কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ, কলাবাগান থানার ওসি-এসআই প্রত্যাহার

ফাইল ফটো

 

অনলাইন ডেস্ক : কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুজ্জামানসহ দুই এসআইকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। প্রত্যাহার হওয়া দুই এসআই হলেন বেলাল ও মান্নান।

 

আজ  ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

 

ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর জানান, প্রশানিক কারণে কলাবাগার থানার ওসি ও দুই এসআইকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

 

জানা গেছে, সম্প্রতি গভীর রাতে কলাবাগান থানার ওসির চাঁদাবাজি, অর্থ আদায়, ভাঙচুর, লুটপাট ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকির অভিযোগের সঠিক তদন্ত ও যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ডিএমপি কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ফিকামলি তত্ত্বের জনক ড. আব্দুল ওয়াদুদ। এই অভিযোগ আমলে নিয়ে ওসিসহ দুই এসআইকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

 

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রত্যাহারের পর ডিএমপির সদর দপ্তরের সিদ্ধান্তে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তবে সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

 

অভিযোগে আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, গত ২৯ এপ্রিল মধ্যরাতে কলাবাগান থানার এসআই বেলালের নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ ও ১৫ থেকে ২০ জনের একদল ‌‘সন্ত্রাসী’ বাড়িতে জোর করে ঢুকে পড়ে। আমার ম্যানেজার ৯৯৯ এ টেলিফোন করলে শাহবাগ ও নিউমার্কেট থানার টহল টিমের ২টি গাড়ি এসে বাড়ির সামনে মেইন রোডে থামে।

 

ম্যানেজার তখন দেখতে পান কলাবাগান থানার ওসি মোক্তার নিউমার্কেট ও শাহবাগের টহল টিমকে চলে যেতে বলেন। তখন এক ভাড়াটিয়া ও নাইট গার্ড ওই টহল টিমকে বিষয়টি জানাতে চাইলে কলাবাগান থানার ওসি তাদের দু’জনকে পুলিশের গাড়িতে তোলার নির্দেশ দেন, যা বাসার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ রয়েছে।

 

অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, এদিকে বাড়ির মধ্যে ঢুকে কয়েকজন পুলিশ ড. আব্দুল ওয়াদুদের ঘরের তৃতীয় তলার দরজা ভাঙার চেষ্টা করে। গভীর রাতে সন্ত্রাসী তাণ্ডব ও দরজা ভাঙার শব্দে আশপাশের লোকজনদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়। একটি দরজা ভাঙার পর দ্বিতীয় দরজা ভাঙার সময় তিনি কলাবাগান থানার ওসিকে সাহায্যের জন্য ফোন দেন।

 

ওই সময় ওসি তাকে পুলিশের সঙ্গে বের হয়ে আসতে বলেন। সেই সঙ্গে আরো বলেন, ডিবির লোক এসেছে তাদেরকে সহযোগিতা করতে।

 

অভিযোগে তিনি আরো বলেন, কোনো উপায় না দেখে পুলিশের সঙ্গে থানায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করি এবং দরজা খুলে দেই। কিন্তু দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে এসআই বেলাল ও মান্নান আমাকে ধাক্কা মেরে আবার ঘরের ভেতরে টেনে নেয় এবং উগ্রভাবে আমার কাছে কী কী অস্ত্র আছে তা জানতে চায়।

 

কিছুক্ষণ পর মান্নান নামের একজন পুলিশ সদস্য আমাকে একটু আড়ালে নিয়ে বলেন, এই মুহূর্তে ১ কোটি টাকা দিতে পারলে আমার থানায় যেতে হবে না। বাড়িতে রেখে যাবে। কী মামলা হয়েছে জানতে চাইলে তারা জানায়, কোনো মামলা হয়নি; তারা টাকার জন্য এসেছে। যদি টাকা না দেই তাহলে আমার বিরুদ্ধে ১০টি মামলা দেওয়া হবে।

 

ভুক্তভোগী বলেন, উপায় না পেয়ে ২ লাখ টাকা পুলিশ সদস্য বেলাল ও মান্নানের হাতে দেই। ব্যাংকিং আওয়ারের মধ্যে বাকি টাকা দেওয়ার শর্তে ৩ জন সিভিল ড্রেস পরা ব্যক্তিকে আমার পাহারায় রেখে যায়। তারা নিজেদেরকে ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়েছে। এমনকি যাওয়ার সময় এসআই বেলাল বাড়িতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি এ রকম একটি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও নিয়েছে ভিডিও ধারণ করে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার দিন ডিএমপির বিশেষ নির্দেশনা

» ‘শিখতে আসিনি, জিততে এসেছি’, নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে সোহান

» পাকিস্তানে জ্বালানি ট্যাংকার বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৯

» দেশের পথে খালেদা জিয়া

» মাকে বিদায় জানালেন তারেক রহমান

» কেউ যেন হাসিনা হয়ে উঠতে না পারে সে জন্য বিচার আবশ্যক : সারজিস

» লন্ডনের বাসা থেকে বের হয়ে বিমানবন্দের উদ্দেশে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

» বাংলাদেশে এখনো ফ্যাসিস্ট শক্তি আছে বলেই হাসনাতের উপর আক্রমণ: মাহমুদুর রহমান

» বাংলাদেশ থেকে আরও জনশক্তি নিতে আগ্রহী ইতালি

» হাসনাতের ওপর হামলার মতো ঘটনা ভবিষ্যতে যেন আর না ঘটে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ, কলাবাগান থানার ওসি-এসআই প্রত্যাহার

ফাইল ফটো

 

অনলাইন ডেস্ক : কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুজ্জামানসহ দুই এসআইকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। প্রত্যাহার হওয়া দুই এসআই হলেন বেলাল ও মান্নান।

 

আজ  ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

 

ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর জানান, প্রশানিক কারণে কলাবাগার থানার ওসি ও দুই এসআইকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

 

জানা গেছে, সম্প্রতি গভীর রাতে কলাবাগান থানার ওসির চাঁদাবাজি, অর্থ আদায়, ভাঙচুর, লুটপাট ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকির অভিযোগের সঠিক তদন্ত ও যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ডিএমপি কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ফিকামলি তত্ত্বের জনক ড. আব্দুল ওয়াদুদ। এই অভিযোগ আমলে নিয়ে ওসিসহ দুই এসআইকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

 

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রত্যাহারের পর ডিএমপির সদর দপ্তরের সিদ্ধান্তে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তবে সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

 

অভিযোগে আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, গত ২৯ এপ্রিল মধ্যরাতে কলাবাগান থানার এসআই বেলালের নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ ও ১৫ থেকে ২০ জনের একদল ‌‘সন্ত্রাসী’ বাড়িতে জোর করে ঢুকে পড়ে। আমার ম্যানেজার ৯৯৯ এ টেলিফোন করলে শাহবাগ ও নিউমার্কেট থানার টহল টিমের ২টি গাড়ি এসে বাড়ির সামনে মেইন রোডে থামে।

 

ম্যানেজার তখন দেখতে পান কলাবাগান থানার ওসি মোক্তার নিউমার্কেট ও শাহবাগের টহল টিমকে চলে যেতে বলেন। তখন এক ভাড়াটিয়া ও নাইট গার্ড ওই টহল টিমকে বিষয়টি জানাতে চাইলে কলাবাগান থানার ওসি তাদের দু’জনকে পুলিশের গাড়িতে তোলার নির্দেশ দেন, যা বাসার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ রয়েছে।

 

অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, এদিকে বাড়ির মধ্যে ঢুকে কয়েকজন পুলিশ ড. আব্দুল ওয়াদুদের ঘরের তৃতীয় তলার দরজা ভাঙার চেষ্টা করে। গভীর রাতে সন্ত্রাসী তাণ্ডব ও দরজা ভাঙার শব্দে আশপাশের লোকজনদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়। একটি দরজা ভাঙার পর দ্বিতীয় দরজা ভাঙার সময় তিনি কলাবাগান থানার ওসিকে সাহায্যের জন্য ফোন দেন।

 

ওই সময় ওসি তাকে পুলিশের সঙ্গে বের হয়ে আসতে বলেন। সেই সঙ্গে আরো বলেন, ডিবির লোক এসেছে তাদেরকে সহযোগিতা করতে।

 

অভিযোগে তিনি আরো বলেন, কোনো উপায় না দেখে পুলিশের সঙ্গে থানায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করি এবং দরজা খুলে দেই। কিন্তু দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে এসআই বেলাল ও মান্নান আমাকে ধাক্কা মেরে আবার ঘরের ভেতরে টেনে নেয় এবং উগ্রভাবে আমার কাছে কী কী অস্ত্র আছে তা জানতে চায়।

 

কিছুক্ষণ পর মান্নান নামের একজন পুলিশ সদস্য আমাকে একটু আড়ালে নিয়ে বলেন, এই মুহূর্তে ১ কোটি টাকা দিতে পারলে আমার থানায় যেতে হবে না। বাড়িতে রেখে যাবে। কী মামলা হয়েছে জানতে চাইলে তারা জানায়, কোনো মামলা হয়নি; তারা টাকার জন্য এসেছে। যদি টাকা না দেই তাহলে আমার বিরুদ্ধে ১০টি মামলা দেওয়া হবে।

 

ভুক্তভোগী বলেন, উপায় না পেয়ে ২ লাখ টাকা পুলিশ সদস্য বেলাল ও মান্নানের হাতে দেই। ব্যাংকিং আওয়ারের মধ্যে বাকি টাকা দেওয়ার শর্তে ৩ জন সিভিল ড্রেস পরা ব্যক্তিকে আমার পাহারায় রেখে যায়। তারা নিজেদেরকে ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়েছে। এমনকি যাওয়ার সময় এসআই বেলাল বাড়িতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি এ রকম একটি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও নিয়েছে ভিডিও ধারণ করে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com