ছবি সংগৃহীত
অনলাইন ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে মুসলমানদের পবিত্র মাস রমজান। সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রমজান মাস শুরু হয়েছে শুক্রবার সন্ধ্যায় চাঁদ দেখার মধ্যদিয়ে। পরদিন শনিবার সন্ধ্যায় চাঁদ দেখার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশসহ আরও অনেক দেশে পবিত্র মাহে রমজান শুরু হয়েছে।
সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত উপবাস পালন করছেন বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমান। ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ রোজা আত্মসংযম ও তাকওয়ার শিক্ষা দেয়। তবে বিশ্বের সব দেশে এক সময়ের জন্য রোজা রাখা সম্ভব নয়, কারণ ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে দিন ও রাতের দৈর্ঘ্যে পার্থক্য দেখা যায়।
বাংলাদেশের মতো দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোতে প্রায় ১৩-১৪ ঘণ্টা রোজা রাখতে হয়। কিন্তু উত্তর ইউরোপের কিছু দেশে দীর্ঘদিনের কারণে মুসল্লিদের ২০ ঘণ্টারও বেশি সময় না খেয়ে থাকতে হয়। চলুন, জেনে নিই সেই দেশগুলোর কথা, যেখানে মুসলমানরা সবচেয়ে দীর্ঘ সময় রোজা পালন করেন।
সুইডেন (কিরুনা)
সুইডেনের উত্তরাঞ্চলীয় শহর কিরুনার মুসল্লিরা এ বছর ২০ ঘণ্টা ৩০ মিনিট রোজা রাখবেন। সেখানে গ্রীষ্মকালে সূর্য দীর্ঘক্ষণ আকাশে থাকে, ফলে দিন দীর্ঘতর হয়। এতে মুসল্লিদের ইফতারের পর খুব অল্প সময়েই সেহরি খাওয়ার প্রস্তুতি নিতে হয়।
নরওয়ে (ট্রমসো ও অন্যান্য শহর)
নরওয়ের মুসলমানদেরও প্রায় ২০ ঘণ্টা ৩০ মিনিট রোজা রাখতে হবে। বিশেষ করে দেশটির উত্তরাঞ্চলে, যেমন ট্রমসো শহরে, গ্রীষ্মকালে সূর্য প্রায় পুরো সময়ই আকাশে অবস্থান করে।
ফিনল্যান্ড (হেলসিঙ্কি ও উত্তরাঞ্চল)
ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিঙ্কির মুসল্লিরা ১৯ ঘণ্টা ৯ মিনিট রোজা রাখবেন। তবে দেশটির উত্তরের শহরগুলোর বাসিন্দাদের আরও দীর্ঘ সময় উপবাস থাকতে হয়।
ডেনমার্ক ও আইসল্যান্ড
ডেনমার্ক ও আইসল্যান্ডেও দীর্ঘ সময় ধরে রোজা রাখতে হয়, যেখানে মুসলমানরা প্রায় ১৯-২০ ঘণ্টা রোজা রাখেন।
কেন এসব দেশে এত দীর্ঘ রোজা?
পৃথিবীর নিজ অক্ষে ঘূর্ণন ও সূর্যের অবস্থানের কারণে বিভিন্ন স্থানে দিন ও রাতের দৈর্ঘ্য ভিন্ন হয়ে থাকে। বিশ্বের বেশিরভাগ অঞ্চলে (যেমন বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, সৌদি আরব) দিন-রাতের পার্থক্য তুলনামূলকভাবে কম।
কিন্তু মেরু অঞ্চলের কাছাকাছি দেশগুলোতে গ্রীষ্মকালে দিন দীর্ঘ হয় এবং রাত খুব সংক্ষিপ্ত হয়ে আসে। ফলে মুসলমানদের দীর্ঘ সময় উপবাস রাখতে হয়।
যেসব দেশে সূর্য অস্ত যায় না, তারা কীভাবে রোজা রাখেন?
উত্তর মেরুর কাছাকাছি কিছু অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে সূর্য পুরোপুরি অস্ত যায় না। যেমন, নরওয়ের কিছু শহর, আইসল্যান্ড, সুইডেনের কিরুনা- এখানে সূর্য প্রায় সারা দিন দিগন্তে অবস্থান করে।
এমন পরিস্থিতিতে ইসলামিক স্কলাররা পরামর্শ দেন, মক্কা বা কাছাকাছি কোনো শহরের সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের সময় অনুসরণ করে রোজা রাখা যেতে পারে। আবার কেউ কেউ নিকটবর্তী কোনো দেশের সময় অনুসরণ করেও রোজা রাখেন।
সবচেয়ে কম সময়ের রোজা কোথায়?
বিশ্বের কিছু দেশে রোজার সময় তুলনামূলকভাবে কম হয়। যেমন আর্জেন্টিনার উশুয়াইয়া শহরে মুসলমানরা সবচেয়ে কম সময়, মাত্র ১২ ঘণ্টার কাছাকাছি রোজা পালন করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে প্রায় ১১-১২ ঘণ্টা রোজার সময় হয়। অস্ট্রেলিয়ার মুসলমানরাও তুলনামূলকভাবে স্বল্প সময়ের রোজা রাখেন। সূত্র : গালফ নিউজ।