সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ভারত এক ভয়ংকর উদ্দেশ্য নিয়ে বাংলাদেশকে পরাজিত করার জন্য হাসিনাকে সমর্থন করেছে। এখনো করছে। ভারত তাকে আশ্রয় দিয়েছে দিক, কিন্তু শেখ হাসিনা যে মাঝে মধ্যে বক্তব্য রাখছে, এটা কি দিতে পারে? শেখ হাসিনার পাসপোর্ট নেই, ভিসা নেই। ভিসাহীন ব্যক্তি অপরাধী, সেই অপরাধী ব্যক্তি কী করে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারত থেকে কথা বলতে পারে। অথচ ভারত তাকে সেই প্রশ্রয় দিচ্ছে। এখন ভারতের যদি কোনো ক্রিমিনালকে বাংলাদেশ আশ্রয় দেয়, আর এখান থেকে ভারতের বিরুদ্ধে কোনো কর্মকাণ্ড করে ভারত কি তখন ছেড়ে কথা বলবে?
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সভাপতি শহীদ অধ্যাপক আব্দুল ওয়াহেদ মন্ডলের স্মরণসভায় তাহেরপুর হাইস্কুল মাঠে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই যে দাউদ ইব্রাহিম সন্ত্রাসীসহ যে সমস্ত সন্ত্রাসী ভারতের, তাদের সঙ্গে পাকিস্তানের যোগাযোগ আছে বলে এখন পর্যন্ত প্রতিদিন পাকিস্তানকে অভিযোগ করে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তারা নানা কথা বলে। আজকে যদি তাই হয়, তাহলে কেন শেখ হাসিনা উসকানি দিচ্ছেন। এই ধরনের একজন অপরাধী, যে শিশুর রক্ত খেয়েছে। গরিবের রক্ত খেয়েছে। নারীর রক্ত খেয়েছে। যে এই দেশের জনগণের রক্ত কুড়ে কুড়ে খেয়েছে। আপনি তাদেরকে আশ্রয় দিলেন। সেই ভারত যদি অত্যন্ত প্রিয় হয়ে যায়। তাহলে আমার এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্য। এটা অত্যন্ত দুঃজনক।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আমরা একসঙ্গে আন্দোলন করলাম এরশাদের বিরুদ্ধে। হাসিনাও প্রথম দিকে ছিলেন। তারপরও কাউকে কিছু না বলে হাসিনাও এরশাদের অধীনে নির্বাচনে চলে গেলেন। বেগম জিয়া বলেছিলেন- এরশাদের অধীনে যাব না আমরা নির্বাচনে। আর হাসিনা এক লাফ দিয়ে বলেছিলেন যারা যাবে তারা ডাক পাবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গিয়েছিলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই যে ছাত্র-জনতার রক্ত ঝরা আন্দোলন। ওই দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আবু সাঈদ, সে বুক চিতিয়ে বুলেট বরণ করে নিয়ে আমাদের আন্দোলনের ইতিহাসের যে জয় ঘোষণা করেছে, তারই অনুপ্রেরণায় ঢাকায় আমরা দেখেছি মুগ্ধকে, আমরা দেখেছি আহারাফকে, আমরা দেখেছি একের পর এক শিশু বাচ্চারা নিজের আত্মদানের মধ্য দিয়ে শেখ হসিনার মতো এক ভয়ংকর দানবকে বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করল। তার কয়েকদিন পর জামায়াত বলে বসলো- আমরা আওয়ামী লীগের সব কিছু মাফ করে দেব। আপনি আবু সাঈদের রক্ত কীভাবে মাফ করবেন? আপনি মুগ্ধের রক্ত কীভাবে মাফ করবেন? আপনি আহারাফের রক্ত কীভাবে মাফ করবেন?
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আরও বলেন, অনেক দুঃখ, কষ্ট, বেদনা নিয়ে এদেশে জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রতিনিধি হচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায় এমন কেউ নেই যার বিরুদ্ধে সর্বনিম্ন ২০টি মামলা, ঊর্ধ্বে ৩০০-৪০০ মামলা। আমার নামেই ৩০০ মামলা। আমাদের আরও অনেক সহকর্মীর নামে ৪০০, সাড়ে ৪০০ মামলা শেখ হাসিনার আমলে দিয়েছে। সুতারাং এই ধরনের একটা জগদ্দল পাথর আজকে সড়েছে। আমরা গণতন্ত্রের দিকে হাঁটছি। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন ১৭ বছর ধরে এই দেশের মানুষ পাইনি। আজকে যাদের বয়স ২২, ২৩, ২৪, ২৫ এরা একটা ভোট দিতে পারেনি। একটা নিরপেক্ষ ভোট দিতে পারেনি শেখ হাসিনার এই আমলে।
তাহেরপুর পৌরসভা বিএনপির সভাপতি সামসুর রহমান মিন্টুর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সহ-সংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ প্রমুখ।