সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশের ৫৪ বছরের অভিযাত্রায় আমাদের যত অর্জন, সেই অর্জনের পেছনে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের ভূমিকা এবং অবদান আছে। এখানে বিশেষ কোনো জনগোষ্ঠী বা সম্প্রদায় নয়, বরং এ দেশের উন্নয়ন, সমৃদ্ধি এবং উন্নতির পেছনে সব ধর্মের মানুষের অবদান, ত্যাগ এবং তাদের কুরবানি আছে।
শনিবার সকালে রাজশাহী উত্তম মেষপালক ক্যাথেড্রাল চার্চে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। উপদেষ্টা বলেন, একটি বাগানে যদি বিভিন্ন বর্ণের ও সুবাসের ফুল না থাকে, সেটা কোনোদিন বাগান নামে পরিচিত হতে পারে না। এ দেশে নানা ধরনের মানুষ বাস করবে। এখানে মসজিদ থাকবে, মন্দির থাকবে, গির্জা থাকবে, প্যাগোডা থাকবে।
দেশে সবার সমান অধিকার আছে—এমন মন্তব্য করে খালিদ হোসেন বলেন, আমি-আপনি ব্যবসা করতে পারি, বাণিজ্য করতে পারি, কথা বলতে পারি। তবে মাঝে মাঝে কিছু চক্র আমাদের সম্প্রীতি নষ্ট করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। তারা মাঝে মধ্যে সমস্যা তৈরি করে। আমাদের এই ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে, যাতে আমাদের শতবছর ধরে যে প্রীতির বন্ধন বিরাজ করছে, সেটাকে কেউ বিনষ্ট না করতে পারে। কোনো দুর্বৃত্ত যদি কোনো উপাসনালয় অপবিত্র করতে চায়, আমরা তাদের কঠোর হস্তে দমন করবো।
ক্যাথেড্রাল চার্চের ভক্তদের সঙ্গে মিলিত হওয়াকে নিজের খুশির বিষয় উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, আমি যখন কুয়াকাটা গিয়েছি, সাঁওতাল জনগোষ্ঠী, রাখাইন জনগোষ্ঠীর সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। আমি আগে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গবাড়ি ভিজিট করেছি, দুঃখী মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করেছি। আমাদের যেকোনো মূল্যে সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্য রক্ষা করতে হবে। আমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ ধর্ম পালন করবো, এটা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। ধর্মপালন, ধর্মচর্চা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান স্থাপন করার অধিকার আমাদের সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত।
বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে উদাহরণযোগ্য মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, এ দেশ আমাদের সবার, প্রত্যেকে এ দেশকে ভালোবাসবো। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি, তাহলে কোনো শত্রু আমাদের এই অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে পারবে না। আর আমরা হানাহানিতে লিপ্ত হলে, এক শ্রেণির মানুষ ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার সুযোগ পাবে। আমাদের শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করার যে পরিবেশ পূর্বেই তৈরি হয়ে আছে, আগামী দিনে তা আরও বেগবান হবে।
এসময় উপদেষ্টা উত্তম মেষপালক ক্যাথেড্রাল চার্চের সেমেট্রি সংস্কারের জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এবং সেখানকার বিদ্যালয়ের হতদরিদ্র ও প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের জন্য খ্রিস্টান কল্যাণ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে অনুদান সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন।
মতবিনিময় সভায় প্রশাসনের কর্মকর্তা, রাজশাহী ক্যাথেড্রাল ধর্ম প্রদেশের ফাদার ফাবিয়ান মারান্ডী ভিকার জেনারেল, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট জন গোমেজ, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নির্মল রোজারিওসহ চার্চের ভক্ত অনুসারীরা উপস্থিত ছিলেন।