ছবি সংগৃহীত
গর্ভকাল একজন নারীর জন্য আনন্দের। তেমনি সতর্ক থাকারও সময়। এই সময়ে নারীদের খাওয়া-দাওয়ার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। এই সময় বাইরের খাবার থেকে মুখ ফেরাতে হবে গর্ভবতী নারীদের। তেমনই নিজের ও সন্তানের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে কিছু পানীয় থেকেও দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
গর্ভকালীন সময়ে প্রত্যেক নারীকের একটু সাবধানে থাকতে হয়। এই সময় ছোট ছোট ভুলেই মা ও সন্তানের বড়সড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই নয় মাসের জার্নিতে প্রতিটা পা ফেলতে হয় বুঝেশুনে। এই সময় গর্ভবতী মহিলাদের চলাফেরা যেমন সাবধানে করতে হয়। তেমনই খাওয়া-দাওয়ার দিকেও নজর ফেরাতে হয়। কারণ এই সময় ভাবী মা যা খাবেন, তার প্রভাব পড়বে সন্তানের স্বাস্থ্যের উপরও। সেজন্যই ৯ মাসের গর্ভাবস্থায় মহিলাদের ডায়েটের দিকে নজর দিতে হবে।
এই সময় পাতে পুষ্টিকর খাবারকেই জায়গা করে দিতে হবে। এর গুণেই ভাবী মা ও সন্তানের সুস্বাস্থ্য বজায় থাকবে। পাশাপাশি যথাযথ পুষ্টি পেয়ে ভ্রুণের বিকাশও হবে দ্রুত গতিতে। এদিকে এই সময় হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে যাওয়ার কারণে নারীদের বিভিন্ন খাবারের ক্রেভিংও হয়। কখনও টক-ঝাল আচার খেতে ইচ্ছে করে। তো আবার কখনও মিষ্টি খাওয়ার সাধ হয়।
আবার কখনও কোনও পানীয়তেই ডুব দিতে ইচ্ছে করে। তবে এই সময় কিছু পানীয়ে চুমুক দিলে মা ও সন্তানের স্বাস্থ্যহানি হতে পারে। তাই সেসব পানীয় থেকে দূরত্ব বজায় রাখাই ভালো।
অ্যালকোহল একদমই নিষেধ
প্রেগনেন্সির সময় অ্যালকোহল ছুঁতে মানা করেন চিকিৎসকেরা। কারণ প্লাসেন্টা দিয়ে সহজে প্রবাহিত হয়ে শিশুর শরীরে পৌঁছে অ্যালকোহল। এর থেকে শিশুর শরীরে ফেটাল অ্যালকোহল স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার দেখা দিতে পারে। যে কারণে শিশুর মধ্যে আজীবন শারীরিক, আচরণগত এবং বৌদ্ধিক অক্ষমতা দেখা দিতে পারে। তাই এই সময় ভাবী মায়েরা মদ্যপান থেকে অবশ্যই বিরত থাকুন।
বেশি কফি ভালো নয়
এমনিতে গর্ভাবস্থায় অনেক মহিলারই ঘুমের সমস্যা হয়। রাতে একটানা ঘুমোতে পারেন না তারা। বারবার ঘুম ভাঙে। এর উপর বেশি কফির পেয়ালায় চুমুক দিলে তো আরও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটবে। তাতে মা ও সন্তানের স্বাস্থ্যেও প্রভাব পড়বে। এছাড়াও অতিরিক্ত কফি খেলে ডিহাইড্রেশন, হজমের সমস্যা ও বমি বমি ভাবও দেখা যায়।
এদিকে কফিও প্লাসেন্টা দিয়ে শিশুর শরীরে পৌঁছায়। একাধিকবার দেখা গিয়েছে, অতিরিক্ত ক্যাফেইনের কারণে গর্ভবতী মহিলাদের শরীরে নানা জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। যেমন সময়ের আগেই প্রসব হয়েছে। এমনকি প্রসবের পর সন্তানের ওজনও কম হয়েছে বলে দেখা গিয়েছে।
ফলের রস না খাওয়াই ভালো
গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকেরা বেশি করে তাজা ফল খাওয়ার পরামর্শ দেন। অনেকেই আবার ফল খেতে পছন্দ করেন না বলে রস করেই খান। তাতে ভিটামিন, খনিজ সব পেলেও বাদ যায় ফাইবার। এর কারণে ফলের রস খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। তাই রস খাওয়ার থেকে পুরো ফল খাওয়াই শ্রেয়।
এদিকে ফলের রসের ক্রেভিং হলেও তা বাড়িতে বানিয়েই খান। ভুলেও দোকান থেকে প্যাকেটজাত ফলের রস খাবেন না প্রেগনেন্সিতে। এছাড়া বার, রেস্তোরাঁ বা রাস্তার ধারের দোকান থেকেও ফলের রস না খাওয়াই ভালো।
অপাস্তুরিত দুধ খাবেন না ভুলেও
কাঁচা দুধে থাকা সমস্ত ব্যাকটেরিয়া পাস্তুরাইজেশনের সময় ধ্বংস হয়ে যায়। তাই পাস্তুরাইজড দুধ খেলে মা ও সন্তানের স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা থাকে না। সেজন্য প্রেগনেন্সিতে ভুলেও অপাস্তুরিত দুধ খাবেন না। আর সবসময় দুধ ভালো করে ফুটিয়ে খাওয়াই ভালো। তাতে সমস্ত জীবাণু ধ্বংস হয়ে যায়।