কিন্তু তারেক রহমানের বিচক্ষণতা দেখেন, তিনি দেশের স্বার্থে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছেন, যাতে কোনো বিপদ না আসে। এমন বিচক্ষণ নেতা খুব কমই আছে। তাই তারেক রহমান ও ড. ইউনূসকে এজন্য ধন্যবাদ জানাই।’
গতকাল জামায়াতে ইসলামীর ঐক্যমত কমিশনে অনুপস্থিতির প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এত কিছুর পরও অনেকের মন ভালো নেই, যে কারণে গতকাল তারা আসেইনি।
এনসিপির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন হয়নি বলে একটি দলের গুরুত্ব আছে। নির্বাচন হলে জনগণের কাছে তাদের গুরুত্ব থাকবে না। তাই ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক তারা পছন্দ করছে না।
অনুষ্ঠানে নিজের বয়স এবং দলের তরুণ নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের বয়স হয়েছে। যে কারণে বক্তব্য শুরু করতে আমার সময় লেগেছে। তার মানে আমাদের বয়স হওয়ায় কর্মক্ষমতা কমে গেছে। তাই আমাদের জায়গায় তরুণদের আসতে হবে, তাদের সুযোগ করে দিতে হবে। তরুণদের নেতৃত্বকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকতে হবে।
সদস্য নবায়ন কর্মসূচিতে মির্জা ফখরুল সতর্ক করে বলেন, ‘আজকে যে সদস্য নবায়ন করা হচ্ছে সেখানে যেন কোনো আওয়ামী লীগ না থাকে। কারণ এটা পরীক্ষিত, আওয়ামী লীগের কেউই ভালো না। আওয়ামী লীগ নিজের স্বার্থ ছাড়া আর কারো স্বার্থ দেখতে পারে না। তাই তাদের কাউকে দলে নেওয়া যাবে না। তবে নিরপেক্ষ কেউ থাকলে তাকে অবশ্যই দলে আসার জন্য আহ্বান জানানো হবে।
তুরাগ থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হারুন অর রশীদ খোকনের সভাপতিত্বে ও থানার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হাজী মো. জহিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক। প্রধান বক্তার বক্তব্য দেন বিএনপি ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব মো. মোস্তফা জামান।