ছবি সংগৃহীত
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়ক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বলেছেন, দীর্ঘ স্বৈরশাসন, অহংকার ও দম্ভে আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে। তিনি বলেন, পালাবো না বলে ঘোষণা দেওয়া শেখ হাসিনা-ওবায়দুল কাদেরসহ পুরো দল দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে বাংলাদেশ আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী কর্মচারী ফেডারেশনের ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস, আমাদের মুক্তি ও অনুপ্রেরণা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শিমুল বিশ্বাস বলেন, বিএনপিকে পরাজিত করার আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের পাতানো নির্বাচন আয়োজন করা হয়েছিল। বিদেশি শক্তির মদদপুষ্ট আওয়ামী লীগ ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার ঘোষণা দিয়েছিল। একইসঙ্গে আরও ১০০ বছর ক্ষমতায় থাকার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু আল্লাহ তাদের অহংকারের পতন ঘটিয়েছে। না পালানোর ঘোষণা দিয়েও হাসিনা-ওবায়দুল কদেরসহ পুরো দল পালিয়ে গেছে।
শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের বিপ্লব আমাদের নতুন চেতনা ও শিশা দেখিয়েছে। এটাকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা হলেই কেবল একটা দেশ উন্নত হয়। যা আমেরিকা, ইউরোপসহ উন্নত দেশগুলো বারবার করে দেখিয়েছে। শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ হলে বাংলাদেশের স্বপ্নপূরণ হবে।
এ সময় অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে দ্রুত সময়ে নির্বাচনের দাবি জানান তিনি।
তিনি বলেন, এর আগ পর্যন্ত দেশকে স্বাভাবিক রাখার দায়িত্ব বিএনপির। সরকারকে সবদিক থেকে সহযোগিতা করার কথা জানান বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা।
ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বরের পটভূমি তুলে ধরে শিমুল বিশ্বাস আরও বলেন, শেখ মুজিব বাংলাদেশের ওপর নির্মম ফ্যাসিবাদী শাসন চাপিয়ে দিয়েছিল। এর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্খা, গণতন্ত্র, মানবিক অধিকার ভূলুণ্ঠিত হয়েছিল। ৭ নভেম্বরের বিপ্লব ও সংহতির মাধ্যমে দেশের মানুষ তা ফিরে পেয়েছিল।
তিনি বলেন, দেশের প্রতিটা ক্রান্তিলগ্নে জিয়া সামনে এসে দাঁড়িয়েছেন। রাজনীতির মাঠে না থেকেও প্রতিবার দেশের প্রয়োজনে তিনি সামনে এসেছেন। ৭১ সালে রাজনৈতিক নেতারা যখন লিয়াঁজো করে দেশ ছাড়ে, তখন তিনি ‘উই রিভোল্ট’ বলে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ৭৫ এর পটপরিবর্তনে রাষ্ট্র ক্ষমতা গ্রহণ করে মাত্র চার বছরে দেশকে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে যান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক মো. সেলিম ভূইয়া বলেন, শেখ মুজিব দেশকে একটা লুটপাটের রাজ্যে পরিণত করেছিল। যার হাত ধরে ১৯৭৪ সালে দেশ ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মুখে পরে। মানুষ ড্রেন থেকে খাবার তুলে খেত, কুকুর-মানুষ খাবার নিয়ে টানাটানি করতো। আমি নিজে সেই দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেছি। সেই ইতিহাস মুছে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকে তাকে অতিমানব বানানো হয়েছে। অথচ সে দেশের গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নষ্ট করে দিয়েছিল। ৭ নভেম্বর বিপ্লবের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান তা ফিরিয়ে এনেছিল। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেই স্পিরিট আবার ফেরত এসেছে।
আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় শ্রমিক ফেডারেশনের উদ্যোক্তা মো. হাসানুজ্জামান সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, সংগঠনটির আহ্বায়ক এ এস এম শাহীন, সদস্য সচিব আবু সাঈদ, জিয়া পরিষদের মহাসচিব অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন প্রমুখ। সূূএ:ঢাকা মেইল ডটকম