সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : ফিলিপাইনের ভাইস প্রেসিডেন্ট সারা দুতার্তেকে অভিশংসিত করা হয়েছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে’র কন্যা, সারা দুতার্তে প্রেসিডেন্টকে হত্যার ষড়যন্ত্র, ব্যাপক দুর্নীতি এবং দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আগ্রাসন নিয়ে শক্ত অবস্থান গ্রহণে ব্যর্থতার অভিযোগে এই অভিশংসন করা হয়েছে।
গার্ডিয়ান সূত্রে জানা যায়, ৫ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) ফিলিপাইনের প্রতিনিধি পরিষদের আইনপ্রণেতারা এই অভিশংসন সিদ্ধান্ত নেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ পদক্ষেপটি ফিলিপাইনের দুই শীর্ষ নেতা, মার্কোস ও সারার মধ্যে তীব্র রাজনৈতিক দ্বন্দ্বকে আরও গভীর করতে পারে।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট মার্কোস ক্ষমতা গ্রহণের পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ফিলিপাইনের প্রতিরক্ষা সম্পর্ক শক্তিশালী করেছেন। তবে রদ্রিগো দুতার্তে, যিনি ২০১৬ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন, চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়েছিলেন।
নিজের অভিশংসন নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি সারা দুতার্তে, তবে তার ভাই কংগ্রেস সদস্য পাওলো দুতার্তে এটিকে রাজনৈতিক হয়রানির স্পষ্ট উদাহরণ বলে উল্লেখ করেছেন এবং দাবি করেছেন, এটি মিথ্যা অভিশংসন মামলা। তিনি দাবি করেছেন, এটি দ্রুত সিনেটে পাঠানোর জন্য প্রতিপক্ষরা চক্রান্ত করছে।
২১৫ জন আইনপ্রণেতা স্বাক্ষর করেছেন সারার বিরুদ্ধে আনা অভিশংসন অভিযোগে, যা প্রয়োজনীয় সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি। এর ফলে এটি দ্রুত সিনেটে পাঠানো সম্ভব হয়েছে এবং সেখানে সারা দুতার্তে’র বিচার অনুষ্ঠিত হবে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, সারার কর্মকাণ্ড জনগণের বিশ্বাসের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করার পাশাপাশি সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
২০২২ সালের নির্বাচনে, সারা দুতার্তে এবং মার্কোস একসঙ্গে জোট বেঁধে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন, তবে ঐক্যের বার্তা দিয়ে ক্ষমতায় আসার পর তাঁদের রাজনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে।
অভিশংসনের অভিযোগের মধ্যে তিনটি মূল বিষয় রয়েছে। প্রথমত, তিনি প্রেসিডেন্ট মার্কোস, তাঁর স্ত্রী ও প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মার্টিন রোমুয়ালদেজকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। দ্বিতীয়ত, তিনি ১ কোটি ৫ লাখ ডলারের গোপন তহবিলের অপব্যবহার করেছেন। তৃতীয়ত, দক্ষিণ চীন সাগরে চীনা আগ্রাসনের বিষয়ে নীরব থেকেছেন।
সারা দুতার্তে গত বছর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, যদি তাঁকে হত্যা করা হয়, তবে তিনি গুপ্তঘাতক নিয়োগ করেছেন যারা প্রেসিডেন্ট, তাঁর স্ত্রী ও স্পিকারকে হত্যা করবে। তবে পরবর্তীতে তিনি দাবি করেন, এটি কেবল তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের প্রকাশ ছিল, হুমকি নয়। তবে এই বক্তব্য তদন্তের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
এছাড়া, সারা দুতার্তে’র বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি ঘোষণা না করা সম্পদের বাইরে বিশাল বিত্তবৈভবের মালিক।
অভিশংসন অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে সরকারের নীতির সমালোচনা করে সারা দুতার্তে মার্কোস প্রশাসনকে দুর্বল করার চেষ্টা করেছেন।
এই অভিশংসন প্রক্রিয়া ফিলিপাইনের রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সূত্র: গার্ডিয়ান