পত্রিকার ভুয়া প্রচার সংখ্যা জড়িত ডিএফপি কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় আনতে চায় সংস্কার কমিশন

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক::পত্রিকার ভুয়া প্রচার সংখ্যা বাড়ানোর সঙ্গে জড়িত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের (ডিএফপি) কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় আনার পক্ষে মত দিয়েছেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল আহমেদ।

 

রোববার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রাম বিভাগের সাংবাদিকদের সঙ্গে আয়োজিত গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

সভায় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক গীতিআরা নাসরীন, শামসুল হক জাহিদ, আখতার হোসেন খান, মোস্তফা সবুজ এবং বিভিন্ন দৈনিক ও অনলাইন সংবাদপত্রের সম্পাদক, প্রকাশক এবং চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন সংবাদকর্মী।

 

মতবিনিময় সভায় রাজধানীর দুটি সংবাদপত্র হকার্স সমিতির সংবাদপত্র বিক্রির পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, হকারদের পত্রিকা বিক্রির হিসাবের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। ঢাকা শহর থেকে ৩০২টি পত্রিকা মিডিয়া লিস্টে আছে। সারাদেশে ৫৯২টির মতো পত্রিকা আছে। আমরা দেখেছি হকারদের তালিকায় ৪৬টি কাগজ তারা লেনদেন করে। বাকি কাগজগুলোর কোনো পেপার (নথি) নেই। কেউ নেয় না ওই কাগজ। তাহলে এটা সরকারের মিডিয়া লিস্টিেয়ের মধ্যে ঢুকলো কী করে? এ সমস্যার সমাধান করতে হবে।

তিনি বলেন, একইভাবে পত্রিকার প্রচারসংখ্যার দিকে থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিবের একার নামেই চারটি পত্রিকার ডিক্লারেশন ছিল। একটি পত্রিকার সার্কুলেশন যেটা ৬ হাজারেরও কম, সেটিকে তিনি ২ লাখ ৯৯ হাজার দেখিয়েছেন, দেখাতে বাধ্য করেছেন। এখন তো হিসাবও বেরিয়েছে ২৯৬ কোটি টাকা উনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে লেনদেন করা হয়েছে। সর্বাধিক প্রচারিত যে দাবি করা হয়, হকারের বেচা-বিক্রি হিসাবে সেটা ঠিক না।

 

‘বাংলাদেশে ৪৬টি টেলিভিশন চলার মতো বাজার নেই। কিন্তু ৪৬টি টেলিভিশনকে সরকার অনুমতি দিয়েছে। এটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এই টেলিভিশন কেন্দ্রগুলো যেহেতু বাজার নেই সেহেতু তারা আয়ও করতে পারে না। আবার নিয়োগ দেয় বিনা বেতনে, কার্ডের ব্যবসায় চলে যায়। এগুলো একটা দুষ্ট চক্র তৈরি হয়েছে। এগুলো ভেঙে একটা শৃঙ্খলা আনতে হবে।

 

ওয়েজবোর্ডের বদলে সাংবাদিকদের একটা ন্যূনতম বেতন নির্ধারণ করার প্রস্তাবের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সেটা একটা ভাল সমাধান হতে পারে যে ন্যূনতম বেতন সারাদেশে সাংবাদিকদের জন্য থাকবে। যে শহরে খরচ বেশি, বিশেষ করে ঢাকায়—আলাদা করে একটা ভাতা বা বাড়তি বেতন দিতে হবে। আমরা আশা করছি এই ধরনের সমাধানগুলো আমরা আপনাদের কাছ থেকেই পাবো। সেটার ভিত্তিতেই আমরা সুপারিশমালা তৈরি করবো। বাস্তবায়ন সরকার করবে, সেটি আমাদের হাতে নয়। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকেও তাদের সুপারিশ লিখিতভাবে চেয়েছি।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব প্রসঙ্গে সভায় কমিশন প্রধান বলেন, প্রেস ক্লাবের প্রশ্নটাও কীভাবে সমাধান করা যায় আমাদের ভাবতে হবে। বিশেষ করে এই প্রেস ক্লাব একেবারেই বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এটি সদস্যদের ক্লাব।

তিনি আরো বলেন, এমনও উপজেলা আছে যেখানে চারটা প্রেস ক্লাব। এটি আসলে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব। প্রেস ক্লাব করলে হয়তো কিছু সুবিধা পাওয়া যায়! প্রেস ক্লাবের নেতা হলে মনে হয় একটু আলাদা মর্যাদা, একটু আলাদা কোনো আর্থিক ব্যাপার থাকতে পারে। সে কারণে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা। আমরা বলতে পারি এটা একটা সমস্যা। এটি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা দরকার যে সমাধান কী হতে পারে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» সাগরে জেলের জালে ধরা পড়েছে পাঁচ মণ ওজনের ‘পাখি মাছ

» খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা স্থিতিশীল

» ঢামেকের মর্গে পড়ে আছে গণঅভ্যুত্থানে নিহত ছয়জনের মরদেহ

» সংস্কার না করলে ২০১৪, ২০১৮, ২০২৪ এর মতো নির্বাচন হবে: গোলাম পরওয়ার

» ২৪–এর ঘোষণাপত্রে খুনি হাসিনার বিচার দেখতে চায় জনগণ: সারজিস

» দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে আওয়ামী লীগ : মির্জা ফখরুল

» ক্র্যাবের সভাপতি তমাল, সাধারণ সম্পাদক বাদশা

» গৃহবধূ হত্যা মামলায় আসামি গ্রেফতার

» আমি মানুষ দেবতা নই, আমারও ভুল হয় : মোদি

» দেশে প্রথমবার ৫ জনের শরীরে রিওভাইরাস শনাক্ত

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

পত্রিকার ভুয়া প্রচার সংখ্যা জড়িত ডিএফপি কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় আনতে চায় সংস্কার কমিশন

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক::পত্রিকার ভুয়া প্রচার সংখ্যা বাড়ানোর সঙ্গে জড়িত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের (ডিএফপি) কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় আনার পক্ষে মত দিয়েছেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল আহমেদ।

 

রোববার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রাম বিভাগের সাংবাদিকদের সঙ্গে আয়োজিত গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

সভায় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক গীতিআরা নাসরীন, শামসুল হক জাহিদ, আখতার হোসেন খান, মোস্তফা সবুজ এবং বিভিন্ন দৈনিক ও অনলাইন সংবাদপত্রের সম্পাদক, প্রকাশক এবং চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন সংবাদকর্মী।

 

মতবিনিময় সভায় রাজধানীর দুটি সংবাদপত্র হকার্স সমিতির সংবাদপত্র বিক্রির পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, হকারদের পত্রিকা বিক্রির হিসাবের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। ঢাকা শহর থেকে ৩০২টি পত্রিকা মিডিয়া লিস্টে আছে। সারাদেশে ৫৯২টির মতো পত্রিকা আছে। আমরা দেখেছি হকারদের তালিকায় ৪৬টি কাগজ তারা লেনদেন করে। বাকি কাগজগুলোর কোনো পেপার (নথি) নেই। কেউ নেয় না ওই কাগজ। তাহলে এটা সরকারের মিডিয়া লিস্টিেয়ের মধ্যে ঢুকলো কী করে? এ সমস্যার সমাধান করতে হবে।

তিনি বলেন, একইভাবে পত্রিকার প্রচারসংখ্যার দিকে থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিবের একার নামেই চারটি পত্রিকার ডিক্লারেশন ছিল। একটি পত্রিকার সার্কুলেশন যেটা ৬ হাজারেরও কম, সেটিকে তিনি ২ লাখ ৯৯ হাজার দেখিয়েছেন, দেখাতে বাধ্য করেছেন। এখন তো হিসাবও বেরিয়েছে ২৯৬ কোটি টাকা উনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে লেনদেন করা হয়েছে। সর্বাধিক প্রচারিত যে দাবি করা হয়, হকারের বেচা-বিক্রি হিসাবে সেটা ঠিক না।

 

‘বাংলাদেশে ৪৬টি টেলিভিশন চলার মতো বাজার নেই। কিন্তু ৪৬টি টেলিভিশনকে সরকার অনুমতি দিয়েছে। এটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এই টেলিভিশন কেন্দ্রগুলো যেহেতু বাজার নেই সেহেতু তারা আয়ও করতে পারে না। আবার নিয়োগ দেয় বিনা বেতনে, কার্ডের ব্যবসায় চলে যায়। এগুলো একটা দুষ্ট চক্র তৈরি হয়েছে। এগুলো ভেঙে একটা শৃঙ্খলা আনতে হবে।

 

ওয়েজবোর্ডের বদলে সাংবাদিকদের একটা ন্যূনতম বেতন নির্ধারণ করার প্রস্তাবের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সেটা একটা ভাল সমাধান হতে পারে যে ন্যূনতম বেতন সারাদেশে সাংবাদিকদের জন্য থাকবে। যে শহরে খরচ বেশি, বিশেষ করে ঢাকায়—আলাদা করে একটা ভাতা বা বাড়তি বেতন দিতে হবে। আমরা আশা করছি এই ধরনের সমাধানগুলো আমরা আপনাদের কাছ থেকেই পাবো। সেটার ভিত্তিতেই আমরা সুপারিশমালা তৈরি করবো। বাস্তবায়ন সরকার করবে, সেটি আমাদের হাতে নয়। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকেও তাদের সুপারিশ লিখিতভাবে চেয়েছি।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব প্রসঙ্গে সভায় কমিশন প্রধান বলেন, প্রেস ক্লাবের প্রশ্নটাও কীভাবে সমাধান করা যায় আমাদের ভাবতে হবে। বিশেষ করে এই প্রেস ক্লাব একেবারেই বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এটি সদস্যদের ক্লাব।

তিনি আরো বলেন, এমনও উপজেলা আছে যেখানে চারটা প্রেস ক্লাব। এটি আসলে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব। প্রেস ক্লাব করলে হয়তো কিছু সুবিধা পাওয়া যায়! প্রেস ক্লাবের নেতা হলে মনে হয় একটু আলাদা মর্যাদা, একটু আলাদা কোনো আর্থিক ব্যাপার থাকতে পারে। সে কারণে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা। আমরা বলতে পারি এটা একটা সমস্যা। এটি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা দরকার যে সমাধান কী হতে পারে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com