‘নদী থেকে বালু উত্তোলন জাতীয় দস্যুতায় পরিণত হয়েছে’

ছবি সংগৃহীত

 

পরিবেশ বন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নদী থেকে বালু উত্তোলন জাতীয় দস্যুতায় পরিণত হয়েছে।

 

আজ সকালে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভেঙে যাওয়া মুছাপুর রেগুলেটর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

পরে তিনি জনতা বাজারসহ কয়েকটি ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন।

 

উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘যেখানেই নদীতে বালু আছে সেখানেই জেলা প্রশাসকরা মানুষের শত আপত্তি সত্ত্বেও রাজস্ব আয়ের কথা চিন্তা করে বালু মহাল ঘোষণা করে দেয়। বালু মহাল ঘোষণার যেমন সুযোগ আছে, তেমনি বিলুপ্তিরও সুযোগ আছে। বালু উত্তোলনের মাধ্যমে নদীর ড্রেজিং কি বালু ব্যবসায়ীদের কাছে তুলে দিবো, নাকি সরকারিভাবে ড্রেজিং করা হবে তা আমাদের ভাবার সময় এসেছে।

 

ইলিশ ভারতে উপহার হিসেবে যাচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ইলিশ রফতানি করা হবে। রফতানির টাকা বাংলাদেশ সরকার পাবে। সেটা খুব ছোট করে দেখার মতো টাকা না। বাংলাদেশ থেকে ইলিশ এখনও যায়নি, একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওই পাড় থেকে যারা ইলিশ চাচ্ছে, তারাও কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় অনেক সমর্থন দিয়েছে। সেটা আমরা সবাই দেখেছি।

 

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘মুছাপুর নদীর পাড়ে আসার কারণ হচ্ছে, সমস্যাটা সরকারের চশমা দিয়ে না দেখে মানুষের চোখ দিয়ে দেখার জন্য। মানুষ আর সরকার ভিন্ন সত্ত্বা হলে পরিবর্তন হবে না। মানুষকে আর সরকারকে এক জায়গায় এসে সমস্যার সমাধানে যেতে হবে। আমরা নদী তীরবর্তী এলাকায় এসে স্থানীয় মানুষের কথা শুনলাম। সরকারি হিসেব মতে প্রতি বছর নদী ভাঙনে ৩০ হাজার মানুষ সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়। অপরদিকে বেসরকারি হিসেবে এক লাখের বেশি মানুষ সর্বস্বান্ত হয়ে যায়।’

লোনা পানির আগ্রাসন ঠেকাতে মুছাপুর রেগুলেটর লাগবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রেগুলেটর দিনে দিন তৈরি করা সম্ভব না। এটার একটা প্রক্রিয়া আছে। আমরা যদি দ্রুত গতিতেও রেগুলেটর নির্মাণ করতে চাই, তাও দুই থেকে তিন বছর সময় লাগবে। এখানে যে চর হয়েছে সেখানের বালু সরিয়ে দেয়ার জন্য এলাকাবাসী প্রস্তাবনা দিয়েছে। নদীতে ক্যাপটেল ড্রেজিংয়ের পাশাপাশি মেইনটেন্যান্স ড্রেজিং করতে হবে। সরকারকে রেগুলেটর আর ড্রেজিং দুটোর কথাই ভাবতে হচ্ছে। সবচেয়ে কার্যকর কোনটি হবে, তা আমরা ভেবে দেখবো। যেটি কার্যকর হবে, সেটিই আগে বাস্তবায়ন হবে।

 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন – পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মুহাম্মদ আমিরুল হক ভূঁইয়া, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুন্সি আমীর ফয়সাল, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ প্রমুখ।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগে স্বামী আটক

» অনতিবিলম্বে রোডম্যাপ দিন: জয়নুল আবদিন ফারুক

» সব মেট্রোপলিটন এলাকার বাসে শিক্ষার্থীদের ‘হাফ ভাড়া’ সপ্তাহে ৭ দিন

» রাজমিস্ত্রি নাসির খুনের ঘটনায় একজন গ্রেফতার

» নবজাতককে নিয়ে নতুন বার্তা দিলেন দীপিকা

» ‘নদী থেকে বালু উত্তোলন জাতীয় দস্যুতায় পরিণত হয়েছে’

» রাজনৈতিক দল ‘বাংলাদেশ জনপ্রিয় পার্টি’র আত্মপ্রকাশ

» ইন্টারনেট ব্যবহারে কোনো টাকা লাগে না যে দেশে

» তোফাজ্জল হত্যায় জড়িত অন্যদেরও গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে: ডিএমপি

» হে ঈশ্বর

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

‘নদী থেকে বালু উত্তোলন জাতীয় দস্যুতায় পরিণত হয়েছে’

ছবি সংগৃহীত

 

পরিবেশ বন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নদী থেকে বালু উত্তোলন জাতীয় দস্যুতায় পরিণত হয়েছে।

 

আজ সকালে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভেঙে যাওয়া মুছাপুর রেগুলেটর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

পরে তিনি জনতা বাজারসহ কয়েকটি ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন।

 

উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘যেখানেই নদীতে বালু আছে সেখানেই জেলা প্রশাসকরা মানুষের শত আপত্তি সত্ত্বেও রাজস্ব আয়ের কথা চিন্তা করে বালু মহাল ঘোষণা করে দেয়। বালু মহাল ঘোষণার যেমন সুযোগ আছে, তেমনি বিলুপ্তিরও সুযোগ আছে। বালু উত্তোলনের মাধ্যমে নদীর ড্রেজিং কি বালু ব্যবসায়ীদের কাছে তুলে দিবো, নাকি সরকারিভাবে ড্রেজিং করা হবে তা আমাদের ভাবার সময় এসেছে।

 

ইলিশ ভারতে উপহার হিসেবে যাচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ইলিশ রফতানি করা হবে। রফতানির টাকা বাংলাদেশ সরকার পাবে। সেটা খুব ছোট করে দেখার মতো টাকা না। বাংলাদেশ থেকে ইলিশ এখনও যায়নি, একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওই পাড় থেকে যারা ইলিশ চাচ্ছে, তারাও কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় অনেক সমর্থন দিয়েছে। সেটা আমরা সবাই দেখেছি।

 

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘মুছাপুর নদীর পাড়ে আসার কারণ হচ্ছে, সমস্যাটা সরকারের চশমা দিয়ে না দেখে মানুষের চোখ দিয়ে দেখার জন্য। মানুষ আর সরকার ভিন্ন সত্ত্বা হলে পরিবর্তন হবে না। মানুষকে আর সরকারকে এক জায়গায় এসে সমস্যার সমাধানে যেতে হবে। আমরা নদী তীরবর্তী এলাকায় এসে স্থানীয় মানুষের কথা শুনলাম। সরকারি হিসেব মতে প্রতি বছর নদী ভাঙনে ৩০ হাজার মানুষ সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়। অপরদিকে বেসরকারি হিসেবে এক লাখের বেশি মানুষ সর্বস্বান্ত হয়ে যায়।’

লোনা পানির আগ্রাসন ঠেকাতে মুছাপুর রেগুলেটর লাগবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রেগুলেটর দিনে দিন তৈরি করা সম্ভব না। এটার একটা প্রক্রিয়া আছে। আমরা যদি দ্রুত গতিতেও রেগুলেটর নির্মাণ করতে চাই, তাও দুই থেকে তিন বছর সময় লাগবে। এখানে যে চর হয়েছে সেখানের বালু সরিয়ে দেয়ার জন্য এলাকাবাসী প্রস্তাবনা দিয়েছে। নদীতে ক্যাপটেল ড্রেজিংয়ের পাশাপাশি মেইনটেন্যান্স ড্রেজিং করতে হবে। সরকারকে রেগুলেটর আর ড্রেজিং দুটোর কথাই ভাবতে হচ্ছে। সবচেয়ে কার্যকর কোনটি হবে, তা আমরা ভেবে দেখবো। যেটি কার্যকর হবে, সেটিই আগে বাস্তবায়ন হবে।

 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন – পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মুহাম্মদ আমিরুল হক ভূঁইয়া, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুন্সি আমীর ফয়সাল, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ প্রমুখ।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com