সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, ভারতের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগ পাখির মতো মানুষ হত্যা করে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল। এ দেশের আলেমদের নানাভাবে নিপীড়িত করেছে, নির্যাতন করেছে। তাদের হাত থেকে, রাজনীতিবিদ, শিক্ষক, আলেম, সাংবাদিক, কেউ রেহাই পায়নি।
রোববার (১২ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদের জাতীয় প্রতিনিধি সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামি লীগ আবার যদি ফিরে তাহলে ভয়ংকর রূপে ফিরবে। গণঅভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর উচিত ছিল গণহত্যায় জড়িতদের শহীদ মিনারে ব্রাশ ফায়ার করে মেরে ফেলা। কারণ, তারা ভয়ংকর রূপে ফেরার পাঁয়তারা করছে। ছাত্রদের উচিত ছিল আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা, কিন্তু সবাই ভাগবাটোয়ারা, ক্ষমতায় যাওয়া নিয়ে ব্যস্ত।
নুর বলেন,আমরা সবাই শ্রমিক, সেটা প্রধান উপদেষ্টা হোক কিংবা প্রধানমন্ত্রী হোক। এমপি, মন্ত্রীরাও শ্রমিক, তারাও বেতন নেন, হয়ত কাজের ধরন ভিন্ন। বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার গণঅভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। গত কয়েক বছর তরুণ ছাত্র যুব শ্রমিকরা যে ঐক্য গড়ে তুলেছিল তার ফলেই কিন্তু ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান। জুলাই ঘোষণা পত্রে গত ১৫ বছরে বিরোধী মতের সবার ত্যাগকে লিপিবদ্ধ করতে হবে। শুধু জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত কিংবা নিহতদের পরিবারকে নয়। গত ১৫ বছরে লড়াই করতে গিয়ে যারা আহত হয়েছে তাদেরকেও সহযোগিতা করতে হবে, যারা জীবন দিয়েছিলো তাদের পরিবারকেও সহযোগিতা করতে হবে। গত তিনটি জাতীয় নির্বাচন ছিল জালিয়াতির নির্বাচন, ভোট ডাকাতির নির্বাচন। ২০০৮ সালেও ভারতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পাতানো নির্বাচন করে আওয়ামি লীগ ক্ষমতায় এসেছিল।
বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান বলেন, শ্রমিক অধিকার পরিষদের লড়াই একটি শ্রমিকবান্ধব কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লড়াই, যেই রাষ্ট্র হবে একটি আদর্শ পরিবারের মতো। যেখানে সব মানুষের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিতকরণের অঙ্গীকার থাকবে।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেন, শতাধিক পণ্যের ভ্যাট ট্যাক্স বাড়িতে সরকার জুলুম শুরু করেছে। অনতিবিলম্বে এই ভ্যাট ট্যাক্স প্রত্যাহার করতে হবে। সরকারকে বলবো, হাসিনার স্টাইল ফলো করিয়েননা, তাহলে পরিণতিও হাসিনার মত হবে। আপনারা রাষ্ট্র সংস্কারের আগে আওয়ামী হাইকমান্ড ও শেখ পরিবারের গুন্ডাদের গ্রেপ্তার করে দেখান, আ.লীগ সাংগঠনিক কার্যক্রম ও নিবন্ধন স্থগিত করে নিজেদের সাহসিকতার পরিচয় দেন। এখনো কেন জনগণের বুকে গুলি চালিয়ে হত্যাকারী পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা হলো না? সরকার ও প্রশাসন থেকে কেন আওয়ামী সুবিধাভোগী কর্মকর্তাদের সরানো হচ্ছে না? এগুলো না করে রাষ্ট্র সংস্কারের গল্প বন্ধ করুন। রাষ্ট্র সংস্কারে প্রথম শর্ত গণহত্যার বিচার। আর এই বিচার করতে হলে হাসিনা ও কাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনতেই হবে। সে বিষয়ে আপনাদের উদ্যোগ নাই কেন?
সভায় বক্তব্য রাখেন,গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান, উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, মাহফুজুর রহমান,শ্রমিক অধিকার পরিষদের সহ সভাপতি আরিফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমরান হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুক, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান প্রমুখ।
প্রতিনিধি সভায় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুলহক নুর আগামী ৭ই ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদের কাউন্সিলের ঘোষণা দেন। কাউন্সিল উপলক্ষ্যে চার সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়, এতে গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ কে প্রধান নির্বাচন কমিশনার,ওমর ফারুক ম্যান্ডেট, মাহবুবুর রহমান ও রোকেয়া জাবেদ মায়াকে নির্বাচন কমিশনার করা হয়।