চাকরি ও বিয়ের ফাঁদে নারী পাচার, দুই চীনা নাগরিক গ্রেফতার

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক: চাকরি ও বিয়ের ফাঁদে ফেলে এক নারীকে পাচারের সময় দুই চীনা নাগরিককে গ্রেফতার করেছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। তারা হলেন- ফ্যান গোউয়ে (২৭) ও ইয়াং জিকু (২৫)।

 

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে তাদের গ্রেফতার করা হলেও সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে মঙ্গলবার রাতে বিষয়টি জানানো হয়।

এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার রাকিবুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

 

তিনি জানান, চাঁদপুরের ২১ বছর বয়সী এক ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি প্রথমে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের নজরে আসে।

সোমবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাচারকালে তিনি পালিয়ে এয়ারপোর্ট এপিবিএন অফিসে চলে আসেন এবং জানান, ফ্যান গোউয়ে নামে একজন চীনা নাগরিক তাকে চীনে পাচারের চেষ্টা করছেন। বর্তমানে চীন যাওয়ার উদ্দেশ্যে এয়ারপোর্টে অবস্থান করছেন।

 

অভিযোগকারীর তথ্যের ভিত্তিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনিতা রানী সূত্রধর ফোর্স নিয়ে বোর্ডিং লাউঞ্জ-৫-এ অভিযুক্ত চীনা নাগরিককে শনাক্ত এবং আটক করেন। পরে ইমিগ্রেশন থেকে অফলোডের পর অভিযোগকারী এবং অভিযুক্ত দুজনকেই এয়ারপোর্ট এপিবিএন অফিসে নিয়ে আসা হয়।

 

অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ ও ভুক্তভোগীর দেওয়া তথ্য থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়, নিকুঞ্জের একটি তিনতলা বাড়িতে আরও দেশি-বিদেশি পাচারকারী ও নারী ভুক্তভোগী অবস্থান করছেন।

সহকারী পুলিশ সুপার রাকিবুল ইসলাম আরও জানান, সেই তথ্য অনুসারে, সোমবার রাতে সিআইডির টিএইচবি সেল, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা ও এয়ারপোর্ট এপিবিএনের একটি দল নিকুঞ্জের সেই বাড়িতে যৌথ অভিযান চালায়। সেখান থেকে তারা আরেক চীনা নাগরিক ইয়াং জিকুকে গ্রেফতার করে।

 

এপিবিএনের এই কর্মকর্তা বলেন, দুই বছর আগে টিপু ও জিহাদ নামে দুজনের সঙ্গে ভুক্তভোগীর ফেসবুকে বন্ধুত্ব হয়। তাদের মাঝে মধ্যে ফেসবুক মেসেঞ্জারে কথা হতো। কথাবার্তার এক পর্যায়ে জিহাদ তাকে চাইনিজ কোম্পানিতে চাকরির প্রস্তাব দেয়। তার প্রস্তাবে রাজি হলে টিপু ও জিহাদ গত ২৬ অক্টোবর ওই নারীকে ঢাকায় নিয়ে আসে।

 

এরপর চীনা নাগরিক ইয়াং হওয়ের সঙ্গে ভুক্তভোগী নারীর বিয়ের নাটক সাজান নূরু। ২৬ অক্টোবর ইয়াং হওয়ের সঙ্গে ভুয়া বিয়ে সম্পন্ন হয়। তারা নিকুঞ্জের ওই বাড়িতে বসবাস শুরু করে। ওই বাড়িতে আরও ৭-৮ জন চীনা নাগরিক ও নারীকে দেখেছেন বলে ভুক্তভোগী জানান। এরমধ্যে ভুক্তভোগীর পাসপোর্টসহ অন্যান্য কাগজপত্র প্রস্তুত করে এবং তাকে বাসায় আটকে রাখে পাচারকারীরা।

গত সপ্তাহে ভুক্তভোগীর কথিত স্বামী ইয়াং হও চীনে চলে যান। পরে পাচারকারীরা গত সোমবার ভুক্তভোগীকে জোর করে বাসা থেকে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে নিয়ে আসে। বিমানবন্দরে এনে তার মোবাইল ফোনের ভাষা চাইনিজে রূপান্তর করে ফেরত দেয়। তখন সুযোগ পেয়ে পালিয়ে ওই নারী এয়ারপোর্ট এপিবিএন অফিসে গিয়ে সাহায্য চাইলে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা ত্বরিত ব্যবস্থা নেন।

পরবর্তীতে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নিজে বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরি, দুদিনের মধ্যে অভিযান: ডিএমপি কমিশনার

» গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ করে শেষ মুহূর্তে ‘শাটডাউন’ এড়ালো যুক্তরাষ্ট্র

» বাসে তল্লাশি চালিয়ে দেশীয় তৈরি পাইপ গানসহ দুই যাত্রী গ্রেপ্তার

» সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে হাসান আরিফের জানাজা সম্পন্ন

» উত্তর ভারতের প্রেক্ষাগৃহ থেকে নামানো হচ্ছে ‘পুষ্পা-২’

» ‘স্পিরিটস অব জুলাই’ কনসার্ট ঘিরে যান চলাচলে নির্দেশনা

» সাগরে নিম্নচাপ, দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টি শুরু

» বেইলি ব্রিজ ভেঙে তুরাগ ন‌দে ট্রাক, বিকল্প পথে চলার অনুরোধ

» সড়ক ও পরিবহন খাতে দুর্নীতি বন্ধ হয়নি: তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা

» ক‍্যানবেরায় ১২ প্রবাসীকে বাংলাদেশ হাইকমিশনের অ‍্যাওয়ার্ড প্রদান

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

চাকরি ও বিয়ের ফাঁদে নারী পাচার, দুই চীনা নাগরিক গ্রেফতার

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক: চাকরি ও বিয়ের ফাঁদে ফেলে এক নারীকে পাচারের সময় দুই চীনা নাগরিককে গ্রেফতার করেছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। তারা হলেন- ফ্যান গোউয়ে (২৭) ও ইয়াং জিকু (২৫)।

 

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে তাদের গ্রেফতার করা হলেও সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে মঙ্গলবার রাতে বিষয়টি জানানো হয়।

এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার রাকিবুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

 

তিনি জানান, চাঁদপুরের ২১ বছর বয়সী এক ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি প্রথমে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের নজরে আসে।

সোমবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাচারকালে তিনি পালিয়ে এয়ারপোর্ট এপিবিএন অফিসে চলে আসেন এবং জানান, ফ্যান গোউয়ে নামে একজন চীনা নাগরিক তাকে চীনে পাচারের চেষ্টা করছেন। বর্তমানে চীন যাওয়ার উদ্দেশ্যে এয়ারপোর্টে অবস্থান করছেন।

 

অভিযোগকারীর তথ্যের ভিত্তিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনিতা রানী সূত্রধর ফোর্স নিয়ে বোর্ডিং লাউঞ্জ-৫-এ অভিযুক্ত চীনা নাগরিককে শনাক্ত এবং আটক করেন। পরে ইমিগ্রেশন থেকে অফলোডের পর অভিযোগকারী এবং অভিযুক্ত দুজনকেই এয়ারপোর্ট এপিবিএন অফিসে নিয়ে আসা হয়।

 

অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ ও ভুক্তভোগীর দেওয়া তথ্য থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়, নিকুঞ্জের একটি তিনতলা বাড়িতে আরও দেশি-বিদেশি পাচারকারী ও নারী ভুক্তভোগী অবস্থান করছেন।

সহকারী পুলিশ সুপার রাকিবুল ইসলাম আরও জানান, সেই তথ্য অনুসারে, সোমবার রাতে সিআইডির টিএইচবি সেল, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা ও এয়ারপোর্ট এপিবিএনের একটি দল নিকুঞ্জের সেই বাড়িতে যৌথ অভিযান চালায়। সেখান থেকে তারা আরেক চীনা নাগরিক ইয়াং জিকুকে গ্রেফতার করে।

 

এপিবিএনের এই কর্মকর্তা বলেন, দুই বছর আগে টিপু ও জিহাদ নামে দুজনের সঙ্গে ভুক্তভোগীর ফেসবুকে বন্ধুত্ব হয়। তাদের মাঝে মধ্যে ফেসবুক মেসেঞ্জারে কথা হতো। কথাবার্তার এক পর্যায়ে জিহাদ তাকে চাইনিজ কোম্পানিতে চাকরির প্রস্তাব দেয়। তার প্রস্তাবে রাজি হলে টিপু ও জিহাদ গত ২৬ অক্টোবর ওই নারীকে ঢাকায় নিয়ে আসে।

 

এরপর চীনা নাগরিক ইয়াং হওয়ের সঙ্গে ভুক্তভোগী নারীর বিয়ের নাটক সাজান নূরু। ২৬ অক্টোবর ইয়াং হওয়ের সঙ্গে ভুয়া বিয়ে সম্পন্ন হয়। তারা নিকুঞ্জের ওই বাড়িতে বসবাস শুরু করে। ওই বাড়িতে আরও ৭-৮ জন চীনা নাগরিক ও নারীকে দেখেছেন বলে ভুক্তভোগী জানান। এরমধ্যে ভুক্তভোগীর পাসপোর্টসহ অন্যান্য কাগজপত্র প্রস্তুত করে এবং তাকে বাসায় আটকে রাখে পাচারকারীরা।

গত সপ্তাহে ভুক্তভোগীর কথিত স্বামী ইয়াং হও চীনে চলে যান। পরে পাচারকারীরা গত সোমবার ভুক্তভোগীকে জোর করে বাসা থেকে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে নিয়ে আসে। বিমানবন্দরে এনে তার মোবাইল ফোনের ভাষা চাইনিজে রূপান্তর করে ফেরত দেয়। তখন সুযোগ পেয়ে পালিয়ে ওই নারী এয়ারপোর্ট এপিবিএন অফিসে গিয়ে সাহায্য চাইলে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা ত্বরিত ব্যবস্থা নেন।

পরবর্তীতে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নিজে বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com