সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : সম্প্রতি চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বিদেশিদের দেওয়ার সিদ্ধান্ত, রাখাইনে মানবিক করিডর, নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনাসহ বেশ কিছু ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর বিরাগভাজনে পরিণত হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। যার কোনোটাই রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার কাঠামোর এজেন্ডা নয় বলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে মনে করিয়ে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. তুহিন মালিক।
শনিবার রাতে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তুহিন মালিক অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদকাল ও এই সময়ে কতটা ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে সেটা নিয়ে লিখেছেন। যেখানে সরকারকে সঠিক এজেন্ডায় থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে ড. ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, আপনি বিশ্ব বরেণ্য। আপনি সবকিছু এনজিও-এর চোখে কিংবা পশ্চিমার চোখে দেখলে দেশের মাঠের খেলায় হেরে যাবেন।
তুহিন মালিকের ফেসবুক পোস্টটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
অন্তর্বর্তী সরকার হচ্ছে অনেকটা সীমিত ওভার ইনিংসের খেলার মতো। ওভার সীমিত। বল সীমিত। রাউন্ড দা উইকেট খেলতে হবে। পিচের বাইরে বল ছুঁড়ে ওয়াইড খেলা বিপদজ্জনক।
(১) চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গোটা দেশ উদ্বিগ্ন অসন্তুষ্ট প্রতিবাদমুখর। সরকারের সিদ্ধান্ত রহস্যজনক। বন্দর এখন আধুনিক প্রযুক্তিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশীয় ব্যবস্থাপনায় এটি এখন সম্পূর্ণ লাভজনক। তাহলে বিদেশিকে ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব কেন দিতে হবে? এর সঙ্গে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন জড়িত।
(২) মিয়ানমারের রাখাইনে মানবিক করিডর দিয়ে আমাদের দেশের মানুষের কি লাভ? সরকার আদৌ এটা পরিষ্কার করেনি। উপরন্তু সরকারের একেকজন একেক ধরনের কথা বলছে। যা রহস্যজনক। দেশের মানুষ চায় না আমাদের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পরোক। বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক সংঘাতে আমরা কেউ জড়াতে চাই না। তারপরও সরকার কেন করিডর চাচ্ছে?
(৩) নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনা জাতিকে বিভক্তির মুখোমুখি করে দিয়েছে। কিছু প্রস্তাবনা আমাদের জাতীয় সংস্কৃতি, পারিবারিক মূল্যবোধ, নৈতিকতা ও ধর্মীয় পারিবারিক আইনের সঙ্গে চরমতম সাংঘর্ষিক। কিন্তু সরকার এ বিষয়টিকে উপেক্ষাই করে চলছে।
ডক্টর ইউনূস আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব। বৈশ্বিক পরিমণ্ডলের খেলোয়াড়। কিন্তু দেশীয় ম্যাচ খেলার জন্য কতটা অভিজ্ঞ? উপরোল্লিখিত ইস্যুতে তা পরিষ্কার নয়। আপনি এনজিও পথিকৃৎ। এক্ষেত্রে আপনি জাতির জন্য নোবেল এনেছেন। আপনি বিশ্ব বরেণ্য। আপনি সবকিছু এনজিও-এর চোখে কিংবা পশ্চিমার চোখে দেখলে দেশের মাঠের খেলায় হেরে যাবেন। নিশ্চিত।
চট্টগ্রাম বন্দর, রাখাইনে মানবিক করিডর এবং নৈতিকতা ও ধর্মীয় আইনের সাথে সাংঘর্ষিক নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনা- এর কোনটাই রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার কাঠামোর এজেন্ডা না। সঠিক এজেন্ডায় থাকুন। রাউন্ড দা উইকেট বল করুন। আমরা আপনাকে কোনভাবেই হারাতে চাই না। সূএ: বার্তাবাজার ডটকম