৮৫ নির্বাচন কর্মকর্তাকে চাকরি ফেরত দেওয়ার নির্দেশ

ফাইল ফটো

 

অনলাইন ডেস্ক : ১৮ বছর আগে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে চাকরিচ্যুত ৮৫ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সেই সঙ্গে এই সব কর্মকর্তাকে সব সুযোগ সুবিধাও ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। একইসঙ্গে যেই তিনজন কর্মকর্তা মারা গেছেন মামলা চলাবস্থায় তাদের পরিবারকেও সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

 

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

 

এর আগে এ সংক্রান্ত আপিল ও পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) আবেদনের ওপর পৃথক আবেদনের শুনানি শেষে গত বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ রায়ের এই দিন ঠিক করেন।

 

আদালতে এ দিন আপিলকারীর পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। পুনর্বিবেচনার আবেদনের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী ও মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া।

 

আইনজীবীদের তথ্যমতে, ২০০৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে ৩২৭ জনকে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে অস্থায়ীভাবে নির্বাচিত করা হয়। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ের এই নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক ওঠে। ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ৩২৭ জনের মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ৮৫ জনকে একই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর চাকরিচ্যুত করা হয়। এর বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুত প্রার্থীরা মামলা করলে ২০০৯ সালের ২৩ মার্চ তা খারিজ করে রায় দেন প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল। এর বিরুদ্ধে তারা আপিল করেন। ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল ৮৫ কর্মকর্তার আপিল মঞ্জুর করে চাকরিতে পুনর্বহালের পক্ষে রায় দেন।

 

প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক চারটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত ২০১০ সালের ২৯ এপ্রিল আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেন, বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে সরকারপক্ষ পৃথক আপিল করে। সরকারপক্ষের করা আপিলগুলো মঞ্জুর করে ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর রায় দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এই রায়ে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল দেওয়া রায় (৮৫ কর্মকর্তাকে চাকরিতে পুনর্বহালের পক্ষে) বাতিল করা হয়।

 

আপিল বিভাগের ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে ২০২৩ সালে পৃথক পাঁচটি আবেদন করেন চাকরিচ্যুত ব্যক্তিরা। শুনানি নিয়ে একটি রিভিউ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ গত বছরের ৬ নভেম্বর লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি) মঞ্জুর করে আদেশ দেন। একই সঙ্গে এই আপিলের (রিভিউ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত) সারসংক্ষেপ চার সপ্তাহের মধ্যে দায়ের করতে আবেদনকারীপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এই আপিলের সঙ্গে অপর চারটি রিভিউ আবেদন শুনানিতে থাকবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় শুনানি হয়।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আমরা ডিসেম্বরে নির্বাচন করতে পারব : ইসি আনোয়ারুল ইসলাম

» নতুন ছাত্র সংগঠনকে শুভকামনা জানিয়ে যা বললেন শিবির সভাপতি

» নির্বাচন নিয়ে কোনো বিভাজন যাতে তৈরি না হয়: মির্জা ফখরুল

» শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী রাজনীতি চলতে দেওয়া হবে না: ছাত্রদল সভাপতি

» মির্জা ফখরুলের সঙ্গে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

» ভেজাল মদ্যপানে তুরস্কে ১৫২ জনের মৃত্যু

» ২৫ মার্চ সারাদেশে পালন করা হবে এক মিনিট প্রতীকী ব্ল্যাক আউট

» ‘শান্তিপূর্ণ পরমাণু শক্তির বিকাশে রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা সম্প্রসারণে আগ্রহী বাংলাদেশ’

» অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরও ৬৭৮ জন গ্রেফতার

» নতুন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

৮৫ নির্বাচন কর্মকর্তাকে চাকরি ফেরত দেওয়ার নির্দেশ

ফাইল ফটো

 

অনলাইন ডেস্ক : ১৮ বছর আগে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে চাকরিচ্যুত ৮৫ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সেই সঙ্গে এই সব কর্মকর্তাকে সব সুযোগ সুবিধাও ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। একইসঙ্গে যেই তিনজন কর্মকর্তা মারা গেছেন মামলা চলাবস্থায় তাদের পরিবারকেও সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

 

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

 

এর আগে এ সংক্রান্ত আপিল ও পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) আবেদনের ওপর পৃথক আবেদনের শুনানি শেষে গত বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ রায়ের এই দিন ঠিক করেন।

 

আদালতে এ দিন আপিলকারীর পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। পুনর্বিবেচনার আবেদনের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী ও মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া।

 

আইনজীবীদের তথ্যমতে, ২০০৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে ৩২৭ জনকে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে অস্থায়ীভাবে নির্বাচিত করা হয়। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ের এই নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক ওঠে। ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ৩২৭ জনের মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ৮৫ জনকে একই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর চাকরিচ্যুত করা হয়। এর বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুত প্রার্থীরা মামলা করলে ২০০৯ সালের ২৩ মার্চ তা খারিজ করে রায় দেন প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল। এর বিরুদ্ধে তারা আপিল করেন। ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল ৮৫ কর্মকর্তার আপিল মঞ্জুর করে চাকরিতে পুনর্বহালের পক্ষে রায় দেন।

 

প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক চারটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত ২০১০ সালের ২৯ এপ্রিল আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেন, বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে সরকারপক্ষ পৃথক আপিল করে। সরকারপক্ষের করা আপিলগুলো মঞ্জুর করে ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর রায় দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এই রায়ে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল দেওয়া রায় (৮৫ কর্মকর্তাকে চাকরিতে পুনর্বহালের পক্ষে) বাতিল করা হয়।

 

আপিল বিভাগের ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে ২০২৩ সালে পৃথক পাঁচটি আবেদন করেন চাকরিচ্যুত ব্যক্তিরা। শুনানি নিয়ে একটি রিভিউ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ গত বছরের ৬ নভেম্বর লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি) মঞ্জুর করে আদেশ দেন। একই সঙ্গে এই আপিলের (রিভিউ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত) সারসংক্ষেপ চার সপ্তাহের মধ্যে দায়ের করতে আবেদনকারীপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এই আপিলের সঙ্গে অপর চারটি রিভিউ আবেদন শুনানিতে থাকবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় শুনানি হয়।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com