অ আ আবীর আকাশ, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : বছরের প্রায় দুই মাস হতে থাকলেও এখনো শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছেনি। বই না পেয়ে স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ক্রমান্বয়ে কমতে শুরু করেছে। কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে, অনেক শিক্ষার্থী স্কুল বিমুখ হয়ে খেলাধুলায় মেতে রয়েছে। আবার অনেকে গ্যারেজ, হোটেলসহ নানা কাজে জড়িয়ে গেছে। অন্যদিকে স্মার্টফোনে গেম খেলা আসক্ত হয়ে থাকতেও দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।
ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে সব বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানো কথা থাকলেও এখনো বেশিরভাগ স্কুলে পর্যাপ্ত পরিমাণ বই পৌঁছেনি। এতে ডিমে তালে চলছে ক্লাস। মুখস্ত বিদ্যায় কতক্ষণ শিক্ষার্থীদের ধরে রাখা যায়! বইবিহীন কতক্ষণ মনোযোগ ধরে রাখা যায়! দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আক্ষেপ করে বললেন নাম প্রকাশ্য অনিচ্ছুক প্রাথমিকের এক শিক্ষক।
তিনি সাংবাদিক অ আ আবীর আকাশ এর কাছে আরও বলেন- অভিভাবকের কাছে ফোন করে যাদের স্কুলে আনা হচ্ছে, তারাও বই না থাকায় অমনোযোগী হয়ে পড়ছে। ফলে স্কুলে তাদের নিয়মিত উপস্থিতি ধরে রাখা যাচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলেও বড় ধরনের শিখন ঘাটতি নিয়ে পরবর্তী ক্লাসে উঠবে শিক্ষার্থীরা। তাদের বাড়িতেও পড়ার কোন ব্যবস্থা নেই।
প্রাথমিকে এখনো কোনো বই না আসলেও মাধ্যমিকে মাত্র চারটি বই দেয়া হয়েছে। এতে কোনরকম চার বিষয় ক্লাস করেই ছুটি দিতে হয়। বই না থাকায় ক্লাসে শিক্ষার্থীদের ধরে রাখা যায় না। এতে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। সবচেয়ে মারাত্মক ক্ষতির মুখে রয়েছে ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীরা। বছরের দুই মাস হতে থাকলেও এখনো সব বই হাতে আসেনি।
এনসিটিভির বই বিতরণ নিয়ন্ত্রক মোঃ হাফিজুর রহমান সাংবাদিক অ আ আবীর আকাশকে বলেন আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দশম শ্রেণীর বই ছাপাচ্ছি। যদিও বইয়ের ঘাটতি রয়েছে বলে স্বীকার করেন। তিনি আরো বলেন- সক্ষমতা অনুযায়ী দিনে ৩৫ লাখ বই ছাপা হচ্ছে। ছাপা বাকি সোয়া ১৮ কোটি বই। এ জন্য সময় লাগবে আরো দুই মাস। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
তথ্য অনুযায়ী বই হাতে আসতে আরো দুই মাস সময় লাগলে মার্চের শেষ বা এপ্রিলের শুরুতে বই হাতে আসবে। শিক্ষার্থীরা প্রথম সাময়িক পরীক্ষা দেবে কখন? এ ঘাটতি শিক্ষার্থীরা পূরণ করবে কিভাবে? এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কি হবে? এমন প্রশ্নের উত্তর হাফিজুর রহমানের কাছে নেই।
এই নিয়ে চরম উদ্বিগ্নতা ও হতাশা দেখা দিয়েছে অভিভাবকদের মাঝে।
Facebook Comments Box