পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত মানবাধিকার কমিশনকে দেওয়ার সুপারিশ

ছবি : সংগৃহীত

 

আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্ত করার জন্য সরাসরি সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ওপর ন্যস্ত করার জন্য সুপারিশ করেছে পুলিশ সংস্কার কমিশন।

 

কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, যদি কোনো আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দ্বারা বা তাদের প্ররোচনায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোনো অভিযোগ উত্থাপিত হয়; তাহলে সংশ্লিষ্ট সংস্থা প্রধান নিজেই  যাতে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করতে পারেন; সেলক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রধান কার্যালয়েও একটি মানবাধিকার সেল রাখার প্রস্তাব করা হয় সুপারিশে।

 

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে পুলিশ সংস্কার কমিশন এ সুপারিশ করে। কমিশন প্রধান সাবেক সচিব সফর রাজ হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ সংস্কার কমিশনের ৩৫৫ পৃষ্ঠায় দেয়া প্রতিবেদনটি কমিশনের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে।

 

একটি দক্ষ, জনবান্ধব এবং আধুনিক পুলিশ বাহিনী যে কোনো সমাজের অপরিহার্য অংশ। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে অসংখ্য ছাত্র জনতা ও পুলিশ হতাহত হওয়ায় এ বাহিনীর কর্মদক্ষতা এবং কার্যক্রম নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এই পরিস্থিতিতে পুলিশ বাহিনীকে আধুনিক, জনমুখী এবং কার্যকর করে তোলার লক্ষ্যে গঠিত সংস্কার কমিশন প্রতিবেদন দিয়েছে।

 

কমিশন বল প্রয়োগ, আটক, গ্রেফতার, তল্লাশি, জিজ্ঞাসাবাদ, মানবাধিকার, প্রভাবমুক্ত ও জবাবদিহিমূলক বাহিনী গঠন, থানায় জিডি রেকর্ড, মামলা রুজু, তদন্ত ও ভেরিফিকেশনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশ করেছে।

 

সুপারিশমালায় গ্রেফতার, তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনা অবিলম্বে বাস্তবায়নে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। একইসঙ্গে অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে মামলা দেওয়ার অপচর্চা বন্ধ করা, বিচার প্রক্রিয়ায় সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে চূড়ান্তভাবে দোষী সাব্যন্ত না হওয়া পর্যন্ত মিডিয়ার সামনে কাউকে অপরাধী হিসেবে উপস্থাপন না করার সুপারিশ করা হয়েছে।

 

পুলিশের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ও জনবান্ধব পুলিশ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে র‌্যাবের অতীত কার্যক্রম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ পর্যালোচনা করে এর প্রয়োজনীয়তা পুনঃমূল্যায়ন করা যেতে পারে বলে সুপারিশে উল্লেখ করা হয়।

 

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় ছাত্র-জনতাকে হত্যা ও আহত করার জন্য দোষী পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় শাস্তি নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে কমিশন।

সূত্র : বাসস

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূতের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

» মধুর ক্যান্টিনে শিবিরের সংবাদ সম্মেলন, ছাত্রদলের নিন্দা

» সংসদ নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে: আমিনুল হক

» ছাত্রদল নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের পথ অনুসরণ করছে: শিবির সভাপতি

» পদত্যাগ নিয়ে গুঞ্জন, যা বললেন উপদেষ্টা নাহিদ

» জাতীয় স্বার্থে অবিলম্বে নির্বাচন দিন: নজরুল ইসলাম খান

» মিথ্যা সাক্ষী দিতে রাজি না হওয়ায় মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল : বাবর

» রুশ বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করার অঙ্গীকার পুতিনের

» দারিদ্র্য দূরীকরণে যাকাতের বিকল্প নেই : ধর্ম উপদেষ্টা

» অপারেশন ডেভিল হান্টে গ্রেফতার আরও ৫৮৫

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত মানবাধিকার কমিশনকে দেওয়ার সুপারিশ

ছবি : সংগৃহীত

 

আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্ত করার জন্য সরাসরি সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ওপর ন্যস্ত করার জন্য সুপারিশ করেছে পুলিশ সংস্কার কমিশন।

 

কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, যদি কোনো আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দ্বারা বা তাদের প্ররোচনায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোনো অভিযোগ উত্থাপিত হয়; তাহলে সংশ্লিষ্ট সংস্থা প্রধান নিজেই  যাতে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করতে পারেন; সেলক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রধান কার্যালয়েও একটি মানবাধিকার সেল রাখার প্রস্তাব করা হয় সুপারিশে।

 

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে পুলিশ সংস্কার কমিশন এ সুপারিশ করে। কমিশন প্রধান সাবেক সচিব সফর রাজ হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ সংস্কার কমিশনের ৩৫৫ পৃষ্ঠায় দেয়া প্রতিবেদনটি কমিশনের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে।

 

একটি দক্ষ, জনবান্ধব এবং আধুনিক পুলিশ বাহিনী যে কোনো সমাজের অপরিহার্য অংশ। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে অসংখ্য ছাত্র জনতা ও পুলিশ হতাহত হওয়ায় এ বাহিনীর কর্মদক্ষতা এবং কার্যক্রম নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এই পরিস্থিতিতে পুলিশ বাহিনীকে আধুনিক, জনমুখী এবং কার্যকর করে তোলার লক্ষ্যে গঠিত সংস্কার কমিশন প্রতিবেদন দিয়েছে।

 

কমিশন বল প্রয়োগ, আটক, গ্রেফতার, তল্লাশি, জিজ্ঞাসাবাদ, মানবাধিকার, প্রভাবমুক্ত ও জবাবদিহিমূলক বাহিনী গঠন, থানায় জিডি রেকর্ড, মামলা রুজু, তদন্ত ও ভেরিফিকেশনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশ করেছে।

 

সুপারিশমালায় গ্রেফতার, তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনা অবিলম্বে বাস্তবায়নে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। একইসঙ্গে অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে মামলা দেওয়ার অপচর্চা বন্ধ করা, বিচার প্রক্রিয়ায় সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে চূড়ান্তভাবে দোষী সাব্যন্ত না হওয়া পর্যন্ত মিডিয়ার সামনে কাউকে অপরাধী হিসেবে উপস্থাপন না করার সুপারিশ করা হয়েছে।

 

পুলিশের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ও জনবান্ধব পুলিশ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে র‌্যাবের অতীত কার্যক্রম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ পর্যালোচনা করে এর প্রয়োজনীয়তা পুনঃমূল্যায়ন করা যেতে পারে বলে সুপারিশে উল্লেখ করা হয়।

 

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় ছাত্র-জনতাকে হত্যা ও আহত করার জন্য দোষী পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় শাস্তি নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে কমিশন।

সূত্র : বাসস

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com