ছবি সংগৃহীত
গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জনসমাবেশে ঘোষণা দিয়েছিলেন, তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাবেন না। প্রয়োজনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ঠাকুরগাঁওয়ের বাসায় উঠবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু কথা রাখলেন না সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে তিনি লাপাত্তা। এবার ওবায়দুল কাদেরকে স্মরণ করলেন বিএনপি মহাসচিব। জানতে চাইলেন, আজ তিনি কোথায়?
আজ বিকেলে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে এক জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে ফখরুল এসব কথা বলেন। উপজেলা বিএনপির আয়োজনে সমিরউদ্দীন স্মৃতি মহাবিদ্যালয় মাঠে ‘সম্প্রীতি ও গণতন্ত্র রক্ষায় ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনা এবং তার দোসরদের বিচারের’ দাবিতে এই জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
ওবায়দুল কাদেরের সেই বক্তব্যের কথা স্মরণ করে ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দেশ থেকে না পালিয়ে আমার বাসায় আসতে চেয়েছিলেন। আজ তিনি কোথায়? তিনি আমার বাসায় না এসে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়েছেন। শেখ হাসিনা বলেছিলেন- আমি বঙ্গবন্ধুর মেয়ে, আমি কোনোদিন দেশ ছেড়ে পালাবো না। অথচ তিনিও দেশ থেকে পালিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘আমি মামলার কারণে ১১ বার জেলে গিয়েছি। তবে জমি দখল ও লুটের মামলায় নয়, রাজনীতির মামলায়। ঠাকুরগাঁওয়ের সাত হাজার বিএনপির নেতাকর্মীর নামে মামলা হয়েছে। এরকম সারাদেশে ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। সারাদেশে প্রায় ৮০০ নেতাকর্মীকে আওয়ামী লীগ গুম করেছে। পুলিশকে দিয়ে থানায় নিয়ে গিয়ে পায়ের মধ্যে গুলি করে পঙ্গু করে দিয়েছে।
ঠাকুরগাঁও-২ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার অনেকের জমি দখল করে চা বাগান বানিয়েছেন। বালিয়াডাঙ্গীতে ১২টি মন্দিরের ১৪টি প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় তারাই জড়িত। অথচ দোষ চাপিয়েছে বিএনপির ওপর।
শেখ হাসিনার সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘শেখ হাসিনা বলেছিলেন আমি বঙ্গবন্ধুর মেয়ে, আমি কোনোদিন দেশ ছেড়ে পালাবো না। অথচ এবার দেশ থেকে পালিয়েছেন। পালাবার পথ খুঁজে পাচ্ছিলেন না। তিনি তাড়াতাড়ি করে একটি হেলিকপ্টার নিয়ে পালিয়েছেন ভারতে। আওয়ামী লীগ এত খারাপ কাজ করেছে, তাদের দেশে থাকার মতো অবস্থা নেই। আমাদের নেত্রী পালিয়ে যাননি, জেল খেটেছেন। তাকে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে, যার কারণে আজও তিনি অসুস্থ।
জনসভায় বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোটেক সৈয়দ আলমের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সাবেক এমপি জেট মর্তুজা তুলা, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিন, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু হায়াত নুরনবী, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ড. টিএম মাহবুবর রহমান, সিনিয়র সহসভাপতি ও ড্যাবের মহাসচিব ডা. আব্দুস সালাম, সহসভাপতি হিরু, সাংগঠনিক সম্পাদক খোরশেদ আলম, দফতর সম্পাদক মকবুল হোসেনসহ জেলা ও উপজেলা বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতারা। জনসভায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েক হাজার মানুষ যোগ দেন।