হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল থেকেই মিলবে বিদ্যুৎ

যুগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গোটা পৃথিবী জুড়ে বাড়ছে জ্বালানির চাহিদা। তার সঙ্গে মাত্রা ছাড়া পরিবেশ দূষণ। এই দুইয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে আধুনিক বিজ্ঞানের অন্যতম আবিষ্কার হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল। যাকে দহন করে সহজেই মিলবে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি। ফলে সাড়া পৃথিবীর একমাত্র ভরসা প্রকৃতির জীবাশ্ম জ্বালানি যেমন সাশ্রয় হবে তার সঙ্গে এই পৃথিবীর মাটি হয়ে উঠবে পরিবেশবান্ধব।

 

আধুনিক বিজ্ঞানের জয়যাত্রা ক্রমেই এগিয়ে চলেছে। সৃষ্টির আদিকাল থেকে বিজ্ঞানীরা তাদের নিত্যনতুন আবিষ্কারের খোঁজে অন্বেষণ চালিয়ে যাচ্ছেন নিরন্তর। সব কিছু ঠিক থাকলে এবার সেই তালিকায় যোগ হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল। শুরু হয়েছে আধুনিক বিজ্ঞানের যুগান্তর সৃষ্টিকারী আবিষ্কার হাইড্রোজেন ফুয়েল সেলকে ব্যবহার করে জ্বালানির উৎপাদন ।

 

মূলত জীবাশ্ম জ্বালানির কারণে পৃথিবীর আবহাওয়া ক্রমশ রুক্ষ হয়ে উঠছে। কীভাবে জীবাশ্ম জালানি যেমন কয়লা, পেট্রোলিয়ামের ব্যবহার রুখে দিয়ে পৃথিবীকে পরিবেশবান্ধব রূপে গড়ে তোলা যায় তাই নিয়ে প্রতিনিয়ত চলছে গবেষণা।

 

গবেষকদের দাবি হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল হল একটি হাইড্রোজেন গ্যাস সমৃদ্ধ ফুয়েল অর্থাৎ জ্বালানি কোষ। এই কোষটিকে দহন করলে তার মধ্যে অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন অনু পুড়ে গিয়ে প্রচুর পরিমাণ বিদ্যুৎ, তাপ এবং জল উৎপন্ন করে। উৎপন্ন হওয়া বিদ্যুৎ ব্যাটারিতে সঞ্চয় করলে তার থেকে যে শক্তি পাওয়া যাবে তা দিয়ে অতি সহজেই চলবে গাড়ি। এমনকী বিভিন্ন বৈদ্যুতিক সংস্থায় পাওয়ার গ্রিডের মাধ্যমে ওই বিদ্যুৎ ব্যবহার করা যাবে সহজেই। পাশাপাশি রান্নার গ্যাসের জন্য জ্বালানি হিসাবে হাইড্রোজেন ফুয়েল সেলের ব্যবহার করা যাবে বলে দাবি গবেষকদের।

 

গবেষকরা জানিয়েছেন মূলত একটি ফুয়েল সেল অর্থাৎ কোষ ফুয়েল সেল স্কেলের ওপর কাজ করে। যার প্রধান কাজ রাসায়নিক শক্তিকে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তর ঘটানো। ওই স্কেলে হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন ইনপুট হিসাবে ব্যবহার করে তার থেকে তড়িৎ কোষ উৎপন্ন হয়। ওই তড়িৎ কোষগুলি ব্যাটারিতে সঞ্চয় করলে তা থেকে প্রয়োজন মতো বিদ্যুৎ মিলবে সহজেই।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, যে কোনও গাড়ির ব্যাটারি মূলত বড় আকারের হয়। কিন্তু হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ অনেক ছোট মাপের ব্যাটারিতে সঞ্চয় করা যাবে। একবার ওই ব্যাটারি চার্জ করলেই ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত গড়াতে পারবে আমাদের সাধের গাড়ি। এ বিষয়ে বিশ্বের একাধিক উন্নতশীল দেশ ইতিমধ্যেই কয়েকধাপ এগিয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি আমাদের দেশেও এই হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল ব্যবহার করে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি উৎপাদনের পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে পুরোমাত্রায়।

তবে এ বিষয়ে একধাপ এগিয়ে রয়েছে দেশের অন্যতম গাড়ি প্রস্তুর কারী সংস্থা টাটা মোটরস। টাটা মোটরস দেশের মধ্যে প্রথম ২০১২ সালে একটি হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল চালিত বাসের একটি প্রাথমিক প্রোটোটাইপ প্রদর্শন করেন।

 

সম্প্রতি হাইড্রোজন জ্বালানি দ্বারা চালিত টয়োটা মিরাই ভারতে প্রথম ইলেকট্রিক গাড়ির আগমন হয়। টয়োটা মিরাই মুক্তি দেবে দূষণ থেকে। গাড়িটি সম্পূর্ণভাবে হাইড্রোজেন জেনারেটেড ইলেকট্রিসিটি দ্বারা চালিত হবে। শূন্য কার্বন নির্গমণ করতে সক্ষম এই টয়োটা মিরাই। যার ফলে কোনও দূষণ হবে না। মাত্র কয়েক ফোঁটা পানি বর্জ্য হিসেবে নির্গত হবে। একটা ইলেকট্রিক গাড়ি চার্জ হতে যেখানে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা সময় নেয়, ঠিক সেখানেই হাইড্রোজেন ফুয়েল দ্বারা চালিত এই টয়োটা মিরাই মাত্র ৫ মিনিটেই হাইড্রোজেন রিফিল করবে।   সূএ:ঢাকাটাইমস

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল বৃদ্ধের

» আওয়ামী লীগের শ্রমিক সমাবেশে নেতাকর্মীদের ঢল

» বঙ্গবন্ধু সব সময় বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন : খাদ্যমন্ত্রী

» ট্রাকচাপায় প্রকৌশলী নিহত

» অপহরণকারী চক্রের সদস্য সিরাজকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার

» কেনিয়ায় বৃষ্টি-বন্যায় নিহত বেড়ে ১৬৯

» বিশেষ অভিযান চালিয়ে মাদকবিরোধী অভিযানে বিক্রি ও সেবনের অপরাধে ২১জন গ্রেপ্তার

» নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্য শ্রমিক ও জনগণের জন্য অভিশাপ : ইনু

» শেখ হাসিনার অধীনে কেয়ামত পর্যন্ত সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না : রিজভী

» যতবার সরকারে এসেছি ততবার শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়েছি

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল থেকেই মিলবে বিদ্যুৎ

যুগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গোটা পৃথিবী জুড়ে বাড়ছে জ্বালানির চাহিদা। তার সঙ্গে মাত্রা ছাড়া পরিবেশ দূষণ। এই দুইয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে আধুনিক বিজ্ঞানের অন্যতম আবিষ্কার হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল। যাকে দহন করে সহজেই মিলবে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি। ফলে সাড়া পৃথিবীর একমাত্র ভরসা প্রকৃতির জীবাশ্ম জ্বালানি যেমন সাশ্রয় হবে তার সঙ্গে এই পৃথিবীর মাটি হয়ে উঠবে পরিবেশবান্ধব।

 

আধুনিক বিজ্ঞানের জয়যাত্রা ক্রমেই এগিয়ে চলেছে। সৃষ্টির আদিকাল থেকে বিজ্ঞানীরা তাদের নিত্যনতুন আবিষ্কারের খোঁজে অন্বেষণ চালিয়ে যাচ্ছেন নিরন্তর। সব কিছু ঠিক থাকলে এবার সেই তালিকায় যোগ হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল। শুরু হয়েছে আধুনিক বিজ্ঞানের যুগান্তর সৃষ্টিকারী আবিষ্কার হাইড্রোজেন ফুয়েল সেলকে ব্যবহার করে জ্বালানির উৎপাদন ।

 

মূলত জীবাশ্ম জ্বালানির কারণে পৃথিবীর আবহাওয়া ক্রমশ রুক্ষ হয়ে উঠছে। কীভাবে জীবাশ্ম জালানি যেমন কয়লা, পেট্রোলিয়ামের ব্যবহার রুখে দিয়ে পৃথিবীকে পরিবেশবান্ধব রূপে গড়ে তোলা যায় তাই নিয়ে প্রতিনিয়ত চলছে গবেষণা।

 

গবেষকদের দাবি হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল হল একটি হাইড্রোজেন গ্যাস সমৃদ্ধ ফুয়েল অর্থাৎ জ্বালানি কোষ। এই কোষটিকে দহন করলে তার মধ্যে অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন অনু পুড়ে গিয়ে প্রচুর পরিমাণ বিদ্যুৎ, তাপ এবং জল উৎপন্ন করে। উৎপন্ন হওয়া বিদ্যুৎ ব্যাটারিতে সঞ্চয় করলে তার থেকে যে শক্তি পাওয়া যাবে তা দিয়ে অতি সহজেই চলবে গাড়ি। এমনকী বিভিন্ন বৈদ্যুতিক সংস্থায় পাওয়ার গ্রিডের মাধ্যমে ওই বিদ্যুৎ ব্যবহার করা যাবে সহজেই। পাশাপাশি রান্নার গ্যাসের জন্য জ্বালানি হিসাবে হাইড্রোজেন ফুয়েল সেলের ব্যবহার করা যাবে বলে দাবি গবেষকদের।

 

গবেষকরা জানিয়েছেন মূলত একটি ফুয়েল সেল অর্থাৎ কোষ ফুয়েল সেল স্কেলের ওপর কাজ করে। যার প্রধান কাজ রাসায়নিক শক্তিকে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তর ঘটানো। ওই স্কেলে হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন ইনপুট হিসাবে ব্যবহার করে তার থেকে তড়িৎ কোষ উৎপন্ন হয়। ওই তড়িৎ কোষগুলি ব্যাটারিতে সঞ্চয় করলে তা থেকে প্রয়োজন মতো বিদ্যুৎ মিলবে সহজেই।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, যে কোনও গাড়ির ব্যাটারি মূলত বড় আকারের হয়। কিন্তু হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ অনেক ছোট মাপের ব্যাটারিতে সঞ্চয় করা যাবে। একবার ওই ব্যাটারি চার্জ করলেই ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত গড়াতে পারবে আমাদের সাধের গাড়ি। এ বিষয়ে বিশ্বের একাধিক উন্নতশীল দেশ ইতিমধ্যেই কয়েকধাপ এগিয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি আমাদের দেশেও এই হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল ব্যবহার করে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি উৎপাদনের পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে পুরোমাত্রায়।

তবে এ বিষয়ে একধাপ এগিয়ে রয়েছে দেশের অন্যতম গাড়ি প্রস্তুর কারী সংস্থা টাটা মোটরস। টাটা মোটরস দেশের মধ্যে প্রথম ২০১২ সালে একটি হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল চালিত বাসের একটি প্রাথমিক প্রোটোটাইপ প্রদর্শন করেন।

 

সম্প্রতি হাইড্রোজন জ্বালানি দ্বারা চালিত টয়োটা মিরাই ভারতে প্রথম ইলেকট্রিক গাড়ির আগমন হয়। টয়োটা মিরাই মুক্তি দেবে দূষণ থেকে। গাড়িটি সম্পূর্ণভাবে হাইড্রোজেন জেনারেটেড ইলেকট্রিসিটি দ্বারা চালিত হবে। শূন্য কার্বন নির্গমণ করতে সক্ষম এই টয়োটা মিরাই। যার ফলে কোনও দূষণ হবে না। মাত্র কয়েক ফোঁটা পানি বর্জ্য হিসেবে নির্গত হবে। একটা ইলেকট্রিক গাড়ি চার্জ হতে যেখানে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা সময় নেয়, ঠিক সেখানেই হাইড্রোজেন ফুয়েল দ্বারা চালিত এই টয়োটা মিরাই মাত্র ৫ মিনিটেই হাইড্রোজেন রিফিল করবে।   সূএ:ঢাকাটাইমস

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com