নামাজ না পড়লে রোজার সওয়াব পাওয়া যাবে?

ছবি সংগৃহীত

 

ধর্ম ডেস্ক  :নামাজ ও রোজা দুটোই ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ রুকন এবং ফরজ ইবাদত। নামাজ দিনে ৫ ওয়াক্ত করে ১২ মাসই আদায় করতে হয়। আর রোজা শুধু রমজান মাসে ফরজ। একজন মুসলমান বছরজুড়ে নামাজ আদায় করবেন—এটি যেমন স্বাভাবিক, তদ্রুপ রমজানের রোজাও রাখবেন। এখানে কোনোটাই ওজর ছাড়া বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই।

 

মুসলমান শুধু রোজা রাখবেন, নামাজ পড়বেন না—এমনটা হতে পারে না। নামাজ ছেড়ে দেওয়ার কোনো সুযোগই রাখেনি ইসলাম। ঈমান ও কুফরের মধ্যে মূল পার্থক্যই হলো নামাজ। নামাজ না পড়াকে মহানবী (স.) কুফরি কাজ ও কাফিরের স্বভাব বলে হুঁশিয়ার করেছেন। এক হাদিসে জাবির (রা.) বলেন, আমি নবী (স.)-কে বলতে শুনেছি, বান্দা এবং শিরক-কুফরের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে সালাত ছেড়ে দেওয়া। (মুসলিম: ১৪৮) হজরত বুরাইদা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, আমাদের ও তাদের (কাফেরদের) মধ্যে (মুক্তির) যে প্রতিশ্রুতি আছে তা হলো নামাজ। সুতরাং যে ব্যক্তি নামাজ ছেড়ে দেয়, সে কুফুরি কাজ করে। (তিরমিজি: ২৬২১) অন্য হাদিসে এসেছে, ‘যার ভেতর নামাজ নেই, তার ভেতর দ্বীনের কোনো অংশ নেই। (মুসনাদে বাজ্জার: ৮৫৩৯)

নামাজ না পড়লে আমল নষ্ট হয় বলেও নবীজি (স.) উম্মতকে সতর্ক করেছেন। এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন— مَنْ تَرَكَ صَلاةَ الْعَصْرِ فَقَدْ حَبِطَ عَمَلُهُ ‘যে ব্যক্তি আছরের নামাজ ত্যাগ করে তার আমল নিষ্ফল হয়ে যায়।’ (বুখারি: ৫২০)

 

ইমাম ইবনুল কায়্যিম (রহ) এই হাদিসের মর্মার্থ আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, ‘বেনামাজি দুই ধরণের-১. পুরোপুরিভাবে ত্যাগ করা বা কোনো নামাজই না পড়া। এ ব্যক্তির সমস্ত আমল বিফলে যাবে। ২. বিশেষ কোনোদিন বিশেষ কোনো নামাজ ত্যাগ করা। এক্ষেত্রে তার বিশেষ দিনের আমল বিফলে যাবে। অর্থাৎ সার্বিকভাবে নামাজ ত্যাগ করলে তার সার্বিক আমল বিফলে যাবে। আর বিশেষ নামাজ ত্যাগ করলে বিশেষ আমল বিফলে যাবে।’ (আস সালাত পৃ-৬৫)

 

অতএব, নামাজ ছেড়ে দিয়ে রোজার সওয়াব পাওয়া যাবে—এমন মনে করা উচিত হবে না; বরং সওয়াব না পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার, নামাজ না পড়ে রোজা রাখলে রোজা আদায় হবে না; এমনটাও বলা যায় না। কারণ নামাজ ও রোজা দুটো স্বতন্ত্র ইবাদত। এজন্য আমরা এমন ব্যক্তিকে বলবো, নামাজ পড়ুন, রোজাও রাখুন। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে সেই তাওফিক দান করুন। আমিন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» রাজধানীতে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে ১৫৮২ মামলা

» পুলিশ হত্যা মামলা; আরাভ খানসহ ৮ জনের রায় ফের পেছাল

» বিএফআইডিসির রাবার বাগানের ৩৮ হাজার একর জমির লিজ নবায়ন

» পরিবারসহ নাঈমুল ইসলাম খানের ১৬৩ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

» সাম্প্রদায়িক সহিংসতা প্রতিরোধে বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি এ অঞ্চলের মডেল হতে পারে: মাহফুজ আলম

» বিএনপি সবাইকে নিয়ে ভালো থাকতে চায়: আফরোজা আব্বাস

» জানা গেল কবে বিয়ে করছেন মধুমিতা

» সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খানের চাচাতো ভাই রংপুরে গ্রেফতার

» জাতীয় স্মৃতিসৌধে সর্বসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

» ফেসবুক স্টোরি থেকে আয়ের সুযোগ

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

নামাজ না পড়লে রোজার সওয়াব পাওয়া যাবে?

ছবি সংগৃহীত

 

ধর্ম ডেস্ক  :নামাজ ও রোজা দুটোই ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ রুকন এবং ফরজ ইবাদত। নামাজ দিনে ৫ ওয়াক্ত করে ১২ মাসই আদায় করতে হয়। আর রোজা শুধু রমজান মাসে ফরজ। একজন মুসলমান বছরজুড়ে নামাজ আদায় করবেন—এটি যেমন স্বাভাবিক, তদ্রুপ রমজানের রোজাও রাখবেন। এখানে কোনোটাই ওজর ছাড়া বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই।

 

মুসলমান শুধু রোজা রাখবেন, নামাজ পড়বেন না—এমনটা হতে পারে না। নামাজ ছেড়ে দেওয়ার কোনো সুযোগই রাখেনি ইসলাম। ঈমান ও কুফরের মধ্যে মূল পার্থক্যই হলো নামাজ। নামাজ না পড়াকে মহানবী (স.) কুফরি কাজ ও কাফিরের স্বভাব বলে হুঁশিয়ার করেছেন। এক হাদিসে জাবির (রা.) বলেন, আমি নবী (স.)-কে বলতে শুনেছি, বান্দা এবং শিরক-কুফরের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে সালাত ছেড়ে দেওয়া। (মুসলিম: ১৪৮) হজরত বুরাইদা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, আমাদের ও তাদের (কাফেরদের) মধ্যে (মুক্তির) যে প্রতিশ্রুতি আছে তা হলো নামাজ। সুতরাং যে ব্যক্তি নামাজ ছেড়ে দেয়, সে কুফুরি কাজ করে। (তিরমিজি: ২৬২১) অন্য হাদিসে এসেছে, ‘যার ভেতর নামাজ নেই, তার ভেতর দ্বীনের কোনো অংশ নেই। (মুসনাদে বাজ্জার: ৮৫৩৯)

নামাজ না পড়লে আমল নষ্ট হয় বলেও নবীজি (স.) উম্মতকে সতর্ক করেছেন। এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন— مَنْ تَرَكَ صَلاةَ الْعَصْرِ فَقَدْ حَبِطَ عَمَلُهُ ‘যে ব্যক্তি আছরের নামাজ ত্যাগ করে তার আমল নিষ্ফল হয়ে যায়।’ (বুখারি: ৫২০)

 

ইমাম ইবনুল কায়্যিম (রহ) এই হাদিসের মর্মার্থ আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, ‘বেনামাজি দুই ধরণের-১. পুরোপুরিভাবে ত্যাগ করা বা কোনো নামাজই না পড়া। এ ব্যক্তির সমস্ত আমল বিফলে যাবে। ২. বিশেষ কোনোদিন বিশেষ কোনো নামাজ ত্যাগ করা। এক্ষেত্রে তার বিশেষ দিনের আমল বিফলে যাবে। অর্থাৎ সার্বিকভাবে নামাজ ত্যাগ করলে তার সার্বিক আমল বিফলে যাবে। আর বিশেষ নামাজ ত্যাগ করলে বিশেষ আমল বিফলে যাবে।’ (আস সালাত পৃ-৬৫)

 

অতএব, নামাজ ছেড়ে দিয়ে রোজার সওয়াব পাওয়া যাবে—এমন মনে করা উচিত হবে না; বরং সওয়াব না পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার, নামাজ না পড়ে রোজা রাখলে রোজা আদায় হবে না; এমনটাও বলা যায় না। কারণ নামাজ ও রোজা দুটো স্বতন্ত্র ইবাদত। এজন্য আমরা এমন ব্যক্তিকে বলবো, নামাজ পড়ুন, রোজাও রাখুন। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে সেই তাওফিক দান করুন। আমিন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com