ফাইল ছবি
অনলাইন ডেস্ক :ছাত্র-গণহত্যা ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সিটি ও পৌর কাউন্সিলরদের জনস্বার্থে পুনর্বহালের দাবিতে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলর সমাবেশে অংশগ্রহণ ও নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। বৃহস্পতিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে একটি বিস্তারিত পোস্ট দিয়ে এই বিষয়টি নিয়ে তার মতামত প্রকাশ করেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী এই সমন্বয়ক জানান, তিনি এমন কোনো চিন্তা বা অবস্থান থেকে সমাবেশে অংশ নেননি, যা অভ্যুত্থানের আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে।
তিনি বলেন, আমাদের মতামত ও কার্যক্রম জনগণের সামনে উন্মুক্ত। সমালোচনার দ্বারও উন্মুক্ত, এবং সেই সমালোচনাটি যদি যৌক্তিক হয়, তাহলে আমরা সেই অনুযায়ী নিজেদের সংশোধন করার মানসিকতা রাখি।
সারজিস আলম জানান, বর্তমানে দেশে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কাউন্সিলর রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় দেড় হাজার কাউন্সিলর সম্প্রতি তাদের সঙ্গে দেখা করে এবং নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। তারা স্পষ্ট ভাষায় জানান, তারা সাড়ে পাঁচ হাজার কাউন্সিলরের প্রতিনিধিত্ব করেন না, বরং শুধুমাত্র দেড় হাজার কাউন্সিলরের প্রতিনিধিত্ব করছেন। তাদের দাবি, আওয়ামী লীগের শাসনামলে যারা অন্য রাজনৈতিক দলের বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন, তারা তাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন।
তাদের মতে, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের শাসনামলে তারা বিভিন্নভাবে অত্যাচার, নির্যাতন, মামলা ও জেলের শিকার হয়েছেন, কিন্তু ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তায় নির্বাচন জিতেছেন। ২৪ জানুয়ারির ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে তারা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন, যা তারা ছবি ও ভিডিওর মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন। তারা আরও উল্লেখ করেন, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অনেক সদস্য এখনও পদে বহাল থাকলেও, নিজেদের যোগ্যতায় নির্বাচিত কাউন্সিলররা পদ ফিরে পাওয়ার দাবি রাখতে পারেন।
কিছু কাউন্সিলরের দাবি, যারা আওয়ামী লীগের সহযোগী ছিল, তারা ইতোমধ্যে পালিয়ে গেছেন। এখন যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসেছে, তখন আওয়ামী লীগের দোসরদের মতো তাদেরকেও বরখাস্ত করা হলে, তা তাদের জন্য অপমানজনক হবে। তারা আরও জানান, যদি তাদের অভ্যুত্থানের বিপক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া না যায়, তবে তাদের কাউন্সিলর পদ পুনর্বহাল করা উচিত।
তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে, সারজিস আলম ও তার সংগঠন তাদের কথা শোনার গুরুত্ব উপলব্ধি করেন এবং মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন। এই সভায় তিনি স্থানীয় সরকার বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে তাদের মতামত তুলে ধরার পরিকল্পনা করেন। তবে, তিনি পরিষ্কারভাবে জানান যে, মন্ত্রণালয়ের কাছে কোনো বিষয় তুলে ধরা মানে তা বাস্তবায়িত হবে এমন নয়।
সারজিস আলম তার পোস্টে আরও বলেন, আমরা জানি, আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে, এবং আমরা কখনও নিজের মতামত বা কার্যক্রমের ক্ষেত্রে সঠিক হতে পারি না। কিন্তু যেকোনো ভালো সমালোচনা আমাদের সংশোধন করতে সাহায্য করতে পারে।
তিনি নিশ্চিত করেন, তিনি অভ্যুত্থানের আদর্শের প্রতি পূর্ণ সম্মান রেখেই সমাবেশে অংশগ্রহণ করেছেন, এবং ভবিষ্যতের বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত জনগণের মতামতের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হবে, এ বিষয়ে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।