কেন অভিযানের নাম ‘অপারেশন সিঁদুর’ রাখল ভারত?

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক : পেহেলগামে হামলায় যুক্ত থাকার অভিযোগ এনে পাকিস্তানে অকস্মাৎ আক্রমণ চালিয়েছে ভারত। আর মাঝরাতে হঠাৎ চালানো সেই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। কিন্তু কেন এমন নামকরণ করা হয়েছে, তার একটা ব্যাখ্যাও হাজির করেছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো।

 

ভারতের গণমাধ্যমগুলো সেনা সূত্রের বরাত দিয়েছে অপারেশন সিঁদুর নামটিতে সায় দিয়েছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামের বৈসরন উপত্যকায় ভয়াবহ হামলার ঘটনায় মূল নিশানা ছিলেন পর্যটকেরা। পুরুষদের হত্যা করা হলেও এসময় কোনো নারী ও শিশুকে হত্যা করেনি হামলাকারীরা। তাঁদের চোখের সামনে হত্যা করা হয়েছিল পুরুষদের। কেউ হারিয়েছেন স্বামীকে, কেউ সন্তানকে বা অন্য কোনও আপন জনকে। পেহেলগামে নিহতদের অধিকাংশই স্ত্রী-পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে গিয়েছিলেন। স্ত্রীদের সামনেই তাদের স্বামীকে হত্যা করা হয়। হামলার এই ধরনের কারণে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামটি আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

হিন্দু নারীরা সাধারণত কপালে সিঁদুর পরে বিবাহের চিহ্ন বহন করেন। অভিযোগ, হামলাকারীরা সেই চিহ্ন মুছে দিয়েছে। নিহতদের মধ্যে এমন অনেকেই ছিলেন, যাদের সদ্য বিয়ে হয়েছিল। তারা মধুচন্দ্রিমায় গিয়েছিলেন। ওই ঘটনার পর সদ্যবিধবা নারীদের করুণ ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেয়ে গিয়েছিল।

 

বিশেষ করে ভাইরাল হয়েছিল হরিয়ানার নৌবাহিনীর কর্মকর্তা বিনয় নওয়ালের স্ত্রী হিমাংশী নরওয়ালের ছবি। উপত্যকার মাঝে স্বামীর নিথর দেহ আঁকড়ে তাঁকে বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল। ঘটনার দিন কয়েক আগেই বিয়ে হয় তাদের। ওই ছবিটিই ভারতের প্রত্যাঘাতের প্রতীকী ছবি হয়ে উঠেছে, বলছেন পর্যবেক্ষকেরা। যদিও হিমাংশী এরপর গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, তিনি বিচার চান তবে অশান্তি চান না।

 

পাকিস্তানে প্রত্যাঘাতের পরে ভারতীয় সেনাবাহিনী বিবৃতিতে জানায়, কিছুক্ষণ আগে ভারতের সশস্ত্র বাহিনী ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু করল। পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী কাঠামোগুলিকে আঘাত করা হয়েছে। যেখান থেকে ভারতে হামলার পরিকল্পনা এবং পরিচালনা করা হয়। সবমিলিয়ে নয়টি জায়গায় প্রত্যাঘাত করা হয়েছে।

 

তবে পেহেলগামে হামলার সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা প্রথম থেকেই অস্বীকার করে আসছে পাকিস্তান। তারা নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে। আমেরিকা, চিন, রাশিয়া-সহ বিভিন্ন দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনীতির মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমনের বার্তা দিয়েছিল। কিন্তু মোদি সেনাবাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে রেখেছিলেন। তার পর ১৫ দিনের মাথায় ভারত পাকিস্তানে হামলা চালায়।

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ধমক দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যাহত করতে চাইলে বিএনপি সহ্য করবে না : ফারুক

» পিআর ইস্যুতে যা বললেন মঈন খান

» ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণার পরিসর বাড়ানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

» আসিফের অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» দেশের স্বার্থে বন্দর ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে : নৌপরিবহন উপদেষ্টা

» বিশেষ অভিযানে মোট ১ হাজার ৩৫৩ জন গ্রেফতার

» হজ শেষে ফিরেছেন ৬০ হাজার ৫১৩ হাজি

» জামালপুরে নারী এগিয়ে চলা প্রকল্পের সভা অনুষ্ঠিত

» জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে  মোরেলগঞ্জে বিএনপির বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি

» ইসলামপুরে রহিম মেম্বার হত্যা সন্দেহে দুইজন আটক

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

কেন অভিযানের নাম ‘অপারেশন সিঁদুর’ রাখল ভারত?

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক : পেহেলগামে হামলায় যুক্ত থাকার অভিযোগ এনে পাকিস্তানে অকস্মাৎ আক্রমণ চালিয়েছে ভারত। আর মাঝরাতে হঠাৎ চালানো সেই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। কিন্তু কেন এমন নামকরণ করা হয়েছে, তার একটা ব্যাখ্যাও হাজির করেছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো।

 

ভারতের গণমাধ্যমগুলো সেনা সূত্রের বরাত দিয়েছে অপারেশন সিঁদুর নামটিতে সায় দিয়েছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামের বৈসরন উপত্যকায় ভয়াবহ হামলার ঘটনায় মূল নিশানা ছিলেন পর্যটকেরা। পুরুষদের হত্যা করা হলেও এসময় কোনো নারী ও শিশুকে হত্যা করেনি হামলাকারীরা। তাঁদের চোখের সামনে হত্যা করা হয়েছিল পুরুষদের। কেউ হারিয়েছেন স্বামীকে, কেউ সন্তানকে বা অন্য কোনও আপন জনকে। পেহেলগামে নিহতদের অধিকাংশই স্ত্রী-পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে গিয়েছিলেন। স্ত্রীদের সামনেই তাদের স্বামীকে হত্যা করা হয়। হামলার এই ধরনের কারণে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামটি আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

হিন্দু নারীরা সাধারণত কপালে সিঁদুর পরে বিবাহের চিহ্ন বহন করেন। অভিযোগ, হামলাকারীরা সেই চিহ্ন মুছে দিয়েছে। নিহতদের মধ্যে এমন অনেকেই ছিলেন, যাদের সদ্য বিয়ে হয়েছিল। তারা মধুচন্দ্রিমায় গিয়েছিলেন। ওই ঘটনার পর সদ্যবিধবা নারীদের করুণ ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেয়ে গিয়েছিল।

 

বিশেষ করে ভাইরাল হয়েছিল হরিয়ানার নৌবাহিনীর কর্মকর্তা বিনয় নওয়ালের স্ত্রী হিমাংশী নরওয়ালের ছবি। উপত্যকার মাঝে স্বামীর নিথর দেহ আঁকড়ে তাঁকে বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল। ঘটনার দিন কয়েক আগেই বিয়ে হয় তাদের। ওই ছবিটিই ভারতের প্রত্যাঘাতের প্রতীকী ছবি হয়ে উঠেছে, বলছেন পর্যবেক্ষকেরা। যদিও হিমাংশী এরপর গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, তিনি বিচার চান তবে অশান্তি চান না।

 

পাকিস্তানে প্রত্যাঘাতের পরে ভারতীয় সেনাবাহিনী বিবৃতিতে জানায়, কিছুক্ষণ আগে ভারতের সশস্ত্র বাহিনী ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু করল। পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী কাঠামোগুলিকে আঘাত করা হয়েছে। যেখান থেকে ভারতে হামলার পরিকল্পনা এবং পরিচালনা করা হয়। সবমিলিয়ে নয়টি জায়গায় প্রত্যাঘাত করা হয়েছে।

 

তবে পেহেলগামে হামলার সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা প্রথম থেকেই অস্বীকার করে আসছে পাকিস্তান। তারা নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে। আমেরিকা, চিন, রাশিয়া-সহ বিভিন্ন দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনীতির মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমনের বার্তা দিয়েছিল। কিন্তু মোদি সেনাবাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে রেখেছিলেন। তার পর ১৫ দিনের মাথায় ভারত পাকিস্তানে হামলা চালায়।

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com