ফাইল ফটো
অনলাইন ডেস্ক : মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় খালাস পাওয়া জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের রায় নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
আজ মঙ্গলবার দুপুরের পর এক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, ‘মৃত্যুদণ্ডের আদেশপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহার আজকে মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি পেয়েছেন।’
আওয়ামী দুঃশাসনের শিকার, মিথ্যা মামলায় জীবন হারানো এমন কিছু মানুষকে আজ মনে পড়ছে উল্লেখ করে সারজিস আলম বলেন, ‘হয়তো সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী কিংবা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী আমাদের মাঝে আজ এভাবেই ফিরে আসতে পারতেন! ফিরে আসতে পারতেন নাম না জানা গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হওয়া হাজাররো আমাদের ভাই-বোন।’
তিনি লিভেন, ‘কিন্তু সেই সুযোগ আর নেই। আমাদের যাদের সুযোগ হয়েছে এই মা, মাটি ও দেশের জন্য কিছু করার, তারা যেন সৌভাগ্যক্রমে পাওয়া এই সুযোগ এবং আমানতের খেয়ানত না করি।’ এর আগে, আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাসের রায় ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, গত ৮ মে সকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের আপিলের ওপর দ্বিতীয় দিনের শুনানি শুরু হয়। ০৬ মে হয় প্রথম দিনের শুনানি। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে গণহত্যা-হত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, আটক, নির্যাতন ও গুরুতর জখম এবং বাড়িঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মতো নয় ধরনের ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছিল এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে।
২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ে দুই নম্বর, তিন নম্বর এবং চার নম্বর অভিযোগে ফাঁসির দণ্ডাদেশ পান জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আজহারুল ইসলাম।
এছাড়া পাঁচ নম্বর অভিযোগে অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অমানবিক অপরাধের দায়ে ২৫ বছর ও ছয় নম্বর অভিযোগে নির্যাতনের দায়ে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে শুনানির পর ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। আপিল বিভাগের রায়ে ২, ৩, ৪ (সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে) ও ছয় নম্বর অভিযোগের দণ্ড বহাল রাখা হয়। আর পাঁচ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেওয়া হয়।
২০২০ সালের ১৫ মার্চ আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। ওই রায়ের রিভিউ চেয়ে ২০২০ সালের ১৯ জুলাই আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট আবেদন করেছিলেন এটিএম আজহারুল ইসলাম। ২৩ পৃষ্ঠার পুনর্বিবেচনার এ আবেদনে মোট ১৪টি যুক্তি উপস্থাপন করা হয়।
ওই পুনর্বিবেচনার আবেদনের শুনানি শেষে ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে এটিএম আজহারুল ইসলামকে আপিলের অনুমতি দেন। এরপর তিনি আপিল করেন।