জ্বিনের সঙ্গে কথা বলে নিঃস্ব মজিবর, হয়েছেন আসামিও

ঠাকুরগাঁও পৌর-শহরের মন্দির পাড়া এলাকার মজিবর নামে এক দিনমুজুর জ্বিনের বাদশার খপ্পরে পড়ে পরিবারসহ এখন রাস্তায়। স্বর্ণ মূর্তির লোভে হারিয়েছেন সারা বছরের উপার্জিত টাকা, হয়েছেন আবার আসামিও। হাজিরা দিতে যেতে হয় ঢাকার সিআইডি কার্যালয়ে। সবশেষে গত সোমবার সিআইডি ইউনিট থেকে জিঙ্গাসাবাদের উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে তলব করা হয় মজিবরসহ বাকি ৩জনকে।

জানা যায়, গত বছরের প্রথম দিকে আসমান থেকে অদৃশ্য এক জ্বিন ফোন করে কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখান দরিদ্র মজিবর ও তার পরিবারকে। এ খবর শুনে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যায় তারা। জ্বিন বাদশার কথা অনুযায়ী লাল কাপড়ে মোড়ানো সোনালী রঙের একটি দেবী মূর্তি পায় মজিবরের পরিবার। তবে লাল কাপড়ে মোড়ানো মূর্তিটা খোলার আগে ৩টি দুম্বা কুরবানি দিতে হবে তাদের। কুরবানি না দিলে ও এব্যাপারে কাউকে বললে বড় ধরণের ক্ষতি হবে বলে জানান প্রতারক জ্বিন। তাই মজিবর সারা বছরের উপার্জিত ২ লাখ ও ঋণ করা ৮৫ হাজার টাকা দিয়ে ভন্ড জ্বিনের শর্ত পূরণ করেন পরিবারটি।

 

এ শর্ত পূরণ হতে না হতেই ফোন করে জ্বিন আরো বলেন, পরিবারের চার সদস্যের নামে ৪টি সিম ক্রয় করে রংপুরের এক নিদিষ্ট স্থানে রেখে আসতে হবে। অদৃশ্য জ্বিনের আদেশ শুনা মাত্রই সিম নিয়ে রংপুরে হাজির মজিবর। এরপর থেকে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় আসমানে থাকা জ্বিনের বাদশা। অন্যদিকে, মজিবরের কিনে দেওয়া সিম ব্যবহার করে অন্যত্র প্রতারণার কাজ চালিয়ে যায় সেই জ্বিন। পরে সেই সিমের নামে মামলা হলে মজিবর ও তার সন্তানদের হাজিরা দিতে যেতে হয় ঢাকা সিআইডির কার্যালয়ে।

 

ভুক্তভোগী মজিবর রহমান জানান, প্রথমে আমার বড় ছেলের স্ত্রীকে ফোন দেয় এক বৃদ্ধ। নিজেকে আসমানি জ্বিন হিসেবে দাবি করেন তিনি। পরে আমরা পরিবারের বাকি চার জন জড়িয়ে পড়ি। আমাদের সবাইকে শপথ পড়ানো হয় বিষয়টি যেন আমরা কাউকে না বলি।

তিনি আরো বলেন, পরিবার নিয়ে আমি একটি ভাড়া বাসায় থাকি। বাড়ি করার জন্য যে টাকা সঞ্চয় করেছিলাম সে টাকা আবার ৮৫ হাজার টাকা ঋণ করে সব টাকা আমরা প্রতারকের হাতে তুলে দেয়। কিন্তু পরে জানতে পারি আমাকে দেয়া দেবী মূর্তিটি সোনার নয়, পিতলের ছিলো। আমি এখন নিঃস্ব। টাকাও গেলো আবার মামলাও খেলাম। সেই মামলার হাজিরা দিতে হয় ঢাকায়।

 

এ বিষয়ে সিআইডি কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক সিরাজ উদ্দিন মুঠোফোনে জানান, এই ঘটনার সঙ্গে পরিবারটি জড়িত। মামলার তদন্ত স্বার্থে তাদের থেকে পাওয়া তথ্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে মজিবরের পরিবারকে ঢাকায় ডাকা হয়েছে।

সূএ: আমাদের সময় ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» যৌথসভা ডেকেছে আওয়ামী লীগ

» ভোট পড়ার হার সন্তোষজনক: কাদের

» ‘গ্রামে নিজেরা উৎপাদন করছেন যারা, তাদের খুব একটা কষ্ট নেই’

» ভোট গণনা চলছে

» উপজেলা নির্বাচনে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে: সিইসি

» ইসলামপুরে পার্থশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্দ্যোগে বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত

» নতুন হ্যান্ডসেট এ৬০ নিয়ে এসেছে অপো

» স্মার্টফোনের বাজারে এলো রিয়েলমি সি৬৫

» নগদ মেগা ক্যাম্পেইনের উপহার বুঝে পেলেন ২১ বিজয়ী

» অবৈধ স্টিকার লাগানো যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

জ্বিনের সঙ্গে কথা বলে নিঃস্ব মজিবর, হয়েছেন আসামিও

ঠাকুরগাঁও পৌর-শহরের মন্দির পাড়া এলাকার মজিবর নামে এক দিনমুজুর জ্বিনের বাদশার খপ্পরে পড়ে পরিবারসহ এখন রাস্তায়। স্বর্ণ মূর্তির লোভে হারিয়েছেন সারা বছরের উপার্জিত টাকা, হয়েছেন আবার আসামিও। হাজিরা দিতে যেতে হয় ঢাকার সিআইডি কার্যালয়ে। সবশেষে গত সোমবার সিআইডি ইউনিট থেকে জিঙ্গাসাবাদের উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে তলব করা হয় মজিবরসহ বাকি ৩জনকে।

জানা যায়, গত বছরের প্রথম দিকে আসমান থেকে অদৃশ্য এক জ্বিন ফোন করে কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখান দরিদ্র মজিবর ও তার পরিবারকে। এ খবর শুনে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যায় তারা। জ্বিন বাদশার কথা অনুযায়ী লাল কাপড়ে মোড়ানো সোনালী রঙের একটি দেবী মূর্তি পায় মজিবরের পরিবার। তবে লাল কাপড়ে মোড়ানো মূর্তিটা খোলার আগে ৩টি দুম্বা কুরবানি দিতে হবে তাদের। কুরবানি না দিলে ও এব্যাপারে কাউকে বললে বড় ধরণের ক্ষতি হবে বলে জানান প্রতারক জ্বিন। তাই মজিবর সারা বছরের উপার্জিত ২ লাখ ও ঋণ করা ৮৫ হাজার টাকা দিয়ে ভন্ড জ্বিনের শর্ত পূরণ করেন পরিবারটি।

 

এ শর্ত পূরণ হতে না হতেই ফোন করে জ্বিন আরো বলেন, পরিবারের চার সদস্যের নামে ৪টি সিম ক্রয় করে রংপুরের এক নিদিষ্ট স্থানে রেখে আসতে হবে। অদৃশ্য জ্বিনের আদেশ শুনা মাত্রই সিম নিয়ে রংপুরে হাজির মজিবর। এরপর থেকে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় আসমানে থাকা জ্বিনের বাদশা। অন্যদিকে, মজিবরের কিনে দেওয়া সিম ব্যবহার করে অন্যত্র প্রতারণার কাজ চালিয়ে যায় সেই জ্বিন। পরে সেই সিমের নামে মামলা হলে মজিবর ও তার সন্তানদের হাজিরা দিতে যেতে হয় ঢাকা সিআইডির কার্যালয়ে।

 

ভুক্তভোগী মজিবর রহমান জানান, প্রথমে আমার বড় ছেলের স্ত্রীকে ফোন দেয় এক বৃদ্ধ। নিজেকে আসমানি জ্বিন হিসেবে দাবি করেন তিনি। পরে আমরা পরিবারের বাকি চার জন জড়িয়ে পড়ি। আমাদের সবাইকে শপথ পড়ানো হয় বিষয়টি যেন আমরা কাউকে না বলি।

তিনি আরো বলেন, পরিবার নিয়ে আমি একটি ভাড়া বাসায় থাকি। বাড়ি করার জন্য যে টাকা সঞ্চয় করেছিলাম সে টাকা আবার ৮৫ হাজার টাকা ঋণ করে সব টাকা আমরা প্রতারকের হাতে তুলে দেয়। কিন্তু পরে জানতে পারি আমাকে দেয়া দেবী মূর্তিটি সোনার নয়, পিতলের ছিলো। আমি এখন নিঃস্ব। টাকাও গেলো আবার মামলাও খেলাম। সেই মামলার হাজিরা দিতে হয় ঢাকায়।

 

এ বিষয়ে সিআইডি কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক সিরাজ উদ্দিন মুঠোফোনে জানান, এই ঘটনার সঙ্গে পরিবারটি জড়িত। মামলার তদন্ত স্বার্থে তাদের থেকে পাওয়া তথ্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে মজিবরের পরিবারকে ঢাকায় ডাকা হয়েছে।

সূএ: আমাদের সময় ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com