আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ভূমি ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক সংস্কার এনেছে সরকার : প্রধান উপদেষ্টা

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জনবান্ধব ও দুর্নীতিমুক্ত ভূমি সেবা নিশ্চিত করতে সরকার আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ভূমি ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক সংস্কার এনেছে। রোববার দেশব্যাপী আয়োজিত তিনদিনব্যাপী ভূমি মেলা ২০২৫-এর উদ্বোধন উপলক্ষে তিনি এসব কথা বলেন।

 

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি হওয়ায় মাথাপিছু জমির পরিমাণ খুবই কম। এ কারণে জমির গুরুত্ব এবং জমি নিয়ে বিরোধও অনেক বেশি। ফলে ভূমির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা আমাদের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশের জন্য অত্যন্ত জরুরি।” তিনি জানান, সরকার নাগরিকদের হয়রানিমুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত সেবা দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নির্ভুল ভূমি রেকর্ড প্রস্তুতের কাজ শুরু হয়েছে এবং ভূমি ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটালাইজ করে জনবান্ধব করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

 

ড. ইউনূস বলেন, “বর্তমানে জমির খাজনা প্রদান, নামজারি, জমাখারিজ, খতিয়ান বা পর্চার সার্টিফায়েড কপি এবং মৌজা ম্যাপ অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে। এখন ভূমি অফিসে সরাসরি না গিয়ে ঘরে বসেই সেবা নেওয়া যাচ্ছে।” তিনি জানান, ভূমিসেবা সহায়ক নির্দেশিকা ২০২৫-এর আওতায় ঢাকা মহানগরে পরীক্ষামূলকভাবে পাঁচটি ভূমিসেবা সহায়তা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। আগামী জুন মাসের মধ্যে অন্যান্য বিভাগীয় শহরে এবং পরবর্তীতে সারাদেশে এ ধরনের কেন্দ্র চালু করা হবে। নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে ভূমি মালিকরা এসব কেন্দ্র থেকে সহজেই ডিজিটাল সেবার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

 

এছাড়াও, দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের কল সেন্টারে ফোন করে পরামর্শ ও অভিযোগ জানানো যাচ্ছে। জটিল সমস্যা সমাধানে বিশেষজ্ঞরাও সেবায় নিয়োজিত আছেন।

 

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “ভূমি মেলার মাধ্যমে সেবাদাতা ও সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন হবে এবং জনসচেতনতা বাড়বে। সরকারের ভূমিসেবা ও পদক্ষেপ সম্পর্কে দেশব্যাপী জনগণের মাঝে তুলে ধরতে এ ধরনের মেলার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

 

তিনি আরও বলেন, “২০২৪-২৫ অর্থবছর প্রায় শেষের পথে। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার নামে থাকা জমির ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান করার জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। ওয়েবসাইটে লগইন করে ঘরে বসেই ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করে দাখিলা সংগ্রহ করা সম্ভব।

 

ড. ইউনূস বলেন, “ভূমি সেবায় ডিজিটাল পদ্ধতি ভোগান্তি, অস্বচ্ছতা ও দুর্নীতি কমাতে সহায়ক হবে। সব ধরনের নাগরিক সেবাকে আরও জনবান্ধব করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” তিনি জানান, সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে ধাপে ধাপে সেবাদানকারী দায়িত্ব ব্যক্তিগত বা বেসরকারি উদ্যোক্তাদের কাছে হস্তান্তর করা, যাতে গ্রামের শিক্ষিত তরুণ-তরুণী ও গৃহিণীরাও ঘরে বসেই দেশব্যাপী ভূমি সেবা দিতে পারেন।

 

সবশেষে প্রধান উপদেষ্টা ভূমি মেলা ২০২৫-এর সফলতা কামনা করেন এবং মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» সাফে শ্রীলঙ্কাকে ৯ গোলে বিধ্বস্ত করলো বাংলাদেশ

» বিএনপি দেশে দ্রুত গণতান্ত্রিক উত্তরণ চায় : গয়েশ্বর

» আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদকে অপবিত্র করেছে : আলাল

» কাতারের মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানি হামলা, স্যাটেলাইট চিত্রে যা দেখা গেলো

» ১১ জুলাইকে ‘প্রথম প্রতিরোধ দিবস’ ঘোষণা উপদেষ্টা আসিফের

» তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জয়পুরহাটে বিএনপি নেতা ফয়সল আলীমের গণসংযোগ  

» বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলের বসতবাড়ি থেকে ৬ ফুট লম্বা পদ্মগোখরা উদ্ধার, এলাকায় চাঞ্চল্য

» মোরেলগঞ্জে তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসএসসি সমমান পরীক্ষায় শতভাগ ফেল

» দুর্বৃত্তদের গুলিতে যুবদল নেতা নিহত

» ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুল শিক্ষিকা নিহত

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ভূমি ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক সংস্কার এনেছে সরকার : প্রধান উপদেষ্টা

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জনবান্ধব ও দুর্নীতিমুক্ত ভূমি সেবা নিশ্চিত করতে সরকার আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ভূমি ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক সংস্কার এনেছে। রোববার দেশব্যাপী আয়োজিত তিনদিনব্যাপী ভূমি মেলা ২০২৫-এর উদ্বোধন উপলক্ষে তিনি এসব কথা বলেন।

 

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি হওয়ায় মাথাপিছু জমির পরিমাণ খুবই কম। এ কারণে জমির গুরুত্ব এবং জমি নিয়ে বিরোধও অনেক বেশি। ফলে ভূমির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা আমাদের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশের জন্য অত্যন্ত জরুরি।” তিনি জানান, সরকার নাগরিকদের হয়রানিমুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত সেবা দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নির্ভুল ভূমি রেকর্ড প্রস্তুতের কাজ শুরু হয়েছে এবং ভূমি ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটালাইজ করে জনবান্ধব করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

 

ড. ইউনূস বলেন, “বর্তমানে জমির খাজনা প্রদান, নামজারি, জমাখারিজ, খতিয়ান বা পর্চার সার্টিফায়েড কপি এবং মৌজা ম্যাপ অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে। এখন ভূমি অফিসে সরাসরি না গিয়ে ঘরে বসেই সেবা নেওয়া যাচ্ছে।” তিনি জানান, ভূমিসেবা সহায়ক নির্দেশিকা ২০২৫-এর আওতায় ঢাকা মহানগরে পরীক্ষামূলকভাবে পাঁচটি ভূমিসেবা সহায়তা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। আগামী জুন মাসের মধ্যে অন্যান্য বিভাগীয় শহরে এবং পরবর্তীতে সারাদেশে এ ধরনের কেন্দ্র চালু করা হবে। নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে ভূমি মালিকরা এসব কেন্দ্র থেকে সহজেই ডিজিটাল সেবার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

 

এছাড়াও, দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের কল সেন্টারে ফোন করে পরামর্শ ও অভিযোগ জানানো যাচ্ছে। জটিল সমস্যা সমাধানে বিশেষজ্ঞরাও সেবায় নিয়োজিত আছেন।

 

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “ভূমি মেলার মাধ্যমে সেবাদাতা ও সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন হবে এবং জনসচেতনতা বাড়বে। সরকারের ভূমিসেবা ও পদক্ষেপ সম্পর্কে দেশব্যাপী জনগণের মাঝে তুলে ধরতে এ ধরনের মেলার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

 

তিনি আরও বলেন, “২০২৪-২৫ অর্থবছর প্রায় শেষের পথে। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার নামে থাকা জমির ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান করার জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। ওয়েবসাইটে লগইন করে ঘরে বসেই ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করে দাখিলা সংগ্রহ করা সম্ভব।

 

ড. ইউনূস বলেন, “ভূমি সেবায় ডিজিটাল পদ্ধতি ভোগান্তি, অস্বচ্ছতা ও দুর্নীতি কমাতে সহায়ক হবে। সব ধরনের নাগরিক সেবাকে আরও জনবান্ধব করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” তিনি জানান, সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে ধাপে ধাপে সেবাদানকারী দায়িত্ব ব্যক্তিগত বা বেসরকারি উদ্যোক্তাদের কাছে হস্তান্তর করা, যাতে গ্রামের শিক্ষিত তরুণ-তরুণী ও গৃহিণীরাও ঘরে বসেই দেশব্যাপী ভূমি সেবা দিতে পারেন।

 

সবশেষে প্রধান উপদেষ্টা ভূমি মেলা ২০২৫-এর সফলতা কামনা করেন এবং মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com