হাসান রাজীব :
সারাবিশ্ব ঘুরে, স্বর্গ, মর্ত্য, পাতাল কাঁপি
তুমি খুঁজিয়াছ যারই
আমি সেই সুহাসিনী, সুমিষ্ট ভাষিণী,
ভগিনী, কন্যা, জায়া, জননী
আমিই সেই নারী।
আমি এলোকেশে কিশোরী
ধু ধু মাঠে অতন্দ্র রাখালের সম্বিত ফিরে পাওয়া।
আমি কাল দিবানিশি, চির মথুরার বাঁশি
রাধিকার সিঁথির সিঁদুরের ঝড়ো হাওয়া
আমি মনসা মঙ্গলের লখিন্দর নিয়ে
বেহুলা সুন্দরীর দেবতার পানে চাওয়া।
আমি মমতাজ, সুলতানা রাজিয়া, দস্যুরানি ফুলন
আমিই মেহেরুন,
আমি মুঘল তখত ভুলিয়া দখল করিয়াছি আসীন
আমি হীন দ্বিধাহীন
তাধিন তাধিন নাচি ভাঙিয়াছি সাপুড়িয়া বীন।
আমি প্রিয়সী, প্রেমিকের কালো চোখে আদিম নেশা
আমি প্রেম, প্রণয় ভালোবাসার অমোঘ টান,
আমি সাধিয়াছি বীণার ঝংকৃত সরব
শত নদী তটে সুরের মূর্ছনা তুলি
আমি মাতা মেরি, গৌরি, মাদাম কুরি, হিন্দা।
আমিই জগতের মাতা
আমি সুখের সংসার ভাঙিয়া
আবার গড়িয়াছি তা
আমি বিমাতা।
আমি সুয়োরানি
কুলবধূ, ষোড়শী, অবলা
আমি দিনের সুরুজ, রাতের তারায় চাঁদনির কথাবলা
আমি বসরার তপসী, মহামায়া, আনন্দময়ী
সহাস্য উর্বশীর সচকিত চাহনী
আমি দুয়োরানি।
আমি গান ভালোবাসি, আমি সঙ্গীত, আমি সুর
আমি জগতের বুকে কীংকর, সুর-অসুরে শঙ্কর
আমি বিশ্ব ভূবনে যাহা করি ঠিক
সহসা আমাকে বলিবে না ধিক।
কেননা আমি নারী
এ আমার আজন্ম অহঙ্কার
আমি অরফিয়াসের বীণা
বনদেবী ইউরিডিসি।
বিধ্বস্ত বিনাশী দুর্গা, সরস্বতী
নিয়তির রীতি আমি
ট্রয়ের হেলেন, আমি চন্দ্রদেবী ডায়ানা।
আমি জন্মেছি সৃষ্টির লক্ষ্যে
স্রষ্টার (দেবরাজ জুপিটার) ললাট ফেঁড়ে
আমি যুদ্ধাংদেহী মিনার্ভা।
আমি কবির কবিতা
কিশোরীর নূপুরের রিনিঝিনি তান
মোনালিসা ভিঞ্চির, গোর্কির লুদমিলা।
আমি নিভৃতে বাংলার পল্লীবালা।
আমিই সেই নারী
গন্ধমপিয়াসী চির বুভুক্ষ আত্মা
আমি ধরিত্রীর বুকে আজীবন গাঁথিয়াছি মানবীয় সত্তা। সূূএ: পরিবর্তন ডটকম