হিমায়িত মাংস ও দুধ খাওয়ার জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রচারণা সপ্তাহ

নজরুল ইসলাম তোফা:: বাংলাদেশে নিরাপদ খাদ্যের অভাব আর অসচেতনতার কারণে প্রতিদিন হাজারো মানুষ খাদ্যবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। খোলা বাজারে বিক্রিত মাংস ও দুধ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রক্রিয়াজাত ও সংরক্ষিত হওয়ায় এতে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ও দূষণের ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি থাকে। কিন্তু অনেকেই জানেন না, সঠিক পদ্ধতিতে সংরক্ষিত হিমায়িত দুধ ও মাংসই নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর। তাই সুস্থ থাকতে নিরাপদ খাবার বেছে নিন—হিমায়িত দুধ ও মাংসই হোক আপনার প্রথম পছন্দ!
হিমায়িত মাংস ও দুধ খাওয়ার জন্য নাগরিক জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে ১২ মার্চ থেকে ১৮ মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত “হিমায়িত মাংস ও দুধ খাওয়ার জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রচারণা সপ্তাহ” পালন করা হচ্ছে। বিশ্ব ব্যাংক এর সহায়তায় আইআরজি ডেভলোপমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেড (আইআরজিডিএসএল) ১২ মার্চ ২০২৫, দুপুর ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, ঢাকা তে একটি বিশেষ ক্যাম্পেইন আয়োজন করে।

বাজারে বিক্রি হওয়া অনেক দুধ ও মাংস অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে সংরক্ষিত হয়, যেখানে ধুলোবালি, রোগজীবাণু ও দূষণের মাত্রা অত্যন্ত বেশি। দীর্ঘ সময় খোলা অবস্থায় থাকায় এতে সহজেই ব্যাকটেরিয়া জন্মায়, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়। অপরদিকে, হিমায়িত দুধ ও মাংস উন্নত প্রযুক্তিতে প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণ করা হয়, যা খাবারকে দূষণমুক্ত ও নিরাপদ রাখে এবং এর পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ রাখে।

বিশিষ্ট কৃষি ও প্রাণিসম্পদ অর্থনীতিবিদ ও প্রকল্প টিম লিডার প্রফেসর ড. এস এম ফখরুল ইসলাম, বলেন, আমাদের প্রচলিত ভুল ধারণা ভাঙতে হবে! অনেকেই মনে করেন, ফ্রিজে রাখা খাবারের স্বাদ কমে যায় – এটি ভুল! আধুনিক হিমায়িত সংরক্ষণ পদ্ধতি খাবারের আসল স্বাদ ও গুণগত মান বজায় রাখে।

প্রাণিসম্পদ ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ কৃষিবিদ ড. এস এম রাজিউর রহমান বলেন, খোলা বাজারের মাংস বেশি সতেজ সুস্বাদু হয়– এই বিশ্বাসও ভুল! খোলা বাজারে দীর্ঘ সময় খোলা থাকা মাংস জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হয়ে দ্রুত নষ্ট হতে পারে, যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। একইসাথে, পাস্তুরিত দুধ, ঠাণ্ডা দুধ ও ইউএইচটি দুধ খাঁটি, স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ। এই ধরনের দুধ উচ্চমানের প্রযুক্তিতে জীবাণুমুক্ত করা হয়, যা প্রতিদিনের স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের জন্য অপরিহার্য।

প্রধান অতিথীর বক্তব্যে ঢাকা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বাসনা আক্তার বলেন, বিশ্ব ব্যাংক হিয়ামিত মাংস ও দুধ খাওয়ার জন্য যে সচেতনতা চালাচ্ছে এটা একটা সময়োপযোগী উদ্যোগ। আমরা প্র্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে বিশ্ব ব্যাংক ও আইআরজিকে এই ব্যাপারে যে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। তিনি আরও বলেন, উন্নত বিশ্বের মত সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের জন্য একই মানের নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করতে হবে।

আইআরজিএসএল এই প্রচারণা সপ্তাহে বিভিন্ন ব্যানার, লিফলেট, গণমাধ্যম প্রচার, সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইন এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের সাথে সরাসরি সংলাপের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করতে কাজ করছে। আইআরজিএসএল এর চেয়ারম্যান সুখরঞ্জন সুতার বলেন, নিরাপদ খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হলে জনসচেতনতার বিকল্প নেই। একমাত্র জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা আগামী প্রজন্মের স্বাস্খ্যঝুঁকি কমাতে পারি।

নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ শুধু একটি অভ্যাস নয়, এটি সুস্থ জীবনের অপরিহার্য শর্ত। বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হিমায়িত দুধ ও মাংস খাওয়ার প্রচারণা সপ্তাহ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা জনগণকে সচেতন করার পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্যের গুরুত্ব তুলে ধরছে। খাদ্যবাহিত রোগ প্রতিরোধ, সুস্থতা নিশ্চিত এবং একটি শক্তিশালী ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে তুলতে আমাদের সকলেরই স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর হিমায়িত মাংস ও দুধ বেছে নেওয়া উচিত।

“সচেতন ভোক্তা, স্বাস্থ্যবান পরিবার—নিরাপদ খাবারে হিমায়িত দুধ-মাংসের অগ্রাধিকার!”

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ‘যারা ভোট নেবে তারা যেন হাসিনার মতো রাতে ভোট না করে’

» ইসলামী ব্যাংকিং পশ্চিমা দেশেও জনপ্রিয় হচ্ছে : ধর্ম উপদেষ্টা

» জাতিসংঘ মহাসচিব সংস্কারের ব্যাপারে কোনো কথা বলেননি : ফখরুল

» এককভাবে আর্থিক সহযোগিতাকারীদের নাম প্রকাশ সম্ভব না : নাহিদ

» হেলিকপ্টারে মাগুরা যাওয়া নিয়ে সারজিস বললেন ‘সিট খালি ছিল’

» শাবিতে সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের মাঝে ঈদবস্ত্র বিতরণ

» হত্যার ঘটনায় তিনজন গ্রেফতার

» রাজশাহী স্টেশনে ধূমকেতু ও বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেসের সংঘর্ষ

» ৫ ছিনতাইকারী আটক

» শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের শূন্য পদে দ্রুতই নিয়োগ দেবে সরকার

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

হিমায়িত মাংস ও দুধ খাওয়ার জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রচারণা সপ্তাহ

নজরুল ইসলাম তোফা:: বাংলাদেশে নিরাপদ খাদ্যের অভাব আর অসচেতনতার কারণে প্রতিদিন হাজারো মানুষ খাদ্যবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। খোলা বাজারে বিক্রিত মাংস ও দুধ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রক্রিয়াজাত ও সংরক্ষিত হওয়ায় এতে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ও দূষণের ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি থাকে। কিন্তু অনেকেই জানেন না, সঠিক পদ্ধতিতে সংরক্ষিত হিমায়িত দুধ ও মাংসই নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর। তাই সুস্থ থাকতে নিরাপদ খাবার বেছে নিন—হিমায়িত দুধ ও মাংসই হোক আপনার প্রথম পছন্দ!
হিমায়িত মাংস ও দুধ খাওয়ার জন্য নাগরিক জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে ১২ মার্চ থেকে ১৮ মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত “হিমায়িত মাংস ও দুধ খাওয়ার জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রচারণা সপ্তাহ” পালন করা হচ্ছে। বিশ্ব ব্যাংক এর সহায়তায় আইআরজি ডেভলোপমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেড (আইআরজিডিএসএল) ১২ মার্চ ২০২৫, দুপুর ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, ঢাকা তে একটি বিশেষ ক্যাম্পেইন আয়োজন করে।

বাজারে বিক্রি হওয়া অনেক দুধ ও মাংস অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে সংরক্ষিত হয়, যেখানে ধুলোবালি, রোগজীবাণু ও দূষণের মাত্রা অত্যন্ত বেশি। দীর্ঘ সময় খোলা অবস্থায় থাকায় এতে সহজেই ব্যাকটেরিয়া জন্মায়, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়। অপরদিকে, হিমায়িত দুধ ও মাংস উন্নত প্রযুক্তিতে প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণ করা হয়, যা খাবারকে দূষণমুক্ত ও নিরাপদ রাখে এবং এর পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ রাখে।

বিশিষ্ট কৃষি ও প্রাণিসম্পদ অর্থনীতিবিদ ও প্রকল্প টিম লিডার প্রফেসর ড. এস এম ফখরুল ইসলাম, বলেন, আমাদের প্রচলিত ভুল ধারণা ভাঙতে হবে! অনেকেই মনে করেন, ফ্রিজে রাখা খাবারের স্বাদ কমে যায় – এটি ভুল! আধুনিক হিমায়িত সংরক্ষণ পদ্ধতি খাবারের আসল স্বাদ ও গুণগত মান বজায় রাখে।

প্রাণিসম্পদ ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ কৃষিবিদ ড. এস এম রাজিউর রহমান বলেন, খোলা বাজারের মাংস বেশি সতেজ সুস্বাদু হয়– এই বিশ্বাসও ভুল! খোলা বাজারে দীর্ঘ সময় খোলা থাকা মাংস জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হয়ে দ্রুত নষ্ট হতে পারে, যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। একইসাথে, পাস্তুরিত দুধ, ঠাণ্ডা দুধ ও ইউএইচটি দুধ খাঁটি, স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ। এই ধরনের দুধ উচ্চমানের প্রযুক্তিতে জীবাণুমুক্ত করা হয়, যা প্রতিদিনের স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের জন্য অপরিহার্য।

প্রধান অতিথীর বক্তব্যে ঢাকা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বাসনা আক্তার বলেন, বিশ্ব ব্যাংক হিয়ামিত মাংস ও দুধ খাওয়ার জন্য যে সচেতনতা চালাচ্ছে এটা একটা সময়োপযোগী উদ্যোগ। আমরা প্র্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে বিশ্ব ব্যাংক ও আইআরজিকে এই ব্যাপারে যে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। তিনি আরও বলেন, উন্নত বিশ্বের মত সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের জন্য একই মানের নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করতে হবে।

আইআরজিএসএল এই প্রচারণা সপ্তাহে বিভিন্ন ব্যানার, লিফলেট, গণমাধ্যম প্রচার, সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইন এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের সাথে সরাসরি সংলাপের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করতে কাজ করছে। আইআরজিএসএল এর চেয়ারম্যান সুখরঞ্জন সুতার বলেন, নিরাপদ খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হলে জনসচেতনতার বিকল্প নেই। একমাত্র জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা আগামী প্রজন্মের স্বাস্খ্যঝুঁকি কমাতে পারি।

নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ শুধু একটি অভ্যাস নয়, এটি সুস্থ জীবনের অপরিহার্য শর্ত। বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হিমায়িত দুধ ও মাংস খাওয়ার প্রচারণা সপ্তাহ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা জনগণকে সচেতন করার পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্যের গুরুত্ব তুলে ধরছে। খাদ্যবাহিত রোগ প্রতিরোধ, সুস্থতা নিশ্চিত এবং একটি শক্তিশালী ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে তুলতে আমাদের সকলেরই স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর হিমায়িত মাংস ও দুধ বেছে নেওয়া উচিত।

“সচেতন ভোক্তা, স্বাস্থ্যবান পরিবার—নিরাপদ খাবারে হিমায়িত দুধ-মাংসের অগ্রাধিকার!”

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com