ছবি সংগৃহীত
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করলে মনে হয় যে, তাদের অনেকেই ফ্যাসীবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি দুর্বল। অথচ ওই আওয়ামী স্বৈরাচারী সরকার গণআন্দোলনের সময় ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। বিশেষত গত ১৫ বছরে গণতন্ত্রকে নিশ্চিহ্ন ও ফ্যাসীবাদ প্রতিষ্ঠা করেছে। অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইন, বিচার ব্যবস্থা ও নির্বাচন পদ্ধতি ধ্বংস করেছে। সর্বস্তরে আত্মীকরণ ও দলীয়করণ, মানবাধিকার লঙ্ঘন, গুম-খুন, জনগণের ওপর নির্যাতন-জুলুম, মেগা প্রকল্পের আড়ালে ব্যাপক দুর্নীতি, বিশাল ঋণ নিয়ে লুটপাট, এবং বিদেশে লক্ষ কোটি টাকা পাচার এসব নজিরবিহীন অপরাধ সংঘটিত করেছে। সুতরাং এই দেশে তাদের রাজনীতি করার কোনও অধিকার নাই।
আজ সকালে রাজধানীর মগবাজারের এলডিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
কর্নেল অলি বলেন, স্বৈরাচারী সরকারকে উৎখাত করতে গিয়ে, ছাত্র জনতার যে আন্দোলন হয়, প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী তাতে এ যাবৎ সর্বমোট ১৫৮১ জন শহীদ হয়েছে। সরকারের উচিত, জনসম্মুখে তুলে ধরা- কত জন ছাত্র ছাত্রী, কোন বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হতে শহীদ হয়েছে? কোন রাজনৈতিক দলের কত জন শহীদ হয়েছে এবং সাধারণ মানুষ কত জন শহীদ হয়েছে? এছাড়াও অনুরূপভাবে আহতদের তালিকাও প্রস্তুত করা প্রয়োজন। এতে করে জনগণ একটি সুস্পষ্ট ধারণা পাবে। এলডিপি’র শহীদ হয়েছে ৪ জন, অঙ্গহানি হয়েছে ৪ জন, আহত হয়েছে ১৫ জন।
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট বলেন, বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার প্রায় ২ মাস সময় পূর্ণ করেছে। এই সরকারের কাছে জনগণের আশা আকাঙ্খা অনেক, তবে এখনও মানুষের মধ্যে এক ধরণের উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা কাজ করছে। কারণ সংস্কার কর্মকাণ্ডে অগ্রগতি আশানুরূপ নয়। কোনও অবস্থাতেই দেশের মানুষকে নিরাশ করা যাবে না। আমাদের সকলকে সরকারকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে এবং সংস্কারের কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
কর্নেল অলি বলেন, বর্তমান অন্তবর্তী সরকার অহেতুক সময় ক্ষেপণ করছে। তাদের কর্মকাণ্ড দেখলে মনে হয়, তারা দীর্ঘদিন ক্ষমতা ধরে রাখার পরিকল্পনা করছে। কারণ প্রায় দুই মাস সময় অতিক্রান্ত করার পরও এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ের আদালতগুলিতে স্বৈরাচারী সরকারের নিয়োগ দেওয়া পি.পিরা কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও আওয়ামীপন্থী বিচারকগণ নিজ নিজ অবস্থানে বহাল তবিয়তে আছে। ফলে সাধারণ মানুষ ন্যায় বিচার হতে বঞ্চিত হচ্ছে।
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, পাহাড়ি এলাকার কিছু কিছু সদস্যরা বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর সদস্যদের সম্মুখে প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করতে দেখা যায়। যা কোন অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের অশান্ত পরিবেশের বিষয়টি হালকাভাবে দেখলে সমস্যা বৃদ্ধি পাবে। সমস্যা সৃষ্টিকারীদের কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামকে আমরা কোন গোষ্ঠীর নিকট ইজারা দিই নাই। প্রয়োজনে আর্মির সংখ্যা বৃদ্ধি করা যেতে পারে। সীমান্ত এলাকায় অবৈধ পারাপার বন্ধ করতে হবে।