ছবি সংগৃহীত
ডেস্ক রিপোর্ট : নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, নির্ধারিত সময়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত না আসায় নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের আদেশ বাস্তবায়ন করতেই ইশরাক হোসেনের নামে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
বুধবার নির্বাচন ভবনে ‘চতুর্থ কমিশন সভা’ শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহবলেন, ‘আদালতের আদেশের যেন ব্যত্যয় না ঘটে সেটা (গেজেট প্রকাশ) বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
কমিশন সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিন, চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব উপস্থিত ছিলেন।
গত ২৭ মার্চ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০২০ সালের নির্বাচনে ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণার ফল বাতিল করে বিএনপি নেতা ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম।
ট্রাইব্যুনালের রায়ের কপি পেয়ে ২২ এপ্রিল গেজেট প্রকাশের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ চায় সাংবিধানিক সংস্থাটি। এরপর ২৭ এপ্রিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নতুন মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
পরদিন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল দাবি করেন, মন্ত্রণালয়ের মতামত দেওয়ার আগেই ইসি বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নামে গেজেট প্রকাশ করেছে।
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের প্রয়োজন না হলেও এক্ষেত্রে ইসি মতামত চেয়েছিল।
উপদেষ্টা বলেছিলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছিলাম, নির্বাচনি মামলায় প্লেইন্ট (আরজি) পরিবর্তন করা যায় না। কারণ এটা কোয়াশি সিভিল মেটার। এসব ক্ষেত্রে প্লেইন্ট পরিবর্তন করা যায় না। ইশরাক সাহেব বোধহয় পরে প্লেইন্ট পরিবর্তন করেছিলেন। সেজন্য আমরা একটু দ্বিধান্বিত ছিলাম যে এটা গেজেট হবে, নাকি আপিল করতে হবে। নির্বাচন কমিশন আমাদের মতামতের জন্য অপেক্ষা করে নাই। উনারা নিজেরা গেজেট নোটিফিকেশন করেছেন।
বুধবার আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত পাওয়ার আগেই গেজেট প্রকাশের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘আমাদের মধ্যে বাধ্যবাধকতা ছিল ১০ দিনের মধ্যে এটার নিষ্পত্তি করার, আমরা নিষ্পত্তি করেছি। আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছিলাম। ২৫ এপ্রিল ছিল দশম দিন শুক্রবার; শনিবার ছুটি। রবিবার ২৭ এপ্রিল বিকাল ৫টা পর্যন্ত অপেক্ষা করি, রিপ্লাই না পেয়ে আমরা কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়ে এটা করেছি।
নির্বাচন কমিশন সংক্ষুব্ধ ‘পার্টি’ না হওয়ায় আপিলেও যায়নি বলে মন্তব্য করেন এ নির্বাচন কমিশনার।
তিনি বলেন, ইশরাকের গেজেট প্রকাশ হওয়ায় মেয়র হিসেবে শপথ আয়োজনের বিষয়টি দেখভাল করবে স্থানীয় সরকার বিভাগ। সেক্ষেত্রে ক’মাসের জন্য দায়িত্ব পাচ্ছেন তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে শপথ পর্যন্ত।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির নির্বাচন হয়। বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে পৌনে দুই লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র হন। দেশে কোভিড মহামারি শুরুর পর ১৬ মে দায়িত্ব নেন তাপস। আর জুনের প্রথম সপ্তাহে প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই হিসাবে এ সিটি করপোরেশনের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা চলতি বছরের জুনে।