কোরবানি করবেন? ১০টি জরুরি বিষয় জেনে রাখুন

ছবি সংগৃহীত

 

ধর্ম ডেস্ক :কোরবানি ইসলামি শরিয়তের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আল্লাহ তাআলা কোরবানির নির্দেশ দিয়ে বলেন— ‘আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি আদায় করুন।’ (সুরা কাউসার: ২)

 

কোরবানি শুদ্ধ হওয়ার জন্য বা কোরবানি যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে কিছু বিষয় জেনে রাখা জরুরি। অন্যথায় কোরবানি শুদ্ধ হবে না, আল্লাহর দরবারে ওই কোরবানি গৃহীতও হবে না। এখানে কোরআন-হাদিস ও বিশুদ্ধ ফতোয়ার আলোকে কোরবানির জরুরি মাসয়ালাগুলো তুলে ধরা হলো।

১: নিয়ত বিশুদ্ধ না হওয়া
কোরবানি আল্লাহর কাছে কবুল হওয়ার জন্য অবশ্যই নিয়ত বিশুদ্ধ হতে হবে। লোকদেখানোর উদ্দেশ্যে অথবা কম টাকায় অধিক গোশত পাওয়া যাবে—এধরণের নিয়তে কোরবানি করলে ওই কোরবানি শুদ্ধ হবে না; কবুলও হবে না। তবে যদি আপনার অন্তরে এ ধরনের ইচ্ছা থাকে যে কোরবানি শেষে গোশত খাবো—এ ধরনের আকাঙ্খার কারণে আপনার কোরবানি অশুদ্ধ হবে না। (সুরা হজ: ৩৭; মুসনাদে আহমদ: ২২৯৮৪; আল ফতোয়াল কুবরা, সদরুশ শহিদ: ১/২১৪; খুলাসাতুল ফতোয়া: ৪/৩১৩)

 

২: কোরবানির পশু হারাম টাকায় ক্রয় করা
কোরবানির পশু কিনতে হবে সম্পূর্ণ হালাল সম্পদ থেকে। হারাম টাকায় কোরবানি করলে ওই কোরবানি শুদ্ধ হবে না। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশিয়ে দিও না।’ (সুরা বাকারা: ৪২) হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না।’ (সহিহ মুসলিম: ১০১৫)

 

৩: পশুর বয়স কম হওয়া
ইসলামি শরিয়তে কোরবানির পশুর নির্দিষ্ট বয়সসীমা আছে। যেমন- উটের বয়স পাঁচ বছর হতে হবে। গরু ও মহিষের বয়স দুই বছর হতে হবে। ছাগলের বয়স একবছর হতে হবে। ভেড়া ও দুম্বার বয়সও এক বছর হতে হবে, তবে সংকটের সময় ৬ মাসের হলেও সমস্যা নেই। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, তোমরা কোরবানির পশু ‘মুসিন্না’ ছাড়া জবেহ করবে না। তবে সংকটের অবস্থায় ছয় মাস বয়সের ভেড়া-দুম্বা জবেহ করতে পারবে। হাদিসে মুসিন্না বলতে বোঝানো হয়েছে, পাঁচ বছর বয়সী উট, দুই বছরের গরু ও মহিষ এবং এক বছর বয়সী ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, তোমরা কোরবানির পশু ‘মুসিন্না’ ছাড়া জবেহ করবে না। তবে সংকটের অবস্থায় ছয় মাস বয়সের ভেড়া-দুম্বা জবেহ করতে পারবে। (মুসিন্না হলো- পাঁচ বছর বয়সী উট, দুই বছরের গরু, মহিষ এবং এক বছর বয়সী ছাগল, ভেড়া বা দুম্বা। (সহিহ মুসলিম: ১৯৬৩; আবু দাউদ: ২৭৯৭; ইবনে মাজাহ: ৩১৭৯)

৪: ত্রুটিপূর্ণ পশু কোরবানি করা
কোরবানি শুদ্ধ হওয়ার জন্য পশু হতে হবে বড় ধরনের দোষ-ত্রুটি থেকে মুক্ত। হাদিসে এসেছে, ‘চার ধরনের পশু দিয়ে কোরবানি হবে না। অন্ধ, যার অন্ধত্ব স্পষ্ট। রোগাক্রান্ত, যার রোগ স্পষ্ট। পঙ্গু, যার পঙ্গুত্ব স্পষ্ট ও আহত, যার কোনো অঙ্গ ভেঙে গেছে।’ ( ইবনে মাজাহ: ৩১৪৪)

 

৫: পশুর জবাইয়ের সময় কমপক্ষে ৩টি রগ না কাটা
পশু জবাই শুদ্ধ হওয়ার জন্য গলার চারটি রগ কাটা জরুরি: ১. কণ্ঠনালি, ২. খাদ্যনালী, ৩. দুই পাশের মোটা রগ, যাকে ওয়াজদান বলা হয়। এই চারটি রগের মধ্যে যেকোনো তিনটি কাটা হলে কোরবানি শুদ্ধ হবে। কিন্তু যদি দুটি কাটা হয় তবে কোরবানি শুদ্ধ হবে না। (হেদায়া: ৪/৪৩৭)

 

৬: জবাইয়ের সময় বিসমিল্লাহ না বলা
কোরবানির পশু জবাইয়ের সময় ইচ্ছাকৃত বিসমিল্লাহ না বললে কোরবানি হবে না। কিন্তু যদি ভুলে বিসমিল্লাহ না বলে, তাহলে কোরবানি হয়ে যাবে। (সুরা আনআম: ১২১; ইবনে মাজাহ: ২০৪০; মুসান্নাফে আব্দুর রাজজাক: ৮৫৪০)

 

৭: শরিকের সংখ্যা অশুদ্ধ হওয়া
একটি উট অথবা গরু-মহিষে সর্বোচ্চ সাত ব্যক্তি কোরবানির জন্য শরিক হতে পারে। (মুসলিম: ১৩১৮) সাত ভাগের নিচে দুই, তিন, চার, পাঁচ বা ছয় ভাগেও কোরবানি করা জায়েজ। কিন্তু সাতের অধিক লোক শরিক হলে ওই কোরবানি করলে শুদ্ধ হবে না। আবার ছোট জন্তু যেমন মেষ বা ছাগলে ভাগাভাগি করা বৈধ নয়। (মুসলিম: ১৩১৮; বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৭)

 

৮: শরিকদের কারো টাকা হারাম হওয়া
জেনেশুনে হারাম উপার্জনকারীকে কোরবানির অংশীদার করলে অন্য শরিকদের কোরবানিও সহিহ হবে না। (সুরা বাকারা: ৪২; মুসলিম: ১০১৫) তবে, বিষয়টি অন্য শরিকদের অজানা থাকলে তাদের কোরবানি শুদ্ধ হবে, শুধুমাত্র হারাম টাকার অংশীদারের কোরবানি কবুল হবে না। (সুরা বাকারা: ২৮৬) অবশ্য এক্ষেত্রে জেনে রাখা ভালো- কারো উপার্জন হারাম হলেও অন্তত কোরবানির টাকাটা যদি হালাল হয়, তার কোরবানি শুদ্ধ হবে, অন্য শরিকদের কোরবানিও শুদ্ধ হবে।

 

৯: কোনো শরিকের নিয়ত অশুদ্ধ হওয়া
ইসলামি শরিয়তের বিধান হলো- শরিকের মধ্যে শুধু একজনের নিয়তে গণ্ডগোল থাকলে কারো কোরবানিই শুদ্ধ হবে না। এ বিষয়ে ফতোয়ার কিতাবগুলোতে বলা হয়েছে—যদি কেউ আল্লাহ তাআলার হুকুম পালনের উদ্দেশ্য ছাড়া অন্য উদ্দেশ্যে কোরবানি করবে, তাহলে তার কোরবানি সহিহ হবে না। তাকে অংশীদার বানালে শরিকদের কারো কোরবানি হবে না। তাই অত্যন্ত সতর্কতার সাথে শরিক নির্বাচন করতে হবে। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৮, কাজিখান: ৩/৩৪৯) তবে, নিয়ত অশুদ্ধের বিষয়টি অন্য শরিকদের অজানা থাকলে তাদের কোরবানি হবে, শুধু তার কোরবানি হবে না। (সুরা বাকারা: ২৮৬)

 

১০ নম্বর: ভাগবণ্টনে গরমিল করা
কোরবানির পশুতে প্রত্যেক অংশীদারের অংশ সমান হতে হবে। কারো অংশ অন্যের অংশ থেকে কম হতে পারবে না। যেমন কারো আধা ভাগ, কারো দেড় ভাগ। এমন হলে কোনো শরিকের কোরবানি শুদ্ধ হবে না। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৭) প্রসঙ্গত, অনুমান করে ভাগ করা জায়েজ নেই। পা ও মাথার ক্ষেত্রেও একই বিধান। তবে কেউ যদি নিজের ভাগের অংশ অন্যজনকে দিয়ে দেয়, তাতে সমস্যা নেই (আদ্দুররুল মুখতার: ৬/৩১৭, কাজিখান: ৩/৩৫১)

 

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে উল্লেখিত বিষয়গুলো মেনে কোরবানি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» কিয়ারাকে কোটি টাকার উপহার সিদ্ধার্থের

» ‘হৃতিককে আমার ততটাও সুন্দর পুরুষ মনে হয় না’

» ‘ফিক্সিং সন্দেহে সবার সামনে নাম প্রকাশ ক্রিকেটারদের অসম্মান’

» পাকিস্তানে সেনা অভিযানে ৬ সন্ত্রাসী নিহত, আহত ৪

» আজ শনিবার রাজধানীর যেসব এলাকা-মার্কেট বন্ধ

» নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে লক্ষ্মীপুরে প্রকাশ্যে মেঘনা নদীতে জাটকা নিধন

» শিক্ষক ও সাংবাদিক শংকর মজুমদার: এক জীবন্ত ইতিহাস

» বাগেরহাটের চিতলমারীতে আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

» সুন্দরবনের উপকূলে উচ্চফলনশীল ব্রি ধান চাষে কৃষকের সাফল্য

» রাবিতে ভর্তি পরীক্ষার এ ইউনিটের ফল প্রকাশ

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

কোরবানি করবেন? ১০টি জরুরি বিষয় জেনে রাখুন

ছবি সংগৃহীত

 

ধর্ম ডেস্ক :কোরবানি ইসলামি শরিয়তের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আল্লাহ তাআলা কোরবানির নির্দেশ দিয়ে বলেন— ‘আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি আদায় করুন।’ (সুরা কাউসার: ২)

 

কোরবানি শুদ্ধ হওয়ার জন্য বা কোরবানি যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে কিছু বিষয় জেনে রাখা জরুরি। অন্যথায় কোরবানি শুদ্ধ হবে না, আল্লাহর দরবারে ওই কোরবানি গৃহীতও হবে না। এখানে কোরআন-হাদিস ও বিশুদ্ধ ফতোয়ার আলোকে কোরবানির জরুরি মাসয়ালাগুলো তুলে ধরা হলো।

১: নিয়ত বিশুদ্ধ না হওয়া
কোরবানি আল্লাহর কাছে কবুল হওয়ার জন্য অবশ্যই নিয়ত বিশুদ্ধ হতে হবে। লোকদেখানোর উদ্দেশ্যে অথবা কম টাকায় অধিক গোশত পাওয়া যাবে—এধরণের নিয়তে কোরবানি করলে ওই কোরবানি শুদ্ধ হবে না; কবুলও হবে না। তবে যদি আপনার অন্তরে এ ধরনের ইচ্ছা থাকে যে কোরবানি শেষে গোশত খাবো—এ ধরনের আকাঙ্খার কারণে আপনার কোরবানি অশুদ্ধ হবে না। (সুরা হজ: ৩৭; মুসনাদে আহমদ: ২২৯৮৪; আল ফতোয়াল কুবরা, সদরুশ শহিদ: ১/২১৪; খুলাসাতুল ফতোয়া: ৪/৩১৩)

 

২: কোরবানির পশু হারাম টাকায় ক্রয় করা
কোরবানির পশু কিনতে হবে সম্পূর্ণ হালাল সম্পদ থেকে। হারাম টাকায় কোরবানি করলে ওই কোরবানি শুদ্ধ হবে না। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশিয়ে দিও না।’ (সুরা বাকারা: ৪২) হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না।’ (সহিহ মুসলিম: ১০১৫)

 

৩: পশুর বয়স কম হওয়া
ইসলামি শরিয়তে কোরবানির পশুর নির্দিষ্ট বয়সসীমা আছে। যেমন- উটের বয়স পাঁচ বছর হতে হবে। গরু ও মহিষের বয়স দুই বছর হতে হবে। ছাগলের বয়স একবছর হতে হবে। ভেড়া ও দুম্বার বয়সও এক বছর হতে হবে, তবে সংকটের সময় ৬ মাসের হলেও সমস্যা নেই। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, তোমরা কোরবানির পশু ‘মুসিন্না’ ছাড়া জবেহ করবে না। তবে সংকটের অবস্থায় ছয় মাস বয়সের ভেড়া-দুম্বা জবেহ করতে পারবে। হাদিসে মুসিন্না বলতে বোঝানো হয়েছে, পাঁচ বছর বয়সী উট, দুই বছরের গরু ও মহিষ এবং এক বছর বয়সী ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, তোমরা কোরবানির পশু ‘মুসিন্না’ ছাড়া জবেহ করবে না। তবে সংকটের অবস্থায় ছয় মাস বয়সের ভেড়া-দুম্বা জবেহ করতে পারবে। (মুসিন্না হলো- পাঁচ বছর বয়সী উট, দুই বছরের গরু, মহিষ এবং এক বছর বয়সী ছাগল, ভেড়া বা দুম্বা। (সহিহ মুসলিম: ১৯৬৩; আবু দাউদ: ২৭৯৭; ইবনে মাজাহ: ৩১৭৯)

৪: ত্রুটিপূর্ণ পশু কোরবানি করা
কোরবানি শুদ্ধ হওয়ার জন্য পশু হতে হবে বড় ধরনের দোষ-ত্রুটি থেকে মুক্ত। হাদিসে এসেছে, ‘চার ধরনের পশু দিয়ে কোরবানি হবে না। অন্ধ, যার অন্ধত্ব স্পষ্ট। রোগাক্রান্ত, যার রোগ স্পষ্ট। পঙ্গু, যার পঙ্গুত্ব স্পষ্ট ও আহত, যার কোনো অঙ্গ ভেঙে গেছে।’ ( ইবনে মাজাহ: ৩১৪৪)

 

৫: পশুর জবাইয়ের সময় কমপক্ষে ৩টি রগ না কাটা
পশু জবাই শুদ্ধ হওয়ার জন্য গলার চারটি রগ কাটা জরুরি: ১. কণ্ঠনালি, ২. খাদ্যনালী, ৩. দুই পাশের মোটা রগ, যাকে ওয়াজদান বলা হয়। এই চারটি রগের মধ্যে যেকোনো তিনটি কাটা হলে কোরবানি শুদ্ধ হবে। কিন্তু যদি দুটি কাটা হয় তবে কোরবানি শুদ্ধ হবে না। (হেদায়া: ৪/৪৩৭)

 

৬: জবাইয়ের সময় বিসমিল্লাহ না বলা
কোরবানির পশু জবাইয়ের সময় ইচ্ছাকৃত বিসমিল্লাহ না বললে কোরবানি হবে না। কিন্তু যদি ভুলে বিসমিল্লাহ না বলে, তাহলে কোরবানি হয়ে যাবে। (সুরা আনআম: ১২১; ইবনে মাজাহ: ২০৪০; মুসান্নাফে আব্দুর রাজজাক: ৮৫৪০)

 

৭: শরিকের সংখ্যা অশুদ্ধ হওয়া
একটি উট অথবা গরু-মহিষে সর্বোচ্চ সাত ব্যক্তি কোরবানির জন্য শরিক হতে পারে। (মুসলিম: ১৩১৮) সাত ভাগের নিচে দুই, তিন, চার, পাঁচ বা ছয় ভাগেও কোরবানি করা জায়েজ। কিন্তু সাতের অধিক লোক শরিক হলে ওই কোরবানি করলে শুদ্ধ হবে না। আবার ছোট জন্তু যেমন মেষ বা ছাগলে ভাগাভাগি করা বৈধ নয়। (মুসলিম: ১৩১৮; বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৭)

 

৮: শরিকদের কারো টাকা হারাম হওয়া
জেনেশুনে হারাম উপার্জনকারীকে কোরবানির অংশীদার করলে অন্য শরিকদের কোরবানিও সহিহ হবে না। (সুরা বাকারা: ৪২; মুসলিম: ১০১৫) তবে, বিষয়টি অন্য শরিকদের অজানা থাকলে তাদের কোরবানি শুদ্ধ হবে, শুধুমাত্র হারাম টাকার অংশীদারের কোরবানি কবুল হবে না। (সুরা বাকারা: ২৮৬) অবশ্য এক্ষেত্রে জেনে রাখা ভালো- কারো উপার্জন হারাম হলেও অন্তত কোরবানির টাকাটা যদি হালাল হয়, তার কোরবানি শুদ্ধ হবে, অন্য শরিকদের কোরবানিও শুদ্ধ হবে।

 

৯: কোনো শরিকের নিয়ত অশুদ্ধ হওয়া
ইসলামি শরিয়তের বিধান হলো- শরিকের মধ্যে শুধু একজনের নিয়তে গণ্ডগোল থাকলে কারো কোরবানিই শুদ্ধ হবে না। এ বিষয়ে ফতোয়ার কিতাবগুলোতে বলা হয়েছে—যদি কেউ আল্লাহ তাআলার হুকুম পালনের উদ্দেশ্য ছাড়া অন্য উদ্দেশ্যে কোরবানি করবে, তাহলে তার কোরবানি সহিহ হবে না। তাকে অংশীদার বানালে শরিকদের কারো কোরবানি হবে না। তাই অত্যন্ত সতর্কতার সাথে শরিক নির্বাচন করতে হবে। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৮, কাজিখান: ৩/৩৪৯) তবে, নিয়ত অশুদ্ধের বিষয়টি অন্য শরিকদের অজানা থাকলে তাদের কোরবানি হবে, শুধু তার কোরবানি হবে না। (সুরা বাকারা: ২৮৬)

 

১০ নম্বর: ভাগবণ্টনে গরমিল করা
কোরবানির পশুতে প্রত্যেক অংশীদারের অংশ সমান হতে হবে। কারো অংশ অন্যের অংশ থেকে কম হতে পারবে না। যেমন কারো আধা ভাগ, কারো দেড় ভাগ। এমন হলে কোনো শরিকের কোরবানি শুদ্ধ হবে না। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৭) প্রসঙ্গত, অনুমান করে ভাগ করা জায়েজ নেই। পা ও মাথার ক্ষেত্রেও একই বিধান। তবে কেউ যদি নিজের ভাগের অংশ অন্যজনকে দিয়ে দেয়, তাতে সমস্যা নেই (আদ্দুররুল মুখতার: ৬/৩১৭, কাজিখান: ৩/৩৫১)

 

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে উল্লেখিত বিষয়গুলো মেনে কোরবানি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com