মোদিকে কেন আবু সাঈদের প্রতিকৃতি দিলেন না ড. ইউনূস

ছবি সংগৃহীত

 

ডেস্ক রিপোর্ট : ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রথমবারের মতো দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। বৈঠকে নরেন্দ্র মোদিকে একটি বিশেষ ছবির ফ্রেম উপহার দিয়েছেন ড. ইউনূস। যা নিয়ে নানা মহলে উঠেছে প্রশ্ন। ফেসবুক পোস্টে যা পরিষ্কার করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

 

সাধারণত প্রধান উপদেষ্টা বিদেশি রাষ্ট্রদূত কিংবা রাষ্ট্রপ্রধানদের উপহার হিসেবে ‘art of triumph’ নামে জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আঁকা দেয়ালচিত্রের একটি বই উপহার দিয়ে থাকেন। যে বইটির মোড়কে থাকে জুলাই আন্দোলনে শহিদ আবু সাঈদের প্রতিকৃতি। তবে এবার এর ব্যতিক্রম দেখা গেল নরেন্দ্র মোদির ক্ষেত্রে। স্বাভাবিক কারণেই বিষয়টি নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

 

মোদিকে উপহার দেওয়া নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুকে পোস্টে জানানো হয়েছে, ‘শুক্রবার ব্যাংককে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সময় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একটি ছবি উপহার দিয়েছেন। ছবিটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৩ জানুয়ারি, ২০১৫ সালে মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত ১০২তম ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসে অধ্যাপক ইউনূসকে স্বর্ণপদক প্রদানের সময় দিয়েছিলেন।

 

মোদিকে আবু সাঈদের ছবির পরিবর্তে ড. ইউনূসকে দেওয়া স্বর্ণপদক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। ফেসবুকে যার ব্যাখ্যা দিয়েছেন আইন উপদেষ্টা। অবশ্য সেই ব্যাখ্যাটা তিনি দেননি। সুমন রহমানের দেওয়া একটি পোস্ট নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেছেন তিনি।

 

পোস্টটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-

প্রফেসর ইউনুস নরেন্দ্র মোদিরে আবু সাঈদের প্রতিকৃতি দিলেন না কেন?

 

কারণটা চাণক্য বলে গেছেন: সোজা গাছ আগে কাটা পড়ে। আবু সাঈদের প্রতিকৃতি দিলে সোজাসাপ্টা হিরোইজম হইত, কিন্তু কূটনীতি জটিল জায়গা। ভারত চাণক্যনীতি অনুযায়ী চলে। তাকে তার গ্রামার দিয়েই মোকাবিলা করতে হবে। ইউনূস কূটনীতি করছেন, হিরোইজম না। তার লক্ষ্য, ভারতকে আলোচনার টেবিলে আনা। সেই মেকানিজম করার জন্য তাকে চাণক্যের মান্ডালা থিওরি (তোমার পাশের দেশ যদি শত্রুরাষ্ট্র হয়, তবে তার পাশের দেশ তোমার বন্ধু) আর নবীজীর পরামর্শ মোতাবেক সুদূর চীন দেশ যাইতে হইছে।

ভারত কেন আলোচনার টেবিলে বসতে রাজি হইল? কারণ, এখানে প্রফেসর ইউনূস কৌটিল্যের দ্বৈতনীতি এস্তেমাল করছেন। একদিকে চীনের সঙ্গে ব্যবসা সম্প্রসারণ করতেছেন, আবার পাইপলাইনে পাকিস্তানও আছে। আর ভারতের দিকে বাড়ায়ে দিছেন ভূরাজনৈতিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতার হাত। ফলে ভারতের পক্ষে রাজনৈতিক দূরত্ব ঘোচানো ছাড়া আর কোনো উপায় বাকি থাকল না। তাছাড়া জনমদুঃখী সাত ভগিনীর দুঃখের কথা যে ইউনুস অলরেডি বলে দিছেন! দুঃখমুক্তির উপায়ও বাতলায়ে দিছেন। অর্থাৎ প্যান্ডোরার বাক্স খুইলা গেছে।

 

এইটাই মোক্ষম ইউনূস-ডিপ্লোমেসি। দ্য সার্তিও কহেন, দুর্বলের প্রধান অস্ত্র হল, সে সবলের ভাষা ও ট্যাকটিককে এমনভাবে ওয়েপনাইজ করে যে সবল তার নিজের অস্ত্রকেই চিনতে পারে না। বা যখন পারে, তখন দেরি হয়ে যায়। সেটাই ঘটেছে আজ। মোদি তার চাণক্যনীতির অশনিসংকেত দেখতে পেয়েই আলোচনায় বসেছেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» রাতেই ঢাকাসহ ১০ জেলায় ঝড়ের শঙ্কা, নদীবন্দরে সতর্কসংকেত

» ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে মুখে কালো কাপড় বেঁধে অবস্থান করবে ছাত্রদল

» ভারতে ওয়াকফ বিল পাস হওয়ায় যে প্রতিক্রিয়া জানাল বিএনপি

» ফ্যাসিষ্টের দোসর ও নব্য বিএনপি থেকে সাবধান : মজনু

» আমিরাতের সহযোগিতায় ৮ বিভাগে হবে স্পোর্টস হাব : ক্রীড়া উপদেষ্টা

» সত্য প্রকাশই হোক গণমাধ্যমের একমাত্র অঙ্গীকার: কাদের গনি চৌধুরী

» ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ : ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দুই চিঠি যাবে যুক্তরাষ্ট্রে

» জয়পুরহাটে রুটি বানানোর কারিগরের রডের আঘাতে ওয়েটারের মৃত্যুর

» সুন্দরবনে মধু আহরণ করতে গেলেন ৬ শতাধিক মৌয়ালী,মৌসুম শুরু হতে যাচ্ছে ৭ এপ্রিল   

» ইসলামপুরে সাংবাদিকদের সাথে জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতৃবৃন্দের মত বিনিময় 

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

মোদিকে কেন আবু সাঈদের প্রতিকৃতি দিলেন না ড. ইউনূস

ছবি সংগৃহীত

 

ডেস্ক রিপোর্ট : ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রথমবারের মতো দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। বৈঠকে নরেন্দ্র মোদিকে একটি বিশেষ ছবির ফ্রেম উপহার দিয়েছেন ড. ইউনূস। যা নিয়ে নানা মহলে উঠেছে প্রশ্ন। ফেসবুক পোস্টে যা পরিষ্কার করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

 

সাধারণত প্রধান উপদেষ্টা বিদেশি রাষ্ট্রদূত কিংবা রাষ্ট্রপ্রধানদের উপহার হিসেবে ‘art of triumph’ নামে জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আঁকা দেয়ালচিত্রের একটি বই উপহার দিয়ে থাকেন। যে বইটির মোড়কে থাকে জুলাই আন্দোলনে শহিদ আবু সাঈদের প্রতিকৃতি। তবে এবার এর ব্যতিক্রম দেখা গেল নরেন্দ্র মোদির ক্ষেত্রে। স্বাভাবিক কারণেই বিষয়টি নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

 

মোদিকে উপহার দেওয়া নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুকে পোস্টে জানানো হয়েছে, ‘শুক্রবার ব্যাংককে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সময় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একটি ছবি উপহার দিয়েছেন। ছবিটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৩ জানুয়ারি, ২০১৫ সালে মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত ১০২তম ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসে অধ্যাপক ইউনূসকে স্বর্ণপদক প্রদানের সময় দিয়েছিলেন।

 

মোদিকে আবু সাঈদের ছবির পরিবর্তে ড. ইউনূসকে দেওয়া স্বর্ণপদক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। ফেসবুকে যার ব্যাখ্যা দিয়েছেন আইন উপদেষ্টা। অবশ্য সেই ব্যাখ্যাটা তিনি দেননি। সুমন রহমানের দেওয়া একটি পোস্ট নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেছেন তিনি।

 

পোস্টটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-

প্রফেসর ইউনুস নরেন্দ্র মোদিরে আবু সাঈদের প্রতিকৃতি দিলেন না কেন?

 

কারণটা চাণক্য বলে গেছেন: সোজা গাছ আগে কাটা পড়ে। আবু সাঈদের প্রতিকৃতি দিলে সোজাসাপ্টা হিরোইজম হইত, কিন্তু কূটনীতি জটিল জায়গা। ভারত চাণক্যনীতি অনুযায়ী চলে। তাকে তার গ্রামার দিয়েই মোকাবিলা করতে হবে। ইউনূস কূটনীতি করছেন, হিরোইজম না। তার লক্ষ্য, ভারতকে আলোচনার টেবিলে আনা। সেই মেকানিজম করার জন্য তাকে চাণক্যের মান্ডালা থিওরি (তোমার পাশের দেশ যদি শত্রুরাষ্ট্র হয়, তবে তার পাশের দেশ তোমার বন্ধু) আর নবীজীর পরামর্শ মোতাবেক সুদূর চীন দেশ যাইতে হইছে।

ভারত কেন আলোচনার টেবিলে বসতে রাজি হইল? কারণ, এখানে প্রফেসর ইউনূস কৌটিল্যের দ্বৈতনীতি এস্তেমাল করছেন। একদিকে চীনের সঙ্গে ব্যবসা সম্প্রসারণ করতেছেন, আবার পাইপলাইনে পাকিস্তানও আছে। আর ভারতের দিকে বাড়ায়ে দিছেন ভূরাজনৈতিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতার হাত। ফলে ভারতের পক্ষে রাজনৈতিক দূরত্ব ঘোচানো ছাড়া আর কোনো উপায় বাকি থাকল না। তাছাড়া জনমদুঃখী সাত ভগিনীর দুঃখের কথা যে ইউনুস অলরেডি বলে দিছেন! দুঃখমুক্তির উপায়ও বাতলায়ে দিছেন। অর্থাৎ প্যান্ডোরার বাক্স খুইলা গেছে।

 

এইটাই মোক্ষম ইউনূস-ডিপ্লোমেসি। দ্য সার্তিও কহেন, দুর্বলের প্রধান অস্ত্র হল, সে সবলের ভাষা ও ট্যাকটিককে এমনভাবে ওয়েপনাইজ করে যে সবল তার নিজের অস্ত্রকেই চিনতে পারে না। বা যখন পারে, তখন দেরি হয়ে যায়। সেটাই ঘটেছে আজ। মোদি তার চাণক্যনীতির অশনিসংকেত দেখতে পেয়েই আলোচনায় বসেছেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com