হাড় ক্ষয় রোগ প্রতিরোধ জরুরি

সংগৃহীত ছবি
অধ্যাপক প্রফেসর ডা. এ কে এম মূসা: অস্টিও অর্থ হাড় এবং পরোসিস অর্থ পোরস বা ছিদ্র। অস্টিওপরোসিস বলতে বোঝায় যখন হাড়ে বেশি পরিমাণে ছিদ্র তৈরি হয়। হাড়ের দুটি অংশ থাকে। ওপরের শক্ত আবরণটিকে বলা হয় কমপ্যাক্ট বোন। ভেতরে স্পঞ্জের মতো ছিদ্র ছিদ্র করা স্তরটিকে বলা হয় স্পঞ্জি বোন বা ট্রেবিকুলার বোন। অস্টিওপরোসিস হলে হাড়ের ওপরের আবরণ বা কম্প্যাক্ট বোন অনেক পাতলা হয়ে যায় এবং স্পঞ্জি অংশটির ছিদ্র বেড়ে যায় বা ঘনত্ব কমে যায়, যা হাড়কে দুর্বল করে ফেলে। হাড় সাধারণত একদিকে ক্ষয় হতে থাকে আরেকদিকে গঠন হতে থাকে। যদি ক্ষয় হওয়ার গতি, নতুন হাড় গঠন হওয়ার গতির চাইতে কমে যায়, তখনই অস্টিওপরোসিস হয়। পঞ্চাশোর্ধ্ব এক-তৃতীয়াংশ নারী ও একপঞ্চমাংশ পুরুষ অস্টিওপোরোসিসে ভোগেন।হাড় ক্ষয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

সুষম খাদ্য : ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার (দুধ, দই, পনির), সবুজ শাকসবজি এবং ভিটামিন ডি-এর জন্য মাছ, ডিম খাওয়া।

 

ভিটামিন ডি গ্রহণ : নিয়মিত সূর্যালোক গ্রহণ করুন। প্রতিদিন অন্তত ১০-১৫ মিনিট গায়ে রোদ লাগাতে হবে। এছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শে প্রয়োজনে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট নিন। নিয়মিত পরিমাণমতো ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে।

 

নিয়মিত ব্যয়াম : ওজন বহনকারী ব্যায়াম যেমন হাঁটা, দৌড়ানো বা সাইক্লিং করুন।

 

ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন : এগুলো হাড়ের ক্ষতি করে। কফি কম পান করা উচিত।

 

পিরিয়ডিক বোন ডেনসিটি টেস্ট : ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য হাড়ের ঘনত্ব পরীক্ষা করে ঝুঁকি নির্ধারণ করা প্রয়োজন।

 

চিকিৎসা পদ্ধতি – ওষুধ: ১) ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম-ভিটামিন ডি প্রতিদিন ৮০০ থেকে এক হাজার ইউনিট, ক্যালসিয়াম প্রতিদিন ১০০০ থেকে ১২০০ মিলিগ্রাম খেতে হবে।

 

২) ডাক্তারের পরামর্শে আরো কিছু ওষুধ খেতে হবে এবং ফলোআপ করতে হবে।

পরামর্শ : ১) স্বাভাবিক চলাফেরায় শক্ত জুতা বা কেডস ব্যবহার করতে হবে। ২) পড়ে যাওয়া থেকে নিরাপদ থাকতে বাথরুম পরিষ্কার রাখতে হবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাথরুমে পড়ে যেয়ে হাড় ভেঙে যায় তাই বাথরুমে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কমোড পায়খানার পাশে হাতল লাগাতে হবে। ৩) বাসায় চলাচলের জায়গা পরিষ্কার ও পিচ্ছিলমুক্ত রাখতে হবে। ৪) উঁচু-নিচু জায়গায় চলাচল থেকে বিরত থাকতে হবে। ৫) সিঁড়িতে রেইল লাগাতে হবে। ৬) অস্বাভাবিকভাবে ঝুঁকে কাজ করা বা শরীরকে বাঁকিয়ে কোনো কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ৭) এ রোগে আক্রান্ত হলে অতিরিক্ত ওজন বহন করা যাবে না।

লেখক : মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, আলোক হেলথকেয়ার মিরপুর-১০, ঢাকা।  সূএ:বাংলাদেশ প্র্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» মব করে মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিযুদ্ধকে ছোট করার সুযোগ নেই: সেনাসদর

» আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে, আলেমদের সতর্ক থাকতে হবে: মাহমুদুর রহমান

» এবার দুদকের মামলায় গ্রেপ্তার বেঙ্গল গ্রুপের চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম

» দেশের লাভ হলে বিদেশিদের টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব দিতে সমস্যা নেই: সাখাওয়াত হোসেন

» সকল সাংবাদিকদের আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়: তথ্য উপদেষ্টা

» ডাকসু নির্বাচনে ২ হাজারের বেশি পুলিশ, সোয়াট টিম, ডগ স্কোয়াড প্রস্তুত : ডিএমপি কমিশনার

» বর্ষপূর্তি উপলক্ষে রিভোর ‘মেগা ক্যাশব্যাক’ অফার

» পাওনা টাকা পরিশোধের কথা বলে, যুবককে ডেকে নিয়ে গলাকেটে  হত্যা চেষ্টা, গ্রেফতার ২ 

» বনপাড়া শহর তৃনমুল নেতা-কর্মীদের সাথে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের মতবিনিময় 

» সেরা নারী চিফ টেকনোলজি অফিসার অ্যাওয়ার্ড জিতলেন ব্র্যাক ব্যাংকের নুরুন নাহার বেগম

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

হাড় ক্ষয় রোগ প্রতিরোধ জরুরি

সংগৃহীত ছবি
অধ্যাপক প্রফেসর ডা. এ কে এম মূসা: অস্টিও অর্থ হাড় এবং পরোসিস অর্থ পোরস বা ছিদ্র। অস্টিওপরোসিস বলতে বোঝায় যখন হাড়ে বেশি পরিমাণে ছিদ্র তৈরি হয়। হাড়ের দুটি অংশ থাকে। ওপরের শক্ত আবরণটিকে বলা হয় কমপ্যাক্ট বোন। ভেতরে স্পঞ্জের মতো ছিদ্র ছিদ্র করা স্তরটিকে বলা হয় স্পঞ্জি বোন বা ট্রেবিকুলার বোন। অস্টিওপরোসিস হলে হাড়ের ওপরের আবরণ বা কম্প্যাক্ট বোন অনেক পাতলা হয়ে যায় এবং স্পঞ্জি অংশটির ছিদ্র বেড়ে যায় বা ঘনত্ব কমে যায়, যা হাড়কে দুর্বল করে ফেলে। হাড় সাধারণত একদিকে ক্ষয় হতে থাকে আরেকদিকে গঠন হতে থাকে। যদি ক্ষয় হওয়ার গতি, নতুন হাড় গঠন হওয়ার গতির চাইতে কমে যায়, তখনই অস্টিওপরোসিস হয়। পঞ্চাশোর্ধ্ব এক-তৃতীয়াংশ নারী ও একপঞ্চমাংশ পুরুষ অস্টিওপোরোসিসে ভোগেন।হাড় ক্ষয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

সুষম খাদ্য : ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার (দুধ, দই, পনির), সবুজ শাকসবজি এবং ভিটামিন ডি-এর জন্য মাছ, ডিম খাওয়া।

 

ভিটামিন ডি গ্রহণ : নিয়মিত সূর্যালোক গ্রহণ করুন। প্রতিদিন অন্তত ১০-১৫ মিনিট গায়ে রোদ লাগাতে হবে। এছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শে প্রয়োজনে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট নিন। নিয়মিত পরিমাণমতো ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে।

 

নিয়মিত ব্যয়াম : ওজন বহনকারী ব্যায়াম যেমন হাঁটা, দৌড়ানো বা সাইক্লিং করুন।

 

ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন : এগুলো হাড়ের ক্ষতি করে। কফি কম পান করা উচিত।

 

পিরিয়ডিক বোন ডেনসিটি টেস্ট : ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য হাড়ের ঘনত্ব পরীক্ষা করে ঝুঁকি নির্ধারণ করা প্রয়োজন।

 

চিকিৎসা পদ্ধতি – ওষুধ: ১) ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম-ভিটামিন ডি প্রতিদিন ৮০০ থেকে এক হাজার ইউনিট, ক্যালসিয়াম প্রতিদিন ১০০০ থেকে ১২০০ মিলিগ্রাম খেতে হবে।

 

২) ডাক্তারের পরামর্শে আরো কিছু ওষুধ খেতে হবে এবং ফলোআপ করতে হবে।

পরামর্শ : ১) স্বাভাবিক চলাফেরায় শক্ত জুতা বা কেডস ব্যবহার করতে হবে। ২) পড়ে যাওয়া থেকে নিরাপদ থাকতে বাথরুম পরিষ্কার রাখতে হবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাথরুমে পড়ে যেয়ে হাড় ভেঙে যায় তাই বাথরুমে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কমোড পায়খানার পাশে হাতল লাগাতে হবে। ৩) বাসায় চলাচলের জায়গা পরিষ্কার ও পিচ্ছিলমুক্ত রাখতে হবে। ৪) উঁচু-নিচু জায়গায় চলাচল থেকে বিরত থাকতে হবে। ৫) সিঁড়িতে রেইল লাগাতে হবে। ৬) অস্বাভাবিকভাবে ঝুঁকে কাজ করা বা শরীরকে বাঁকিয়ে কোনো কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ৭) এ রোগে আক্রান্ত হলে অতিরিক্ত ওজন বহন করা যাবে না।

লেখক : মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, আলোক হেলথকেয়ার মিরপুর-১০, ঢাকা।  সূএ:বাংলাদেশ প্র্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com