ছবি সংগৃহীত
ডেস্ক রিপোর্ট : বিদেশি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীদের এ পদক্ষেপের নিশানা করা হয়েছে। ফলে অন্তত ৩০০ বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
শুক্রবার ( ২৮ মার্চ) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ দমনের অংশ হিসেবে কমপক্ষে ৩০০ বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। গুয়ানা সফরকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ৩০০-এর বেশি ভিসা বাতিল হতে পারে। আমরা প্রতিদিন এই কাজ করছি—যতক্ষণ না এই উন্মত্তদের খুঁজে বের করা হচ্ছে।
এর আগে, টাফ্টস ইউনিভার্সিটির তুরস্কের এক ডক্টরাল শিক্ষার্থী রুমেইসা ওজতুর্ককে গ্রেপ্তার করে মার্কিন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। মাস্ক পরা পুলিশ তাকে বোস্টনের বাইরে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
২১ বছর বয়সী ওজতুর্ক ফুলব্রাইট স্কলারশিপপ্রাপ্ত এবং এফ-১ ভিসায় টাফ্টসে শিশু বিকাশ ও মানব উন্নয়ন বিষয়ে ডক্টরাল করছেন। রুবিও তার ভিসা বাতিলের কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, যদি কোনো শিক্ষার্থী ভিসার জন্য আবেদন করে এবং বলে যে সে শুধু পড়াশোনা করতে আসছে না, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুর, ছাত্রদের হয়রানি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির আন্দোলনে অংশ নেবে—তাহলে আমরা তাকে ভিসা দেব না।
ওজতুর্কের আইনজীবী মাহসা খানবাবাই বলেছেন, বাকস্বাধীনতার অধিকারের ব্যবহারই তাকে গ্রেপ্তারের দিকে ঠেলে দিয়েছে। তিনি গত বছর টাফ্টসের স্টুডেন্ট পত্রিকায় একটি কলাম লিখেছিলেন, যেখানে ইসরায়েল-সম্পর্কিত কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগ বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়।
এই গ্রেপ্তার ইসরায়েল-বিরোধী বিক্ষোভে জড়িত বিদেশি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলোর মধ্যে সর্বশেষ। ট্রাম্প প্রশাসন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্ট ব্যবহার করে, যা ইসরায়েল-বিরোধী কার্যকলাপকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে।
কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির ফিলিস্তিনি সক্রিয়তাবাদী মাহমুদ খলিলও অভিযোগ ছাড়াই লুইজিয়ানার একটি ডিটেনশন সেন্টারে আটক রয়েছেন। ওজতুর্ককেও সেখানে নেওয়া হয়েছে, যদিও ম্যাসাচুসেটসের একটি আদালত তাকে স্থানীয়ভাবে আটক রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
ডেমোক্র্যাট সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন এই গ্রেপ্তারকে নাগরিক স্বাধীনতা হরণের উদ্বেগজনক চিত্র বলে অভিযুক্ত করেছেন। এদিকে, আরেক কলাম্বিয়া শিক্ষার্থী ইউনসেও চুং-এর ডিপোর্টেশন রোধে আদালতের নির্দেশ এসেছে।
রুবিও স্পষ্ট করে বলেন, শিক্ষার্থীদের ভিসা দেওয়া হয় ডিগ্রি অর্জনের জন্য, ক্যাম্পাসে অরাজকতা সৃষ্টির জন্য নয়। যদি কেউ ভিসা পেতে মিথ্যা বলে এবং পরে এমন আচরণ করে, আমরা তা বাতিল করব।