ছবি সংগৃহীত
ডেস্ক রিপোর্ট : ২২ গজে সাকিব আল হাসান মানেই বাড়তি সতর্কতা। প্রতিপক্ষের পরিকল্পনায় থাকেন বিশেষ গুরুত্বে। সেটা আন্তর্জাতিক মঞ্চ হোক বা ঘরোয়া লিগ—বাংলাদেশের জার্সি গায়ে বা কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে, সাকিব মানেই এক বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের উপস্থিতি। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে নানা চড়াই-উতরাই পার হয়ে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম সেরা পারফর্মার হিসেবে। যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেরার আসন হারিয়েছেন মাঝে মাঝে, তবে থেমে থাকেননি।
কিন্তু ২০২৩ সালে ক্রিকেট ছাড়িয়ে আরেকটি বড় মঞ্চে নাম লেখান সাকিব—রাজনীতিতে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে বিজয়ী হন তিনি। তবে তার রাজনৈতিক যাত্রা দীর্ঘ হয়নি—মাত্র ছয় মাসের মাথায়, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর, তিনি আর বাংলাদেশে ফিরতে পারেননি। বর্তমানে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।
দীর্ঘ সময় নীরব থাকার পর সম্প্রতি ঢাকার একটি ইংরেজি দৈনিককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে খোলামেলা কথা বলেন সাকিব। সেখানে রাজনীতিতে আসার পেছনের কারণ, বর্তমান পরিকল্পনা ও বিতর্কিত কিছু বিষয় নিয়ে মতামত জানান। রাজনীতিতে যোগদানের কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় অনেক কিছুই আইন অনুযায়ী হয়। ব্যতিক্রম থাকলেও, সেগুলো আসলেই ব্যতিক্রম। আমি মাগুরার মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলাম বলেই রাজনীতিতে এসেছি। আমার উদ্দেশ্য ছিল পরিষ্কার।
শেয়ার বাজার সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়েও সরাসরি প্রতিক্রিয়া দেন সাকিব। তার ভাষায়, “আমি নিজে থেকে শেয়ার বাজারে কোনো লেনদেন করিনি। কেউ যদি এর প্রমাণ দিতে পারে, আমি আমার সমস্ত সম্পত্তি দিয়ে দেব। আসলে আমি শেয়ার বাজারে ট্রেড করতে হয় কীভাবে, সেটাই জানি না।” তিনি জানান, একজনকে বিনিয়োগের জন্য অর্থ দিয়েছিলেন, এবং সে বিনিয়োগে লোকসান হয়েছে।
করোনাকালীন সময়ে কাঁকড়ার খামার নিয়েও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন সাকিব। সাতক্ষীরার দাতিনাখালি এলাকায় অবস্থিত খামারটি পুরোপুরি তার মালিকানাধীন নয় বলে জানান তিনি। সাকিবের দাবি, তিনি শুধু ৩৫ শতাংশের অংশীদার। বাকিদের নাম না উল্লেখ করে শুধুমাত্র তার নাম প্রচার করায় বিরক্তি প্রকাশ করেন তিনি। পুরো ঘটনা খোলাসা করার সুযোগ চান এই অলরাউন্ডার।
রাজনীতি ও বিতর্ক পেরিয়ে সাকিব এখন আবারও ক্রিকেটে ফেরার স্বপ্ন দেখছেন। জাতীয় দলের হয়ে আবার মাঠে নামার ইচ্ছা আছে তার। বিসিবি ও সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গেও এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন বলে জানান। সাকিব মনে করেন, এখনও এক থেকে দুই বছর খেলার মতো সামর্থ্য রয়েছে তার। অবসরের সিদ্ধান্ত তিনি নিতে চান মাঠেই, খেলার মধ্য দিয়েই।