যে কারণে এবার পাকিস্তানে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালাতে পারবে না ভারত

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক :কাশ্মীরে অস্ত্রধারীদের হামলার ঘটনায় আবারও উত্তপ্ত পাকিস্তান-ভারত রাজনীতি। এই হামলার দায় পুরোপুরি ইসলামাবাদের ওপর চাপিয়েছে নয়াদিল্ল। যদিও পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সরাসরি বলেছেন, পাহেলগাঁও হামলার সাথে তার দেশের কোনো যোগসাজশ নেই। তারপরও পাল্টা ব্যবস্থা নিতে মরিয়া দিল্লি। এই ঘটনায় আবারও উঠছে প্রশ্ন, আবারও কি ভারত সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের মতো কোনো পদক্ষেপ নেবে?

 

ভারতীয় বিশেষজ্ঞদের দাবি, ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর মতো সেনা অভিযানের সিদ্ধান্ত নেওয়া ভারতের কেন্দ্রীয় নরেন্দ্র মোদি সরকারের পক্ষে বেশ কঠিন। কারণ, সে ক্ষেত্রে পাকিস্তানও পাল্টা ব্যবস্থা নিতে পারে। আগেরবারও সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়ে ভারত সুবিধা করতে পারেনি।

 

গত কয়েক বছরে ভারত-পাকিস্তান পরমাণু অস্ত্রের প্রতিযোগিতা কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ব্যাপারে সম্প্রতি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে ‘ফেডারেশন অফ আমেরিকান সায়েন্টিস্ট’ নামে বিজ্ঞানীদের সংগঠন। সেখানেই দুই দেশের আণবিক অস্ত্রভাণ্ডারের একটি ছবি তুলে ধরার চেষ্টা করেছে তারা।

 

‘ফেডারেশন অফ আমেরিকান সায়েন্টিস্ট’-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে নয়াদিল্লির পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা ১৮০। সেখানে পাক সেনার কাছে আছে ১৭০টি আণবিক অস্ত্র। উল্লেখ্য, বিশ্বের মোট নয়টি দেশের কাছে এই গণবিধ্বংসী হাতিয়ার রয়েছে। ভারত ও পাকিস্তান ছাড়া বাকি দেশগুলি হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স, চিন, উত্তর কোরিয়া এবং ইসরায়েল।

 

কয়েক দিন আগেই একটি অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তিনি কাশ্মীরকে পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ শিরা বলে উল্লেখ করেছেন। সেই সাথে পুরো কাশ্মীর নিয়ন্ত্রণে নেয়ার প্রত্যাশার কথাও জানান পাকিস্তানের সেনা প্রধান। জেনারেল মুনির তার আগে কাশ্মীরের জন্য ভারতের সাথে প্রয়োজনে আরও ১০টি যুদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সবমিলিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করলে, ভারতকে অন্তত শতবার ভাবতে হবে বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা। কারণ, সামরিক সক্ষমতায় ভারতের চেয়ে খুব একটা পিছিয়ে নেই পাকিস্তান। উল্টো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দুই দেশ সমানে সমান।

 

২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপিএফের কনভয়ে আত্মঘাতী হামলা চালায় জইশ-ই-মহম্মদের নামের একটি সংগঠন। তাতে প্রাণ হারান ৪০ জন নিরাপত্তাকর্মী। ওই ঘটনার পর পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার বালাকোটে জইশ ক্যাম্পে বিমানহানা চালায় ভারতীয় বিমান বাহিনী। তবে সেই স্ট্রাইক চালাতে গিয়ে বরং ভারতই বিপদে পড়ে। তাদের পাইলট অভিনন্দন বর্তমানকে ধরে ফেলেছিলো পাকিস্তান। যা ভারতের জন্য ছিলো খুবই বিব্রতকর। এতে নয়াদিল্লি বিমান বাহিনীর দুর্বলতাও পরিষ্কার হয়ে ওঠে। বিপরীতে ডগফাইটে কার্যত বিজয়ী হয়ে তাতে দেশে বীরের তকমা পায় পাকিস্তানের বিমান বাহিনী। তাই মোদিকে ভাবতেই হচ্ছে, আসলে তিনি কি করবেন?

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» মুক্তিযোদ্ধা বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন 

» অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম এখন সর্বোচ্চ

» এক ইলিশ বিক্রি হলো ১০ হাজার টাকায়

» ‘নির্বাচনে জোরপূর্বক জয় ছিনিয়ে নেওয়ার সংস্কৃতি আর চাই না’

» তলানির দিকে যাচ্ছে বিএনপি, সংসদ নির্বাচনে ১০০’র বেশি আসন পাবে না: এনসিপি

» বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কুমিল্লাকে বিভাগ করা হবে : খোন্দকার মোশাররফ

» এয়ারটেল গেমিং এরেনা-এর যাত্রা শুরু, ‘পাবজি মোবাইল’ এর সঙ্গে অংশীদারিত্বের ঘোষণা

» দুর্গাপূজায় ব্র্যাক ব্যাংক কার্ডে পাওয়া যাচ্ছেসর্বোচ্চ ৫৫% ডিসকাউন্ট

» নরসিংদীতে সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনায় তিন আসামীকে কারাগারে

» দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে রেস্টুরেন্ট ও লাইফস্টাইল পণ্য কেনাকাটায় নগদের আকর্ষণীয় ক্যাশব্যাক

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

যে কারণে এবার পাকিস্তানে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালাতে পারবে না ভারত

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক :কাশ্মীরে অস্ত্রধারীদের হামলার ঘটনায় আবারও উত্তপ্ত পাকিস্তান-ভারত রাজনীতি। এই হামলার দায় পুরোপুরি ইসলামাবাদের ওপর চাপিয়েছে নয়াদিল্ল। যদিও পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সরাসরি বলেছেন, পাহেলগাঁও হামলার সাথে তার দেশের কোনো যোগসাজশ নেই। তারপরও পাল্টা ব্যবস্থা নিতে মরিয়া দিল্লি। এই ঘটনায় আবারও উঠছে প্রশ্ন, আবারও কি ভারত সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের মতো কোনো পদক্ষেপ নেবে?

 

ভারতীয় বিশেষজ্ঞদের দাবি, ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর মতো সেনা অভিযানের সিদ্ধান্ত নেওয়া ভারতের কেন্দ্রীয় নরেন্দ্র মোদি সরকারের পক্ষে বেশ কঠিন। কারণ, সে ক্ষেত্রে পাকিস্তানও পাল্টা ব্যবস্থা নিতে পারে। আগেরবারও সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়ে ভারত সুবিধা করতে পারেনি।

 

গত কয়েক বছরে ভারত-পাকিস্তান পরমাণু অস্ত্রের প্রতিযোগিতা কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ব্যাপারে সম্প্রতি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে ‘ফেডারেশন অফ আমেরিকান সায়েন্টিস্ট’ নামে বিজ্ঞানীদের সংগঠন। সেখানেই দুই দেশের আণবিক অস্ত্রভাণ্ডারের একটি ছবি তুলে ধরার চেষ্টা করেছে তারা।

 

‘ফেডারেশন অফ আমেরিকান সায়েন্টিস্ট’-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে নয়াদিল্লির পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা ১৮০। সেখানে পাক সেনার কাছে আছে ১৭০টি আণবিক অস্ত্র। উল্লেখ্য, বিশ্বের মোট নয়টি দেশের কাছে এই গণবিধ্বংসী হাতিয়ার রয়েছে। ভারত ও পাকিস্তান ছাড়া বাকি দেশগুলি হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স, চিন, উত্তর কোরিয়া এবং ইসরায়েল।

 

কয়েক দিন আগেই একটি অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তিনি কাশ্মীরকে পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ শিরা বলে উল্লেখ করেছেন। সেই সাথে পুরো কাশ্মীর নিয়ন্ত্রণে নেয়ার প্রত্যাশার কথাও জানান পাকিস্তানের সেনা প্রধান। জেনারেল মুনির তার আগে কাশ্মীরের জন্য ভারতের সাথে প্রয়োজনে আরও ১০টি যুদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সবমিলিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করলে, ভারতকে অন্তত শতবার ভাবতে হবে বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা। কারণ, সামরিক সক্ষমতায় ভারতের চেয়ে খুব একটা পিছিয়ে নেই পাকিস্তান। উল্টো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দুই দেশ সমানে সমান।

 

২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপিএফের কনভয়ে আত্মঘাতী হামলা চালায় জইশ-ই-মহম্মদের নামের একটি সংগঠন। তাতে প্রাণ হারান ৪০ জন নিরাপত্তাকর্মী। ওই ঘটনার পর পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার বালাকোটে জইশ ক্যাম্পে বিমানহানা চালায় ভারতীয় বিমান বাহিনী। তবে সেই স্ট্রাইক চালাতে গিয়ে বরং ভারতই বিপদে পড়ে। তাদের পাইলট অভিনন্দন বর্তমানকে ধরে ফেলেছিলো পাকিস্তান। যা ভারতের জন্য ছিলো খুবই বিব্রতকর। এতে নয়াদিল্লি বিমান বাহিনীর দুর্বলতাও পরিষ্কার হয়ে ওঠে। বিপরীতে ডগফাইটে কার্যত বিজয়ী হয়ে তাতে দেশে বীরের তকমা পায় পাকিস্তানের বিমান বাহিনী। তাই মোদিকে ভাবতেই হচ্ছে, আসলে তিনি কি করবেন?

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com